জুমবাংলা ডেস্ক : বিভিন্ন লোভনীয় প্রস্তাবে সহস্রাধিক নারীকে সংগঠনের কর্মী বানিয়ে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় নীলফামারীর ডোমার উপজেলা ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি নামে একটি প্রতিষ্ঠান। মাত্র দেড় মাসের মধ্যে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। গত শনিবার সকালে ৩৫ লক্ষ টাকা নিয়ে সংগঠনের ক্যাশিয়ার ও দুইজন ট্রেইনারসহ ৩জন পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে নারী কর্মীরা ডোমার সাহাপাড়া এলাকার সংগঠনের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে কর্তৃপক্ষের কাউকে না পেয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়ে।
প্রতারণার ফাঁদে পড়ে টাকা খোয়ানো এসব নারীরা টাকা ফেরত পেতে সোমবার দুপুরে শহরের রেলঘুন্টির মোড়ে দু’ঘণ্টা ব্যাপী সড়ক অবরোধ করে। এর আগে সকালে এক ঘন্টা উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করার পর উক্ত স্থানে অবরোধে শতাধিক নারী অংশ গ্রহণ করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিনা শবনম, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক সরকার ও ওসি মোস্তাফিজার অবরোধ স্থলে উপস্থিত হয়ে তাদেরকে আইনি সহায়তার আশ্বস্থ্য করলে অবরোধ তুলে নেন তারা।
সহস্রাধিক নারী কর্মীরা থানায় উপস্থিত হয়ে টাকা ফেরত চান। সবার টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক কোটি টাকার চেক ও নগদ ছয় লক্ষ টাকা উপজেলা সমবায় অফিসার নুরুজ্জামান খানের নিকট জমা ও মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান সংগঠনের সভাপতি মানিক হাসান মালিক ও পরিচালক মামুন রহমান। ছাড়া পাওয়ার পরদিন তারা কর্মীদের টাকা ফেরত দেওয়া কার্যক্রম শুরু করলেও সোমবার সকাল থেকে তাদেরও আর কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। ভুক্তভোগী নারীরা তাদেরও পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করছে।
প্রসঙ্গত: ডোমারের স্বল্প ও অশিক্ষিত নারীদের টার্গেট করে প্রায় দেড় মাস আগে গড়ে উঠে বাংলাদেশ অনলাইন শপিং সার্ভিসেস। সেখানে ৮০ হাজার টাকা জমা দিলে সাত দিন পর একটি দেড় লক্ষ টাকার দামের মটরসাইকেল ও ১৫ দিন পর জমাকৃত সেই ৮০ হাজার টাকাও ফেরত দেওয়া হবে। সেখানে এ রকম আরো অনেক লোভনীয় অফার দিয়ে নারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এতে অসচেতন নারীরা হুমড়ি খেয়ে বিভিন্ন অফার গ্রহণ করে।
হঠাৎ করে একসাথে এতো নারীর উপস্থিতিতে এলাকাবাসী, পুলিশ ও সাংবাদকর্মীরা উক্ত সংগঠনের বৈধতার কাগজপত্র দেখতে উদগ্রীব হয়। কর্তৃপক্ষ কৌশলে সময়ক্ষেপণ করে নাম পরিবর্তন করে গত ১ ডিসেম্বর সমবায় কার্যালয় হতে ডোমার বাজার ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি লিঃ নামে একটি রেজিস্ট্রেশন নেয়। যার রেজি: নম্বর-২৪। সংগঠনের প্রতারিত কর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা নুরুজ্জামান কোন তদন্তই করে নাই। ওই রেজিস্ট্রেশন নম্বরই প্রতারকদের বৈধতা দেয় বলে তারা অভিযোগ করে।
ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মোস্তাফিজার রহমান জানান, আমরা পুলিশের পক্ষ হতে ভুক্তভোগীদের বার বার ওই সমবায় প্রতিষ্ঠানে টাকা দিতে নিষেধ করি। তারা আমাদের কথা না শুনে পুলিশের উপর চড়াও হয়। আমি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ জনপ্রতিনিধিরা তাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা শবনম জানান, আমরা ভুক্তভোগী নারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার সকল চেষ্টা করছি। সেই সাথে প্রতারকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।