বিশেষজ্ঞরা LiDAR (Light Detection and Ranging) নামে একটি বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে গুয়াতেমালার জঙ্গলের নীচে একটি নতুন মেগালোপলিসের লেজার স্ক্যান প্রকাশ করেছেন, যেখানে এটি প্রাচীন শহরগুলোর একটি বিশাল আন্তঃসংযুক্ত নেটওয়ার্ককে ইঙ্গিত করে।
এল মিরাডোর (El Mirador) একটি বিশাল প্রত্নতাত্ত্বিক অঞ্চল এর কথা বলা হচ্ছে যাকে ‘মায়া সভ্যতার পূর্বসূরি’ বললেও হয়তো ভুল হবে না। এল মিরাডোর-এর অর্থ বা ‘দেখার স্থান’। এরূপ নামকরণের কারণ হয়তো এখানকার বিশাল বিশাল পিরামিড।
সম্ভবত, এগুলোর উপর থেকেই দূরবর্তী জায়গায় নজর রাখা হতো। হারিয়ে যাওয়া শহর এল মিরাডোর বর্তমান মধ্য আমেরিকার গুয়াতেমালার ঘন জঙ্গলে অবস্থিত। এটি খ্রিষ্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতক থেকে ১ম খ্রিষ্টাব্দীর মধ্যে বিকাশ লাভ করেছিল, এবং সেই সাথে এখানে হাজার হাজার মানুষের বসবাস ছিল।
২৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে অবস্থিত এই জায়গা এখনও সবচেয়ে বেশি পরিচিত মায়া সভ্যতার প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। এই অঞ্চলের প্রাচীনতম বসতিটি প্রায় ১০০০-৯০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এবং স্মৃতিসৌধ স্থাপত্যটি প্রায় ৬০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে গড়ে তোলা হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।
এল মিরাডোর ৪০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে ২০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছেছিল। এই সভ্যতা তার বিভিন্ন স্থাপত্য নকশার একটি উন্নত ধারণার বিকাশ লাভ ঘটিয়েছিল এবং সমগ্র মিরাডোর অববাহিকা জুড়ে এর শাসন বিস্তৃত ছিল।
এল মিরাডোর শহরটি আবিষ্কৃত হয় ১৯২৬ সালে। যেহেতু এখানে কোনো রাস্তা নেই, তাই এ জায়গাগুলোতে যাওয়া বেশ কঠিন। এখানে পৌঁছানোর জন্য ঘন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
ইউরোপীয়রা আমেরিকায় আসার হাজার হাজার বছর আগেই মায়া সভ্যতার মানুষরা তাদের নিজস্ব পৌরাণিক কাহিনী তৈরি করে। শহরটি কৃষিকাজের জন্য বেশ উপযুক্ত ছিল।
কাদার প্রাচুর্যের কারণে আশেপাশের চত্বর ঢাকার জন্য এগুলো ব্যবহার করা হয়েছিল। এছাড়া, সেখানে চুন প্রয়োগ করে উর্বর করার মাধ্যমে ভুট্টা, বিন, তুলা, পাম, স্কোয়াশ ইত্যাদি ফসল ফলানো হতো। নির্বিচারে বন উজাড়ের ফলেও এর প্রাচীন স্থাপনা ও নিদর্শনগুলো বর্তমানে হুমকির মুখে রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।