দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিনিধি: প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিজ দেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু ও বিনিয়োগ ধারণা প্রদানের লক্ষ্যে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) ও দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস যৌথভাবে দুই দিনব্যাপী উদ্যোক্তা সংক্রান্ত অনলাইন প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করেছে।
এ উপলক্ষে গতকাল (১০ জানুয়ারি) আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল হাসান বাদল প্রধান অতিথি ছিলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (কনস্যুলার এবং ওয়েলফেয়ার উইং) এফ এম বোরহান উদ্দিন বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বাংলাদেশের অব্যাহত প্রবৃদ্ধির অন্যতম নিয়ামক হলো প্রবাসী আয় ও প্রবাসীরা কোভিড মহামারির সময় রেমিট্যান্স প্রবাহ অব্যাহত রেখেছে, যা আমাদের অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়াতে কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে।
তিনি জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ দশমিক ৩ কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি রেকর্ড পরিমাণ প্রায় ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছে।
তিনি বলেন, প্রশিক্ষণ কোর্সের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশি, যারা দেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম ও বিনিয়োগে আগ্রহী তাদের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য যেমন, লাইসেন্স সংগ্রহ, কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন,ব্যবসার কৌশলগত পরিকল্পনা, কারখানার স্থান নির্বাচন,সাপ্লাইচেইন ব্যবস্থাপনা, হিসাবরক্ষণ এবং ব্যবসা সম্প্রসারণ ও ব্যবসা বন্ধকরণ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা প্রদান করেন।
বোয়েসেল ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল হাসান বাদল বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা ইতোমধ্যে নিজেদের দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন, যা বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূতি উজ্জ্বল হয়েছে। দক্ষতা অর্জন না করে,বাংলাদেশিদের প্রবাসে না যাওয়ার আহ্বান জানান ও প্রবাসীদের দক্ষতা উন্নয়নে নিজেদের আন্ত:ব্যক্তিক যোগাযোগ আরো বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
সাইফুল হাসান বাদল জানান, দক্ষতা অর্জন পূর্বক প্রবাস গমন নিশ্চিতকল্পে বোয়েসেল ইতোমধ্যে নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সরকারের অন্যান্য সংস্থাসমূহও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (কনস্যুলার এবং ওয়েলফেয়ার উইং) এফ এম বোরহান উদ্দিন বলেন, রেমিট্যান্স আহরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সারা পৃথিবীতে ৮ম স্থানে রয়েছে, তবে আরো দক্ষ মানব সম্পদ বিদেশে পাঠানো সম্ভব হলে,আমরা বেশি হারে রেমিট্যান্স আহরণে সক্ষম হবো। তিনি প্রবাসীদের প্রবাস জীবনের দক্ষতা কাজে লাগানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সমাপনী বক্তব্যে দক্ষিণ কোরিয়া নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া প্রায় ১০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশী রয়েছেন, যারা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। তিনি জানান, দক্ষিণ কোরিয়া পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর মধ্যে একটি, যারা তথ্য-প্রযুক্তি সহ শিল্পের নানাবিধ খাতে উন্নতির শিখরে রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির জন্য প্রবাসাী বাংলাদেশীদের দক্ষতা অর্জনের কোন বিকল্প নেই।’
এমন বাস্তবতায় তিনি বাংলাদেশিদের প্রবাসে কাজ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সুনিদিষ্ট খাতের উপর দক্ষতা অর্জনের উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, একজন দক্ষ প্রবাসীর যেমন বিদেশে কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ থাকে, তেমনই প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফেরত আসলে নিজের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির পাশাপাশি ব্যবসায়িক কর্মকা- চালু করার মাধ্যমে অন্যান্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে সক্ষম হবেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর ড. মো. মিজানুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, যেখানে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশিসহ বেশকিছু শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।