জুমবাংলা ডেস্ক : যৌতুক দাবি, নির্যাতন ও ভ্রূণ হত্যার অভিযোগে স্বামী রেজাউল করিম প্লাবনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন সমকালের স্টাফ রিপোর্টার সাজিদা ইসলাম পারুল। বিচার চেয়ে ঘুরেছেন দ্বারে দ্বারে। কিন্তু পুলিশ অদৃশ্য কারণে প্লাবনসসহ মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারই করছে না। অভিযানের নামে যেন ইঁদুর-বিড়াল খেলছে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত এই গণমাধ্যমকর্মী প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চেয়ে একাই দাঁড়ালেন রাস্তায়। প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে কান্নায় বুক ভাসালেন নির্যাতনের শিকার পারুল।
বুধবার পারুল ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্ল্যাকার্ড নিয়ে একাই মানববন্ধন করেন। তার হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি কি বিচার পাবো না?/ যৌতুক দাবি, নির্যাতন ও ভ্রূণ হত্যাকারী প্লাবনের গ্রেপ্তার চাই।’ বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এই মানববন্ধনের সময় পারুলের চোখ গড়িয়ে শুধু পানি পড়ছিল।
সাজিদা ইসলাম পারুল বলেন, এক মাস পনের দিন হয়েছে রেজাউল করিম প্লাবনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আইনে মামলা করেছেন। বিচার চেয়ে কত ধরনা দিচ্ছেন। প্লাবন ঢাকা শহরেই ঘুরে বেড়াচ্ছে, অথচ পুলিশ নাকি তাকে খুঁজে পায় না!
তিনি সাংবাদিক নেতাদের কাছেও বিচার পেতে সহায়তার অনুরোধ করেন। বলেন, ‘আমি আপনাদের ছোটবোনের মতো। আমার জায়গায় নিজের বোনটিকে ভাবুন, কন্যাটিকে ভাবুন। যদি আপনার বোন বা মেয়ে যৌতুকের জন্য নির্যাতিত হতো, তার গর্ভের অনাগত সন্তানটিকে হত্যা করা হতো, কী করতেন আপনি?
পারুল বলেন, ‘কতিপয় সাংবাদিক নেতার প্রশ্রয় এবং পুলিশ প্রশাসনের অবহেলা কাজে লাগাচ্ছে প্লাবন। প্রতিনিয়ত সমঝোতার চাপ, হুমকি, ফেসবুক আইডি হ্যাক করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। একদিন দেখবেন, পুরো আমাকেই গায়েব করে দেবে সে। তাই উপায়ান্তর না দেখে ন্যায়বিচারের দাবিতে আজ একাই জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দাঁড়ালাম। আশা করছি পুলিশের টনক নড়বে।’
তিনি জানান, এরপরও বিচার না পেলে প্লাবনকে গ্রেপ্তারের দাবিতে হাতিরঝিল থানার সামনে দাঁড়াবেন। প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়ির সামনে এবং প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের কাছেও বিচার চাইতে দাঁড়াবেন। তাতেও কাজ না হলে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করবেন তিনি। বিচারহীনতার এই সমাজে বেঁচে থাকার চেয়ে প্রতিবাদ করে মরে যাওয়া ভালো।
যৌতুক দাবি, যৌতুকের জন্য নির্যাতন এবং ভ্রূণ হত্যার অভিযোগে গত ১১ মে হাতিরঝিল থানায় প্লাবনসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন সাজিদা ইসলাম পারুল। মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২ এপ্রিল যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার প্লাবনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তার। বিয়ের পর যৌতুক হিসেবে প্লাবন ঢাকায় একটি ফ্ল্যাট দাবি করেন পারুলের কাছে। একাধিক নারীর সঙ্গে প্লাবনের অনৈতিক সম্পর্ক থাকার কথা জেনে যান পারুল। অনৈতিক সম্পর্কে বাধা ও যৌতুক না দেওয়ায় পারুলকে নির্যাতন করা হয়। মারধরের কারণে পারুলের গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। ৫ মে তিনি প্লাবনের গ্রামে বাড়ি গেলে সেখানেও মারধরের শিকার হন। প্লাবনের বড় ভাই এমএ আজিজ, ছোট ভাই এসএম নিজামউদ্দিন এবং বাবা সামসুল হক ও মা মারধর করেন পারুলকে।
হাতিরঝিল থানার ওসি আবদুর রশিদ বলেন, আসামি ধরার জন্য পুলিশের তিন সদস্যের একটি টিম করা হয়েছে। অভিযান চালানো হয়। কিন্তু তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। আশা করি দ্রুত তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
সূত্র: সমকাল
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।