জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত এক উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে নিয়ন্ত্রক কাঠামো ও আন্তর্জাতিক সমন্বয়ের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করেছেন—প্রযুক্তি মুক্তি দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটির অপব্যবহার ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে হুমকিও সৃষ্টি হচ্ছে, তাই সিদ্ধান্তমুখী সমাধান জরুরি।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ওএইচসিএইচআর আয়োজিত ‘সবার জন্য মানবাধিকার, সর্বত্র মানবাধিকার–আমাদের অভিন্ন মানবতার মূল বিষয়’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠান থেকে প্রধান উপদেষ্টা এসব মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে তিনি প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতিকে মানবাধিকার ও স্বাধীনতার সঙ্গে সংযুক্ত করে তা নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
ড. ইউনূস বলেন, “প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এসেছে — আপনি এর সঙ্গে কীভাবে লড়বেন, কীভাবে এআই নিয়ন্ত্রণ করবেন বা ভবিষ্যতের প্রযুক্তি যেগুলো আসবে সেগুলো কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন? আমাদের একটি উপায় বের করতে হবে। আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত সমাধান নেই।” তিনি আরও যোগ করেন, প্রযুক্তি সুরক্ষা দেয়ার নামে বহু ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যই সংকুচিত হচ্ছে—এটি যেন দীর্ঘমেয়াদি স্বাধীনতা কেড়ে নিচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা বক্তব্যে স্বাধীনতার ধারণার অপব্যবহারকেও গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “স্বাধীনতার অনেক রকম অপব্যবহার হয়—আপনার কাছে যদি অর্থ, সম্পদ বা রাজনৈতিক ক্ষমতা থাকে, তাহলে আপনি যোগাযোগ মাধ্যম, তথ্যপ্রবাহ ও মত প্রকাশ নিয়ন্ত্রণে নিতে পারবেন। একদিকে আমরা স্বাধীনতার কথা বলি, অন্যদিকে সেই স্বাধীনতাকে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই কেড়ে নেওয়ার পথ তৈরি হচ্ছে। এটা বদলাতে হবে।”
তিনি আরোও সতর্ক করে বলেন, প্রযুক্তি যখন ক্ষমতাসম্পন্নদের হাতে যায়, তখন ভুয়া খবর, মানহানিকর প্রচারণা এবং অর্থ-রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ পূরণে ব্যবহৃত হতে পারে। এজন্য আন্তর্জাতিক মানসম্মত নিয়ন্ত্রণ, স্বচ্ছতা এবং বহুপাক্ষিক সমন্বয় প্রয়োজন বলে তিনি উপস্থাপন করেন।
উল্লেখ্য, বিশ্বের নানা অংশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তি ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের অপব্যবহার—যেমন ব্যক্তিগত তথ্যের অনৈতিক ব্যবহার, স্বয়ংক্রিয় ডাটা–চালিত ভুয়া প্রচারণা, নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক অ্যালগরিদম—সংক্রান্ত উদ্বেগ বাড়ছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ড. ইউনূসের মতো বিশ্লেষকরা আন্তর্জাতিক বিধি, নৈতিক নীতি ও প্রযুক্তিগত নিয়ন্ত্রণ কাঠামো দ্রুত খুঁজে বের করার দাবি তুলছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।