আন্তর্জাতিক ডেস্ক: উত্তেজনা, আশঙ্কা আর অনেক নাটকীয়তার শেষে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন। ক্ষমতায় থেকেও ব্যাপক ব্যবধানে হেরে গেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই আড়াই মাসের মধ্যেই হোয়াইট হাউস ছেড়ে চলে যেতে হবে তাকে। তবে প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়লেও ট্রাম্পের জন্য সরকারি খাতে খরচ খুব কম হবে না আমেরিকার।
রিডার্স ডাইজেস্ট ও বিজনেস ইনসাইডারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশ মোটা অঙ্কের পেনশন তো পাবেনই আজীবন। সঙ্গে পাবেন আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অফিস চালানোর বিশাল জায়গা। অফিস পরিচালনার যাবতীয় সব খরচ বহন করবে সরকার। পাবেন অফিসে বহু কর্মী রাখার খরচ। এ ছাড়াও পাবেন বিস্তর ঘোরাঘুরি আর টেলিফোনের খরচ। আর আজীবন পাবেন তার ও পরিবারের জন্য সিক্রেট সার্ভিসের নিরাপত্তা সুবিধা। যার সব খরচই বহন করবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
আমেরিকার সংবিধান মোতাবেক শুধু ট্রাম্প নন, তাকে নিয়ে আমেরিকার যে ৪৫ জন প্রেসিডেন্ট এখন পর্যন্ত অবসরে গিয়েছেন আজীবন তাদের সবার জন্যই সরকারি খাতে পেনশনসহ ওই সব ক্ষেত্রে বিশাল অঙ্কের বরাদ্দ থাকে প্রতি বছরের বাজেটে। যার শুরুটা হয়েছিল ১৭৮৯ সালে আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন ক্ষমতাসীন হওয়ার পরেই।
সব প্রাক্তন প্রেসিডেন্টই আমেরিকার সংবিধান অনুযায়ী বেতন পান। ২০১৭ সালে সেই পরিমাণ ছিল প্রতি বছরে ২ লাখ ৭ হাজার ৮০০ ডলার। এটা শুধুই বেতন, অন্যান্য ভাতা তো রয়েছেই।
ন্যাশনাল ট্যাক্সপেয়ার ইউনিয়ন ফাউন্ডেশন জানায়, ২০১৮ সালে কংগ্রেসে যে বাজেট প্রস্তাব জমা পড়েছিল তাতে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অফিসের জায়গার জন্য খরচ রাখা হয়েছিল ৫ লাখ ৩৬ হাজার ডলার। আর প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের ঘোরাঘুরির জন্য খরচ বরাদ্দ করা হয়েছিল ৬৮ হাজার ডলার।
শুধু তাই নয় সাবেক প্রেসিডেন্টের স্ত্রীদের মোটা অঙ্কের পেনশন পাওয়ারও অধিকার দেয়া হয়েছে আমেরিকার সংবিধানে। সেটাও খুব কম নয়, বছরে ২০ হাজার ডলার। পাবেন আজীবন। সঙ্গে তারাও পান ঘোরাঘুরি, টেলিফোন ও যোগাযোগরক্ষার যাবতীয় খরচ।
১৯১৫ সালে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার ও তার পরিবারের নিরাপত্তারক্ষার জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ২ লাখ ডলারেরও বেশি। আর সেই খরচটা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশের ক্ষেত্রে ছিল ৮ লাখ ডলার।
এই সব ছাড়াও আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টরা আত্মজীবনী লিখে, কোনো নামজাদা করপোরেট সংস্থার পরিচালন বোর্ডের সদস্য হয়ে বা বিশ্বের নানা প্রান্তে আমন্ত্রণী বক্তৃতা দিয়ে প্রচুর ডলার উপার্জন করতে পারেন। আমেরিকার সংবিধানে সেই অধিকার দেয়া হয়েছে।
অবসর নেয়ার পর শুধু বিভিন্ন জায়গায় বক্তৃতা দিয়ে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন উপার্জন করেছিলেন সাড়ে ৬ কোটি ডলার। আর আত্মজীবনী ছাপিয়ে রোজগার করেছিলেন দেড় কোটি ডলার। এই সব সুযোগই থাকবে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পেরও।
অবশ্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার অনেক আগে থেকেই মার্কিন সমাজে ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন ধনকুবের হিসেবে পরিচিত। মার্কিনরা তাকে চেনেন বর্ণাঢ্য ও জাঁকালো জীবনের অধিকারী এক সফল ব্যবসায়ী হিসেবে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি, বিশ্বজুড়ে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মোট মূল্যমান ১ হাজার কোটি ডলার হবে। আর বাৎসরিক আয় প্রায় ৪৫ কোটি ডলার। এই বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক ট্রাম্পের জন্য এই অবসরভাতা হয়তো তেমন কিছু নয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।