জুমবাংলা ডেস্ক : জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে বিষপানে দুই কিশোর-কিশোরী আত্মহত্যা করেছে। প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে পরিবারের আপত্তি থাকায় তারা এই পথ বেছে নেয়। তাদের মধ্যে প্রেমিকা তাজমিন আক্তার মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।
এর আগে সোমবার রাতে মারা যায় প্রেমিক মুরাদ হোসেন। তাদের বাড়ি উপজেলার খাঁড়িতা গ্রামে। লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, খাঁড়িতার তোজাম হোসেনের মেয়ে তাজমিনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে একই গ্রামের দোলন শেখের ছেলে মুরাদ। ছেলেটি এবার স্থানীয় বড়তারা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। আর মেয়েটি পার্শ্ববর্তী বাকিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ত। তাদের মধ্যেকার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়ে পরিবারও জানত। উভয় পরিবারের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনাও হয়। ছেলেমেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় তাদের বুঝিয়ে দূরে রাখতে চেয়েছিলেন স্বজনরা।
এরই অংশ হিসেবে মুরাদকে তার পরিবার পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। প্রস্তুতি ঘনিয়ে আসায় হতাশায় ডুবে যায় অবুঝ ছেলেমেয়েরা। গত ৪ এপ্রিল রাতে ভিডিও কলে কথা বলতে বলতে নিজ নিজ বাড়িতে বিষপান করে তারা। বিষয়টি টের পেয়ে তাদের হাসপাতালে নেয় পরিবারের সদস্যরা। চিকিৎসা শেষে বাড়িতে নেওয়া হয় মুরাদ ও তাজমিনকে। ৭ এপ্রিল তাদের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলে আবারও হাসপাতালে নেওয়া হয়। জয়পুরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার মারা যায় মুরাদ। ২২ ঘণ্টার ব্যবধানে মৃত্যু হয় তাজমিনের।
প্রতিবেশী আরমান হোসেন বলেন, মুরাদ ও তাজমিন কমলমতি। তাদের সঙ্গে আরও সচেতনতার সঙ্গে আচরণ করা উচিত ছিল। না বুঝিয়েই তাদের দূরে রাখার চেষ্টা করা ঠিক হয়নি।
মুরাদের বাবা দোলন বলেন, মুরাদ ও তাজমিনের বিয়ে দিতে কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু বয়স হয়নি তাদের। আইন ও সমাজের কাছে অপরাধী হতে না চাওয়ায় তাদের আরও অপেক্ষা করতে বলা হয়। এরই অংশ হিসেবে ছেলেকে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। এই মৃত্যুর ঘটনায় কারও প্রতি অভিযোগ নেই। মেয়ের মৃত্যু নিয়ে প্রায় একই ধরনের মন্তব্য করেছেন নিহত তাজমিনের বাবা তোজাম।
ক্ষেতলাল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, মুরাদের মৃত্যুর ২২ ঘণ্টা পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাজমিন মারা গেছে। মুরাদের মরদেহ আগেই উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মুরাদের পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। এ বিষয়ে তাজমিনের পরিবারেরও কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।-সমকাল
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।