বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : পরিবেশ দূষন অস্বাভাবিক মাত্রায় বৃদ্ধির ফলে পৃথিবী ধাবিত হচ্ছে অন্যতর সংকটের দিকে । এ দূষনের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রানিরকূলে বাস্তুসংস্থান যার প্রভাব পড়ছে মানুষের ওপর।দূষিত হচ্ছে পৃথিবীর মাটি, বাতাস ,পানি যা মানুষের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে।
পরিবেশ দূষনের অন্যতম কারণ হচ্ছে প্লাষ্টিক ।দিন দিন এ প্লাষ্টিকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যাবহার বেড়েই চলছে ।ব্যবহৃত এ বিপুল প্লাষ্টিক বর্জ্য গিয়ে মিশছে সমুদ্রে।
সাম্প্রতিক এক গবেষণা থেকে বলা হচ্ছে, এ মাত্রায় প্লাষ্টিক সমুদ্রে মিশতে থাকলে ২০৫০ সালে সমুদ্রে মাছের থেকে প্লাষ্টিকের সংখ্যা হবে বেশি।এ কারনে বেশ কিছু সংস্থা প্লাস্টিক নিরসনে গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি সাফল্য এসেছে এই গবেষণায়, জাপানের একদল বিজ্ঞানী প্লাষ্টিক খাবে এমন ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছে। এরই মধ্যে তারা পেটেন্ট জমা দিয়েছে।
গত মার্চে সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দাবি করা হয় যে, এই পদ্ধতির মাধ্যমে প্রতিবছর পৃথিবীব্যাপী উৎপাদিত প্রায় ৫ কোটি টন প্লাস্টিক বোতল নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
প্লাস্টিক পানির বোতলগুলো পলিথিলিন টেরিফথেলেট বা PET হিসেবে পরিচিত যা সাধারণত পলিয়েস্টার পোশাক, হিমায়িত খাবারের পাত্র এবং গুটী মোড়কে পাওয়া যায়। ম্যাসাচুসেটস এর উডস হোল ওশানোগ্রাফিক ইন্সটিটিউট থেকে ট্রাসি মিনসার বলেন, “আপনি যদি ওয়াল-মার্টের করিডর দিয়ে হাঁটেন তবে সেখানে অসংখ্য PET দেখতে পারবেন।”
পিইটি এর একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এরা রং বিহীন হালকা ওজনের এবং অধিক শক্তিশালী। এছারাও এগুলোকে কোন জীবণু বিভক্ত করতে পারেনা। পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা গিয়েছিলো অল্প কিছু প্রজাতির ছত্রাক পিইটির মধ্যে জন্মায় কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউই এই বস্তুকে খাওয়ার মতো কোন জীবাণু খুঁজে পায়নি। বিশেষজ্ঞরা এই প্রক্রিয়াটিকে “বায়োডিগ্রেডেশন” বলে থাকেন।
প্লাস্টিক খাওয়া জীবাণুদের খুঁজতে জাপানী বিজ্ঞানীদের দল প্লাস্টিক বোতল প্রক্রিয়াকরণ এলাকা থেকে ২৫০ টি পিইটি সম্বলিত নমুণা সংগ্রহ করেন যাতে মাটি, পলল এবং বর্জ্য মিশ্রিত ছিল। এরপর তারা দেখেন নমুণাগুলিতে বসবাসরত জীবাণু পিইটি খায় কিনা এবং তা খেয়ে জীবিত থাকতে পারে কিনা। অবশেষে তারা ব্যাকটেরিয়ার একটি প্রজাতি খুঁজে পান যা পিইটির অবস্থার পতন ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। তারা এর নাম দেন আইডিয়েনেলা সাকেনেসিস।
গবেষণাগারের পরবর্তী পরীক্ষায় প্রকাশ পায় যে এটি পিইটি ভাঙ্গার জন্য দুটি এনজাইম ব্যাবহার করে। পিইটি পৃষ্ঠে অবস্থান করে মাধ্যমিক পর্যায়ের একটি রাসায়নিক উৎপাদন করার জন্য ব্যাকটেরিয়াটি একটি এনজাইম গোপন করে রাখে। পরবর্তীতে কোষের মাধ্যমে ঐ রাসায়নিক সংগ্রহ করে অন্য একটি এনজাইম দিয়ে ভেঙ্গে ফেলে এবং ব্যাকটেরিয়া এর থেকে কার্বন এবং শক্তি উৎপন্ন করে।
গবেষকগণ জানান আইডিয়েনেলা সাকেনেসিসের একটি সম্প্রদায় এই পদ্ধতিতে কাজ করেই ছয় সপ্তাহের মধ্যে ৮৬ ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রায় পিইটির পাতলা স্তর ভেঙ্গে ফেলতে সক্ষম হয়।
Get the latest Zoom Bangla News first — Follow us on Google News, Twitter, Facebook, Telegram and subscribe to our YouTube channel.