সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণের জন্য বড় সুখবর দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন নম্বর-৩২১৪/২০১৮ এর রায়ের প্রেক্ষিতে ৪৫ জন রিটকারী প্রধান শিক্ষককে ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এই রায় বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে অর্থ বিভাগ সম্মতি দিয়েছে।
বাকি প্রধান শিক্ষকদের জন্য সিদ্ধান্ত সক্রিয় বিবেচনাধীন
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, অবশিষ্ট প্রায় ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষককে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
প্রধান শিক্ষক সমিতির প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাশেম বলেন, “১০ গ্রেড বাস্তবায়নে সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্তের জন্য ধন্যবাদ। এতে ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষকের দশম গ্রেডে উন্নীত হওয়ার পথ সুগম হবে।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের দাবি ছিল দেশের সব প্রধান শিক্ষকের জন্য ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন এবং সহকারী শিক্ষকদের জন্য ১১তম গ্রেড কার্যকর করা।”
অতীত রায় ও আপিল প্রক্রিয়া
২০১৪ সালে প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার ঘোষণা দেওয়া হলেও পরে তাদের জন্য আলাদা বেতনস্কেল নির্ধারণ করা হয়, যা বৈষম্যমূলক বলে মনে করেন শিক্ষক নেতারা। ৪৫ জন প্রধান শিক্ষক এই বিষয়ে রিট করেন। হাইকোর্ট ২০১৯ সালে তাদের ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার নির্দেশ দেয়, যা পরবর্তীতে আপিল ও রিভিউ পর্যায়ে বহাল থাকে।
চাঁদাবাজি ও প্রতারণার বিষয়ে সতর্কবার্তা
অধিদপ্তরের অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল প্রধান শিক্ষক পদোন্নতির সুযোগে চাঁদাবাজিতে জড়িত। এই ধরনের আর্থিক লেনদেন ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। প্রধান শিক্ষকগণকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে এবং অপরাধীদের থানায় সোপর্দ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সরকারের পরিকল্পনা ও পরবর্তী পদক্ষেপ
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রস্তাব পাঠিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে, যা অর্থ মন্ত্রণালয় পর্যন্ত গিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন মিললে দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিচালক মোহাম্মদ কামরুল হাসান।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষক ১০ম গ্রেডে উন্নীত হওয়ার পথে রয়েছেন। রিটকারী ৪৫ জন প্রধান শিক্ষক এরইমধ্যে এই সুবিধা পেয়েছেন। বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন থাকায় শিক্ষক সমাজে আশার সঞ্চার হয়েছে। সরকারের পজিটিভ অবস্থান ও সতর্কতামূলক নির্দেশনার ফলে প্রধান শিক্ষকগণ উপকৃত হবেন বলেই প্রত্যাশা।
জেনে রাখুন
প্রশ্ন ১: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা কোন গ্রেডে রয়েছেন?
বর্তমানে অধিকাংশ প্রধান শিক্ষক ১১তম গ্রেডে রয়েছেন। তবে হাইকোর্টের রায়ের ভিত্তিতে রিটকারী ৪৫ জন প্রধান শিক্ষককে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে।
প্রশ্ন ২: ১০ম গ্রেডের সুবিধা কবে থেকে কার্যকর হবে?
রিটকারীদের জন্য ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। বাকি প্রধান শিক্ষকদের জন্য প্রস্তাবনা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, অনুমোদনের পর প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
প্রশ্ন ৩: প্রধান শিক্ষক পদোন্নতির ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেন কি বৈধ?
না, কোনো ধরনের চাঁদা বা অর্থ লেনদেন সম্পূর্ণভাবে বেআইনি এবং ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
প্রশ্ন ৪: রিট না করা প্রধান শিক্ষকরা কি ১০ম গ্রেড পাবেন?
হ্যাঁ, সরকার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। সকল প্রধান শিক্ষককে এই সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
প্রশ্ন ৫: ১০ম গ্রেড কার্যকরে প্রধান শিক্ষকদের ভূমিকা কী হওয়া উচিত?
প্রধান শিক্ষকরা যেন কোনো প্রতারকের খপ্পরে না পড়েন, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে এবং সরকারি প্রক্রিয়ায় আস্থা রাখতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।