Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home প্রাকৃতিক দুর্যোগের সতর্কতা : পরিবার রক্ষার উপায়
    লাইফস্টাইল ডেস্ক
    লাইফস্টাইল

    প্রাকৃতিক দুর্যোগের সতর্কতা : পরিবার রক্ষার উপায়

    লাইফস্টাইল ডেস্কMd EliasJuly 8, 202511 Mins Read
    Advertisement

    বৃষ্টির শব্দে ঘুম ভাঙলো রুমার। ভোর পাঁচটা, কিন্তু আকাশ ঘন কালো। টিনের চালে মুষলধারে বৃষ্টির শব্দের নিচে শোনা গেল দূর থেকে ভেসে আসা সাইরেনের আওয়াজ। জানালার গ্রিল ধরে তাকাতেই বুকটা ধক করে উঠলো রুমার। নিচের রাস্তা যেন খরস্রোতা নদী। হঠাৎ মনে পড়ে গেল গতকাল রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সেই জরুরি সতর্কবার্তা: “ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস, নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে।” হাতের মুঠোয় চেপে ধরল মোবাইল ফোনটা, যেখানে ছোট ভাই আর বাবা-মায়ের ছবি। সেই মুহূর্তেই অনুভব করল, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সতর্কতা: পরিবার রক্ষার উপায় জানাটা শুধু তথ্য নয়, জীবন-মরণ প্রশ্ন। বাংলাদেশের মতো দুর্যোগপ্রবণ দেশে, যেখানে প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিধস প্রাকৃতিক ছন্দেরই অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেখানে এই জ্ঞানই পারে আপনার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ – আপনার পরিবারকে – ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে।

    প্রাকৃতিক দুর্যোগের সতর্কতা

    • প্রাকৃতিক দুর্যোগের সতর্কতা: পরিবার রক্ষার উপায় – কেন এত জরুরি?
    • পরিবারের জন্য জরুরি প্রস্তুতি: দুর্যোগের আগেই তৈরি করুন আপনার সেফটি নেট
    • ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, ভূমিকম্প – নির্দিষ্ট দুর্যোগে কী করবেন?
    • দুর্যোগ পরবর্তী করণীয়: পুনরুদ্ধার ও মানসিক স্বাস্থ্য
    • জেনে রাখুন

    প্রাকৃতিক দুর্যোগের সতর্কতা: পরিবার রক্ষার উপায় – কেন এত জরুরি?

    বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবেই প্রকৃতির রোষাণলের মুখে। বঙ্গোপসাগরের উত্তাল জলরাশি, হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থান, নদীবিধৌত সমতলভূমি – এই বৈশিষ্ট্যগুলো একদিকে যেমন আমাদের সমৃদ্ধ করেছে, অন্যদিকে বারবার ঠেলে দিয়েছে বিপদের সম্মুখীন। ১৯৭০-এর প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় থেকে শুরু করে ২০২০-এর আম্ফান, সিডর কিংবা ২০২২-এর সিলেট-সুনামগঞ্জের বিধ্বংসী বন্যা – প্রতিটি দুর্যোগ কেড়ে নিয়েছে হাজারো প্রাণ, ভেঙেছে লক্ষ পরিবার। কিন্তু একটি মর্মান্তিক সত্য হলো, দুর্যোগে মৃত্যুর একটি বড় অংশই প্রতিরোধযোগ্য। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ড. মাহবুবা নাসরিনের মতে, “বাংলাদেশে দুর্যোগে মৃত্যুর ৭০% এরও বেশি ঘটে অজ্ঞতা, অসতর্কতা এবং প্রস্তুতির অভাবের কারণে। সামান্য সচেতনতা ও পূর্বপ্রস্তুতিই পারে এই হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনতে।”

    পরিবারকে রক্ষা করার প্রথম ধাপই হলো দুর্যোগের প্রকৃতি ও তার পূর্বাভাস বুঝতে পারা:

    • ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস (এপ্রিল-মে, অক্টোবর-নভেম্বর): আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিন, স্থানীয় প্রশাসনের মাইকিং, টিভি/রেডিওর জরুরি ঘোষণা। লক্ষণ: আকাশের রঙ অস্বাভাবিক পরিবর্তন, বাতাসের গতি হঠাৎ বৃদ্ধি, সমুদ্রের জলরাশির অস্বাভাবিক আচরণ (স্রোতের টান কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া)।
    • বন্যা (জুন-সেপ্টেম্বর): পানি উন্নয়ন বোর্ডের হেড আপ (পূর্বাভাস), স্থানীয় নদ-নদীর পানি স্তর বিপৎসীমা অতিক্রম করা, টানা ভারী বৃষ্টিপাত।
    • ভূমিধস (বর্ষাকাল, বিশেষ করে পাহাড়ি অঞ্চলে): টানা বৃষ্টি, মাটি ফাটল ধরা, পাহাড়ের ঢাল থেকে পানি বা কাদা নেমে আসা।
    • তাপপ্রবাহ (এপ্রিল-জুন): আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ সতর্কতা, তাপমাত্রা অস্বাভাবিক মাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়া।

    দুর্যোগের পূর্বাভাস পেলেই কী করণীয়:

    • স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির (ইউনিয়ন/উপজেলা) সাথে যোগাযোগ করুন: তারা নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রের ঠিকানা ও যাওয়ার রুট জানাবে।
    • বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (http://bmd.gov.bd) ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপ নিয়মিত চেক করুন: এখানে সবচেয়ে আপডেটেড ও নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়।
    • রেডিও, টিভি ও স্থানীয় প্রশাসনের ঘোষণা কান পেতে শুনুন: বিশেষ করে সাইরেন শুনলেই সতর্ক হোন।
    • প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য যে সময় পাওয়া যায়, তার সর্বোচ্চ ব্যবহার করুন: দুর্যোগের চূড়ান্ত মুহূর্তে প্রস্তুতি নেওয়া প্রায় অসম্ভব।

    পরিবারের জন্য জরুরি প্রস্তুতি: দুর্যোগের আগেই তৈরি করুন আপনার সেফটি নেট

    দুর্যোগ কখন আসবে, তা নিখুঁতভাবে বলা সম্ভব নয়। তাই “প্রস্তুতিই সর্বোত্তম প্রতিরোধ” – এই নীতিতে বিশ্বাসী হতে হবে প্রতিটি পরিবারকে। দুর্যোগের মুখোমুখি হওয়ার আগেই গোটা পরিবারকে নিয়ে কিছু মৌলিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ফেলতে হবে:

    ১. পারিবারিক দুর্যোগ পরিকল্পনা (Family Disaster Plan):

    এটি শুধু কাগজে-কলমে লেখা নয়, একটি জীবনরক্ষাকারী চুক্তি। পরিবারের সবাই মিলে আলোচনা করে তৈরি করুন:

    • যোগাযোগ পদ্ধতি: মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। ঠিক করুন দুর্যোগের সময় একে অপরের খোঁজ কীভাবে নেবেন। নির্ধারণ করুন পরিবারের বাইরে এমন একজন আত্মীয় বা বন্ধুর নাম ও নম্বর, যার কাছে সবাই নিজের অবস্থানের খবর দেবে (এই ব্যক্তি থাকতে পারেন দুর্যোগপ্রবণ এলাকার বাইরে)।
    • পুনর্মিলন স্থান নির্ধারণ: দুর্যোগের সময় সবাই একসাথে না থাকতে পারে। আগেই ঠিক করে রাখুন তিনটি স্থান:
      • ঘরের ভিতরে: দ্রুত ঝড় বা ভূমিকম্পের সময় (যেমন: শক্ত টেবিলের নিচে, ভিতরের দিকের কক্ষ)।
      • ঘরের বাইরে, আশেপাশে: অগ্নিকাণ্ড বা দ্রুত বন্যার সময় (যেমন: প্রতিবেশীর নিরাপদ বাড়ি, কাছের উঁচু স্থান, নির্দিষ্ট গাছ)।
      • শহর/গ্রামের বাইরে: বড় দুর্যোগে এলাকা ছাড়তে হলে (যেমন: নির্দিষ্ট আত্মীয়ের বাড়ি, স্কুল বা কমিউনিটি সেন্টার অন্য এলাকায়)।
    • বিশেষ সদস্যদের চাহিদা: পরিবারে যদি শিশু, বৃদ্ধ, গর্ভবতী নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বা দীর্ঘমেয়াদি রোগী (ডায়াবেটিস, হার্ট, অ্যাজমা) থাকে, তাদের বিশেষ ব্যবস্থা পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করুন (ঔষধ, চলাচলের সহায়ক যন্ত্র, বিশেষ খাদ্য)।
    • পোষ্য প্রাণীর ব্যবস্থা: তাদের নিরাপদ স্থানে নেওয়ার পরিকল্পনা করুন (কিছু আশ্রয়কেন্দ্রে পোষ্য নেওয়ার সুযোগ থাকে)।
    • নিয়মিত চর্চা (Drill): বছরে অন্তত দুবার পুরো পরিবার নিয়ে এই পরিকল্পনা অনুযায়ী চর্চা করুন। শিশুরাও যেন জানে কোথায় যেতে হবে, কী করতে হবে।

    ২. জরুরি প্রস্তুতি কিট (Emergency Go-Bag):

    এটি একটি বহনযোগ্য ব্যাগ বা পাত্র, যা দ্রুত হাতে নিয়ে বের হওয়া যায়। প্রতিটি পরিবারের সদস্যের জন্য আলাদা ব্যাগ অথবা একটি বড় পরিবারিক ব্যাগ তৈরি করুন। এটি রাখুন সহজে পৌঁছানো যায় এমন স্থানে (প্রবেশদ্বারের কাছে, শোবার ঘরে)। কিটে যা রাখা আবশ্যক:

    • জল ও খাদ্য:
      • কমপক্ষে ৩ দিনের জন্য প্রতিজনের জন্য প্রতিদিন ৪ লিটার বিশুদ্ধ পানি (পানের পাশাপাশি রান্না/পরিষ্কারের জন্যও)।
      • নন-পেরিশেবল, সহজে খাওয়া যায় এমন খাবার (বিস্কুট, চিড়া, মুড়ি, শুকনো ফল, ক্যানড ফুড, শুকনো দুধ, শক্ত চকলেট)। ক্যান ওপেনার রাখুন।
      • শিশু থাকলে শিশুখাদ্য, ফর্মুলা, বোতল।
    • প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম (First-Aid Kit):
      • প্লাস্টার, ব্যান্ডেজ (বিভিন্ন সাইজ), গজ, অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম/লোশন, ব্যথানাশক বড়ি (প্যারাসিটামল), পেটের অসুখের ওষুধ, অ্যান্টিহিস্টামিন, স্যালাইন, কাঁচি, টুইজার্স, থার্মোমিটার।
      • ব্যক্তিগত ঔষধ: পরিবারের যারা নিয়মিত ঔষধ সেবন করেন (যেমন: ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাঁপানি, থাইরয়েড, জন্মনিরোধক), তাদের অন্তত ৭ দিনের ঔষধ আলাদা পাত্রে চিহ্নিত করে রাখুন। প্রেসক্রিপশনের কপি রাখুন।
    • নথিপত্র ও অর্থ:
      • গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রের ফটোকপি বা স্ক্যান (জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট, জমির দলিল, বীমা পলিসি, স্কুল/কলেজ সার্টিফিকেট) ওয়াটারপ্রুফ ব্যাগে রাখুন।
      • কিছু নগদ টাকা (বড় নোটের পাশাপাশি ছোট নোট) ও কয়েন।
      • ব্যাংক একাউন্ট নম্বর, ক্রেডিট কার্ড নম্বরের লিস্ট (ফিজিক্যাল ও ডিজিটাল ব্যাকআপ)।
    • জরুরি সরঞ্জাম ও সরঞ্জামাদি:
      • ব্যাটারিচালিত টর্চলাইট (অতিরিক্ত ব্যাটারি সহ)।
      • হুইসেল (সাহায্যের জন্য সংকেত দিতে)।
      • মাল্টি-টুল বা সুইস আর্মি ছুরি।
      • স্থানীয় মানচিত্র (হাতে আঁকা বা প্রিন্ট করা)।
      • পানির পিউরিফায়ার ট্যাবলেট বা ফিল্টার স্ট্র।
      • সাবান, স্যানিটাইজার, টয়লেট পেপার, মাস্ক (N95/KN95), হ্যান্ড গ্লাভস (বহু ব্যবহার্য)।
      • কম্বল বা স্লিপিং ব্যাগ (প্রতিজনের জন্য)।
      • স্থানীয় ভাষায় লেখা জরুরি যোগাযোগ নম্বরের লিস্ট (পরিবারের সদস্য, আত্মীয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি, হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ)।
    • ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয় জিনিস:
      • অতিরিক্ত চশমা/কন্টাক্ট লেন্স।
      • ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি সামগ্রী (স্যানিটারি ন্যাপকিন, টুথব্রাশ-পেস্ট, রেজার)।
      • শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য বিশেষ জিনিস (ডায়াপার, খেলনা, বই, কম্বল)।
      • পরিবারের সদস্যদের ছবি (পরিচয় প্রমাণ ও মানসিক শক্তির জন্য)।

    ৩. বাড়ি ও আশেপাশের সুরক্ষা ব্যবস্থা:

    • গাছপালা কাটা: ঘর বা বৈদ্যুতিক তারের ওপরে ঝুঁকে পড়া গাছের ডাল নিয়মিত কেটে রাখুন।
    • ছাদ ও দরজা-জানালা শক্তিশালীকরণ: ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পেলে জানালায় শক্ত কাঠের শাটার বা ক্রসব্রেসিং লাগান। দরজায় অতিরিক্ত বোল্ট দিন।
    • জরুরি সুইচ ও ভাল্ব চেনা: গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির প্রধান সুইচ/ভাল্বের অবস্থান সবাইকে শিখিয়ে রাখুন। দুর্যোগের আগে বা সময়ে এগুলো বন্ধ করতে পারা অগ্নিকাণ্ড বা বিদ্যুৎস্পর্ষ প্রতিরোধ করবে।
    • অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র: বাড়িতে অন্তত একটি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রাখুন এবং ব্যবহার পদ্ধতি শিখুন।
    • বন্যা প্রবণ এলাকায়: মূল্যবান জিনিসপত্র উঁচু তাকে রাখুন। বাড়ির ভিত্তি উঁচু করার ব্যবস্থা করুন (যদি সম্ভব হয়)। বন্যাপ্রবণ এলাকায় বাড়ি নির্মাণের সময়ই এই বিষয়টি মাথায় রাখুন।
    • পাহাড়ি ঢালের কাছে বাড়ি হলে: স্থানীয়ভাবে উৎপন্ন বাঁশ বা বেত দিয়ে ঢালের মাটি ধরে রাখার (টেরেসিং) ব্যবস্থা করুন। ভূমিধসের লক্ষণ দেখলেই দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যান।

    ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, ভূমিকম্প – নির্দিষ্ট দুর্যোগে কী করবেন?

    প্রতিটি দুর্যোগের প্রকৃতি আলাদা, তাই প্রতিক্রিয়াও হবে ভিন্ন। জেনে নিন সুনির্দিষ্ট করণীয়:

    ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের সময়:

    • আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া: স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশ শুনুন এবং নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে যান দ্রুততম সময়ে। বাড়ি শক্ত হলেও জলোচ্ছ্বাস বা গাছ/বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।
    • যাবার সময়: জরুরি প্রস্তুতি কিট সাথে নিন। জুতো পরুন। হালকা রঙের পোশাক পরুন (সাহায্যকারীদের চোখে পড়া সহজ হবে)।
    • আশ্রয়কেন্দ্রে: প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলুন। শৃঙ্খলা বজায় রাখুন। শিশু ও বৃদ্ধদের বিশেষ নজরে রাখুন।
    • বাড়িতে থাকতে বাধ্য হলে: সবচেয়ে শক্তিশালী কক্ষে (যেমন: সিঁড়ির নিচে, অভ্যন্তরীণ বাথরুম) আশ্রয় নিন। জানালা-দরজা থেকে দূরে থাকুন। টেবিল, শক্ত খাটের নিচে বা শক্ত দেয়ালের পাশে বসে মাথা হাত দিয়ে ঢেকে রাখুন। বিদ্যুৎ, গ্যাস লাইন বন্ধ করুন।

    বন্যার সময়:

    • প্রাথমিক সতর্কতায়: মূল্যবান জিনিসপত্র, জরুরি কিট, নথিপত্র উঁচু ও নিরাপদ স্থানে রাখুন। গবাদি পশুকে নিরাপদ উচ্চভূমিতে সরিয়ে দিন।
    • পানি বাড়তে থাকলে: বিদ্যুৎ ও গ্যাসের প্রধান সুইচ বন্ধ করুন। বিষাক্ত সাপ, পোকামাকড় বা ভাসমান বস্তু থেকে সাবধান।
    • বন্যার পানিতে চলাচল: অত্যন্ত সাবধান! দেখে মনে হতেই পারে পানি অগভীর, কিন্তু নিচে খাদ, গর্ত বা স্রোত থাকতে পারে। কখনো একা হাঁটবেন না। লাঠি দিয়ে পথ পরীক্ষা করে এগোন। দড়ি বা বাঁশের সাহায্যে একে অপরকে ধরে রাখুন।
    • নৌকায় থাকলে: লাইফ জ্যাকেট পরা আবশ্যক। ভারসাম্য রক্ষা করুন।
    • বন্যার পর: দূষিত পানি কোনোভাবেই পান করবেন না বা রান্নায় ব্যবহার করবেন না। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িতে প্রবেশের আগে কাঠামোগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। সাপ, বিচ্ছু বা পোকামাকড়ের উপস্থিতি পরীক্ষা করুন। স্যাঁতসেঁতে দেয়ালে বৈদ্যুতিক সংযোগ চালু করতে সতর্ক হোন।

    ভূমিকম্পের সময় (ঝাঁকুনি চলাকালীন):

    • ড্রপ, কভার, হোল্ড অন: ঝাঁকুনি অনুভব করামাত্রই –
      • ড্রপ: মেঝেতে নেমে পড়ুন (ভেঙে পড়া জিনিসের আঘাত এড়াতে)।
      • কভার: শক্ত টেবিল, ডেস্ক বা ফার্নিচারের নিচে আশ্রয় নিন। না পেলে হাত দিয়ে মাথা ও ঘাড় ঢেকে ভিতরের দিকের দেয়ালের পাশে বসুন। জানালা, আলমিরা, টেলিভিশন, ভারী ফার্নিচার থেকে দূরে থাকুন।
      • হোল্ড অন: যে আশ্রয় নিলেন, তা ধরে রাখুন যতক্ষণ না ঝাঁকুনি সম্পূর্ণ থামে।
    • বিছানায় থাকলে: সেখানেই থাকুন, বালিশ দিয়ে মাথা ঢাকুন। বিছানা থেকে লাফ দিবেন না।
    • বাইরে থাকলে: খোলা জায়গায় যান। ভবন, গাছ, বৈদ্যুতিক খুঁটি, ফ্লাইওভার থেকে দূরে থাকুন।
    • গাড়িতে থাকলে: নিরাপদ স্থানে গাড়ি পার্ক করুন (সেতু, ফ্লাইওভার, বিল্ডিং থেকে দূরে)। গাড়ির ভিতরে বসে থাকুন, সিট বেল্ট লাগিয়ে রাখুন। রেডিওতে তথ্য শুনুন।

    তাপপ্রবাহের সময়:

    • সরাসরি সূর্যালোক এড়িয়ে চলুন: বিশেষ করে দুপুর ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
    • হালকা, ঢিলেঢালা সুতির পোশাক পরুন: গাঢ় রঙের পোশাক এড়িয়ে চলুন।
    • অতিরিক্ত পানি ও খাবার স্যালাইন পান করুন: তৃষ্ণা না পেলেও নিয়মিত পানি পান করুন।
    • শরীর ঠান্ডা রাখুন: ঠান্ডা পানিতে গোসল করুন, ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে নিন।
    • বাচ্চা, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের বিশেষ যত্ন নিন: তাদের ঘরের ভিতরের শীতলতম স্থানে রাখুন।

    দুর্যোগ পরবর্তী করণীয়: পুনরুদ্ধার ও মানসিক স্বাস্থ্য

    দুর্যোগ কেটে গেলেই বিপদ শেষ হয় না। ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠা, স্বাভাবিক জীবনে ফেরা এবং মানসিক আঘাত কাটিয়ে ওঠা আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ:

    • নিরাপত্তা নিশ্চিত করা: ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িতে প্রবেশের আগে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিন। কাঠামো নিরাপদ কিনা নির্মাণ বিশেষজ্ঞ দিয়ে পরীক্ষা করান। বৈদ্যুতিক ও গ্যাস লাইনে লিক আছে কিনা সতর্কতা অবলম্বন করুন।
    • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা: ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিষ্কার করুন। ময়লা-আবর্জনা, ভাঙা কাঁচ ইত্যাদি সরানোর সময় মজবুত গ্লাভস ও জুতা পরুন। দূষিত পানি ও খাবার ফেলে দিন।
    • জলবাহিত রোগ প্রতিরোধ: বিশুদ্ধ পানি পান করুন। খাবার ভালো করে সিদ্ধ করুন। হাত ধোয়ার অভ্যাস বজায় রাখুন। মশারি টানান।
    • সরকারি ও এনজিও সহায়তা: স্থানীয় প্রশাসন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর (http://dmb.gov.bd) এবং বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার (রেডক্রিসেন্ট/ক্রিসেন্ট, ব্র্যাক, কারিতাস ইত্যাদি) সহায়তা সম্পর্কে তথ্য নিন। ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসনের জন্য আবেদন করুন।
    • মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন: দুর্যোগ পরবর্তী মানসিক চাপ (PTSD), ভয়, দুঃস্বপ্ন, উদ্বেগ খুবই স্বাভাবিক। পরিবারের সদস্যদের সাথে নিজের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি শেয়ার করুন। শিশুদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন, তাদের ভয়কে অবহেলা করবেন না। প্রয়োজনে প্রশিক্ষিত কাউন্সেলর বা মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন। স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা এনজিওগুলো এ ধরনের সেবা দিয়ে থাকে। মনে রাখবেন, মানসিক ক্ষত শারীরিক ক্ষতের চেয়ে কম গুরুতর নয়।

    প্রাকৃতিক দুর্যোগের সতর্কতা: পরিবার রক্ষার উপায় শুধু কিছু টিপস নয়, এটি একটি জীবনদর্শন। বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের সাথে দুর্যোগের সম্পর্ক চিরন্তন। কিন্তু প্রতিটি দুর্যোগ আমাদের শেখায়, প্রস্তুতি আর সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে প্রকৃতির রোষকে মোকাবিলা করতে। আজই বসুন পরিবারের সবার সাথে। তৈরি করুন সেই পারিবারিক দুর্যোগ পরিকল্পনাটি। গুছিয়ে রাখুন সেই জরুরি প্রস্তুতি কিট। শিখে রাখুন আশ্রয়কেন্দ্রের পথ। কারণ, আগামীকালের কোনো অজানা দুর্যোগে, আজকের এই প্রস্তুতিই হতে পারে আপনার সন্তানের হাসি, আপনার বাবা-মায়ের নিরাপদ আশ্রয়, আপনার সংসারের ভিতকে টিকিয়ে রাখার একমাত্র ভরসা। শুরু করুন আজই – আপনার পরিবারের নিরাপত্তার এই অঙ্গীকারই হতে পারে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।


    জেনে রাখুন

    ১. প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম সতর্কতা আমি কোথায় পেতে পারি?
    বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (BMD) ওয়েবসাইট (http://bmd.gov.bd) এবং তাদের মোবাইল অ্যাপ সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উৎস। এছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর (DMB), স্থানীয় প্রশাসনের মাইকিং, টেলিভিশন ও রেডিওর জরুরি সংবাদ, এবং বাংলাদেশ বেতারের বিশেষ বুলেটিনে নিয়মিত তথ্য প্রচার করা হয়। কিছু এলাকায় কমিউনিটি ভলান্টিয়াররাও সতর্কবার্তা পৌঁছে দেন।

    ২. দুর্যোগের সময় শিশু ও বৃদ্ধদের বিশেষভাবে কীভাবে সুরক্ষা দেব?
    শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য আলাদা প্রস্তুতি প্রয়োজন। তাদের জরুরি কিটে প্রয়োজনীয় ওষুধ, ডায়াপার, শিশুখাদ্য, কম্বল, পরিচিত খেলনা বা বই রাখুন। দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরানোর সময় তাদের সাথে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন। আশ্রয়কেন্দ্রে তাদের জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করুন। তাদের মানসিক ভয় ও উদ্বেগ কাটাতে সময় দিন, কথা শুনুন ও আশ্বস্ত করুন।

    ৩. ঘূর্ণিঝড়ের সময় আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে না পারলে বাড়িতে কোন কক্ষ সবচেয়ে নিরাপদ?
    আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়াই সর্বোত্তম। তবে যদি তা একেবারেই সম্ভব না হয়, বাড়ির সবচেয়ে শক্তিশালী, ভিতরের দিকের কক্ষ (যেমন: সিঁড়ির নিচের জায়গা, অভ্যন্তরীণ বাথরুম, গোডাউন) নির্বাচন করুন। জানালা-দরজা থেকে দূরে থাকুন। শক্ত টেবিল বা খাটের নিচে আশ্রয় নিন। মাথা ও ঘাড় হাত বা বালিশ দিয়ে ঢেকে রাখুন। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মেইন সুইচ বন্ধ করুন।

    ৪. বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর বাড়ি ফিরে কী কী সাবধানতা অবলম্বন করব?
    প্রথমেই স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিন। প্রবেশের আগে বাড়ির কাঠামো নিরাপদ কিনা নির্মাণ বিশেষজ্ঞ দিয়ে পরীক্ষা করান। ভেতরে ঢুকে বৈদ্যুতিক লাইনে লিক আছে কিনা সতর্কভাবে দেখুন (গন্ধ বা শব্দে বোঝা যেতে পারে)। পানি ও খাবার নষ্ট হয়ে গেলে ফেলে দিন। ক্ষতিগ্রস্ত দেয়াল ও মেঝে ভালো করে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করুন। মশা ও অন্যান্য পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে সতর্ক থাকুন।

    ৫. দুর্যোগের পর পরিবারের সদস্যদের মানসিকভাবে কিভাবে সাহায্য করব?
    দুর্যোগ পরবর্তী মানসিক আঘাত (PTSD, ভয়, উদ্বেগ) স্বাভাবিক। প্রথমেই তাদের অনুভূতিকে সত্যি বলে মেনে নিন, অবহেলা করবেন না। তাদের কথা ধৈর্য্য সহকারে শুনুন। দৈনন্দিন রুটিন ধীরে ধীরে ফিরিয়ে আনুন। শিশুদের খেলার সুযোগ দিন, তাদের আঁকা বা গল্পের মাধ্যমে অনুভূতি প্রকাশ করতে উৎসাহিত করুন। পরিবারের সবাই মিলে সময় কাটান। যদি দুঃস্বপ্ন, অতিরিক্ত ভয়, দৈনন্দিন কাজে অনীহা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে প্রশিক্ষিত মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবীর পরামর্শ নিন। স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা এনজিও (যেমন: বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, কেয়ার বাংলাদেশ) এ ধরনের সেবা দেয়।


    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    উপায়, দুর্যোগ দুর্যোগের পরিবার প্রভা প্রস্তুতি প্রাকৃতিক বিপর্যয়, ব্যবস্থাপনা রক্ষা রক্ষার লাইফস্টাইল সতর্কতা স্থান
    Related Posts

    বাবার নামে বৈদ্যুতিক মিটার? ওয়ারিশ সূত্রে নিজেদের নামে করার নিয়ম

    July 30, 2025
    Age

    কোন ভিটামিন খেলে বয়স কমবে হু হু করে, জেনে নিন

    July 30, 2025
    মেয়েরা

    ছেলেদের দিকে তাকিয়ে যে জিনিসটি সবার আগে দেখে মেয়েরা

    July 30, 2025
    সর্বশেষ খবর
    Brazil interest rate decision

    Brazil Markets on Edge: U.S. Tariffs Threaten Exports as Central Bank Meets

    drone thermal imaging

    How Texas Floods Sparked New Thermal Drone Technique (48 characters)

    Grand Sierra Resort shooting

    Grand Sierra Resort Shooting: Suspect Dakota Hawver’s Background, Charges, and Unanswered Questions

    OITNB actor homeless

    Orange is the New Black Actor Reveals Homelessness During Filming: Life Lesson

    Mexican Peso

    Mexican Peso Steadies at 18.75 Amid Dollar Swings: Trade Deal Turbulence Analyzed

    Stewart Friesen Accident

    Stewart Friesen Accident: Wife Jessica Provides Update After Devastating Dirt Track Crash

    I Adopted a Villainous Dad Chapter 86

    I Adopted a Villainous Dad Chapter 86: Release Time, Spoiler Leaks, and Reading Guide

    msft stock

    Microsoft Stock Soars as Azure Revenue Tops $75 Billion in Annual Sales

    meta stock

    Meta Stock Surges 10% After Stellar Earnings and Bold AI Investments

    alexandre de moraes

    U.S. Sanctions Brazilian Judge Alexandre de Moraes Over Bolsonaro Trial, Escalating Diplomatic Tensions

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.