মাত্র তিন দিন আগে ২৬ বছর বয়সে পা দিয়েছেন আইনস্টাইন। বাবা হয়েছেন ১০ মাস আগে। ক্যামগ্যাছের ওই বাড়িতে দুই কামরার ছোট্ট ফ্ল্যাটে স্ত্রী মেলিভা আর ছেলে হ্যান্স আলবার্টকে নিয়ে আইনস্টাইনের সংসার। টেকনিক্যাল ক্লার্ক হিসেবে কাজ করেন সুইস পেটেন্ট অফিসে। কারিগরি বিশেষজ্ঞ। নামটা গালভারী হলেও পদ হিসেবে তা তৃতীয় শ্রেণির। তাঁর নিজের ভাষায়, ‘পেটেন্ট স্লেভ’। এটি তাঁর স্বপ্নের চাকরি নয়। মাসে যে বেতন পান, তা দিয়ে সংসারও স্বাচ্ছন্দ্যে চলে না।
সে সময় পদার্থবিজ্ঞানের এক অমীমাংসিত সমস্যা ছিল ফটোইলেকট্রিক ইফেক্ট। বাংলায় যাকে বলে আলোকতড়িৎ ক্রিয়া। একদিন সেটা নজরে পড়ল আইনস্টাইনের। সমস্যাটার শুরু ১৮৮৭ সালের দিকে। সে বছর জার্মান বিজ্ঞানী হেনরিক হার্জ আকস্মিকভাবে দেখলেন, আলো স্ফুলিঙ্গ তৈরি করতে পারে।
তিনি খেয়াল করলেন, কোনো ধাতব পৃষ্ঠের ওপর অতিবেগুনি আলো ফেলা হলে সেখান থেকে ইলেকট্রন নিঃসৃত হয়। আরও ভালোভাবে বললে, আলোকরশ্মি কোনো ধাতব বস্তুতে আঘাত হানলে নির্দিষ্ট অবস্থায় অল্প পরিমাণ বৈদ্যুতিক প্রবাহের সৃষ্টি হয়। আলো ও বিদ্যুতের মধ্যে এ সম্পর্ককে বলা হয় ফটোইলেকট্রিক ইফেক্ট।
আধুনিক ইলেকট্রনিকসের পেছনেও রয়েছে এই নীতি। সোলার সেল বা সৌরকোষ সাধারণ সূর্যালোককে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তর করে। এই শক্তি আমাদের ক্যালকুলেটরে শক্তি জোগাতে ব্যবহার করা যায়। টিভি ক্যামেরা বস্তু থেকে আলোকরশ্মি নেয় এবং সেগুলো বৈদ্যুতিক প্রবাহে রূপান্তর করে। সেটাই দেখা যায় টিভি স্ক্রিনে। রিমোট কন্ট্রোলও কাজ করে এ প্রভাবের ওপর ভর করে। তবে এসব জানা গেছে অনেক পরে।
ওই শতাব্দীর ক্রান্তিলগ্নে ব্যাপারটি ছিল পুরো রহস্যে মোড়া। গবেষণার জন্য বিষয়টি খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বিষয়টি নিয়ে একাধারে জার্মান বিজ্ঞানী উইলহেম হলওয়াচস ও ফিলিপ লেনার্ড, ইতালির বিজ্ঞানী অগাস্ট রিঘি, ব্রিটেনের জে জে থমসন, রাশিয়ার আলেকজান্ডার স্টোলেটোভসহ আরও কজন বিজ্ঞানী পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।