প্রবাসী শ্রমিক নন, ‘এ যুগের দাস’ তিনি !

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদি আরবে অভিবাসী শ্রমিকের হাতে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বিশাল এক হ্যান্ড স্যানিটাইজারের মেশিন। আর সেই মেশিন হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। দেশটির বাসিন্দারা সেই মেশিন থেকে স্যানিটাইজার নিয়ে হাত পরিষ্কার করছেন। এরকম একটি ছবি ভাইরাল হওয়ার পরই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে দেশটির মালিকানাধীন তেল কম্পানি সৌদি আরামকো।

ভাইরাল হওয়া একটি ছবিতে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি মাস্ক পরে বড় বক্স নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। আর সেই বক্সে বড় করে লেখা রয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। মানে ওই বক্স এক ধরনের হ্যান্ড স্যানিটাইজারের মেশিন। এক ব্যক্তিকেও দেখা যায় ওই বক্স থেকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে হাত জীবাণু মুক্ত করছেন।

তাদের এই ধরনের কার্যকলাপ নিয়ে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে তীব্র সমালোচনা করছেন ব্যবহারকারীরা।

আল জাজিরায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অনেকেই সমালোচনা করে এ ঘটনাকে ‘দাসপ্রথার নতুন সংস্করণ’ বলেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, ‘এই ধ্যান-ধারণার পেছনে থাকা ব্যক্তির মস্তিষ্ক আগে স্যানিটাইজ করা প্রয়োজন।’

অভিবাসী শ্রমিকের প্রতি এমন অবমাননাকর আচরণের জন্য নিন্দা ও সমালোচনার পর ক্ষমা চেয়েছেন সৌদি আরামকো। মঙ্গলবার প্রকাশিত এক সংবাদ বিবৃতিতে বলা হয়, কাউকে ছোট করার জন্য না, স্যানিটাইজেশনের গুরুত্বকে জোর দেওয়ার জন্যই এটা করা হয়েছিল। সমালোচনার পর তাৎক্ষণিকভাবে তাদাএর সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে আরামকোর এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় একজন বলেন, ‘জনসাধারণের কাছে নয়, ভুক্তভোগীর প্রবসী শ্রমিকের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।’

গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিল অন্তর্ভুক্ত—সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত, বাহরাইন এবং ওমানে বিশাল সংখ্যক অভিবাসীরা শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন।

বর্তমানে আরামকো বিশ্বের সবচেয়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠান। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আরামকো শেয়ার বিক্রির জন্য তাদের যে প্রাথমিক মূল্যায়ন করেছে, তাতে কোম্পানির মূল্য ছিল ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি ডলার।

কিন্তু নতুন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশে তেল বিক্রি কমে যাওয়ায় এ বছরের শুরুতেই প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর ১১ শতাংশেরও বেশি কমে গেছে।

উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস বিশ্বের ১০০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী ১ লাখ ১৮ হাজার মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন ৪ হাজার ২০০ জন।