জুমবাংলা ডেস্ক : ব্যস্ত শহরের অলিগলি পেরিয়ে এখন পতিতাদের আনাগোনা বেড়েছে উপজেলার সদর পর্যায়ে। আর এসব পতিতাদের ব্যবহার করছে পর্দার আড়ালের শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্র। তারা ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী ও বিভিন্ন পর্যায়ের অর্থশালীদের নারী দেহ ভোগের প্রলোভন দেখিয়ে ঐ সব মিনি পতিতালয়ে নিয়ে তাদের উলঙ্গ ভিডিও ধারণ করে ফাঁদে ফেলে আদায় করছে মোটা অংকের টাকা ও দামী দামী মোবাইল ফোন।
সম্প্রতি এই চক্রকে আ’টক করতে অভিযানে নামে বাগমারা থানার পুলিশ। টানা দুই দিন অভিযান চালিয়ে এই চক্রের কোন সদস্যকে আ’টক করতে না পারলেও, চিহ্নিত কয়েকটি পতিতালয় (ভাড়া বাসা) থেকে দুই যৌ’নকর্মীকে আ’টক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হয়।
পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি ভবানীগঞ্জ ও তাহেরপুরসহ উপজেলার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পতিতাদের আনাগোনা বেড়ে যায়। স্থানীয় পতিতা ও দালাল চক্রের মাধ্যমে এসব স্থানে রাজশাহী শহর, এমনকি ঢাকা থেকেও সুন্দর চেহারার পতিতাদের আমদানি শুরু হয়। শুরুতে এসব পতিতাদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিলেও পরে স্থানীয় কয়েকটি সিন্ডিকেট চক্র পতিতা ও তাদের দালালদের হাত করে নিরীহ ব্যক্তিদের হয়রানি শুরু করে। ওই সব পতিতালয়ে অর্থশালী ব্যক্তিদের নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন ভিডিও ধারণ করে তাদেরকে ফাঁদে ফেলা হয়।
এভাবে ঐ সিন্ডিকেট চক্র পতিতাদের ব্যবহার করে মোটা অংকের টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া শুরু করে। গত এক সপ্তাহে অন্তত আটজন ব্যক্তিকে এভাবে ফাঁদে ফেলা হয়েছে। এসব ঘটনায় থানা পর্যায়ে বেশ কিছু অভিযোগ গেলে নড়েচড়ে বসে পুলিশ।
গত শুক্রবার ও শনিবার এমন অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ভবানীগঞ্জ পৌরসভার মাস্টারপাড়া ও চাঁনপাড়া মহল্লায় দুটি বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দালাল ও সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা সটকে পড়লেও পুলিশ ঐ দুটি পতিতালয়ে থেকে দুই যৌ’নকর্মীকে আ’টক করে। পরে আ’টকদের উপজেলার প্রথম শ্রেণির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলামের দপ্তরে হাজির করা হয়।
এ সময় যৌ’নকর্মীরা দোষ স্বীকার করে জানান, তারা পরিস্থিতির শিকার। নিতান্ত পেটের দায়ে তারা এই পেশায় এসেছেন। অসামাজিক এই পেশায় জড়িত হয়ে নামমাত্র কিছু টাকা পেলেও তাদেরকে ব্যবহার করে দালাল ও সিন্ডিকেট চক্র মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে থাকে।
এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের জিজ্ঞাসাবাদে যৌ’নকর্মীরা কিছু দালাল ও সিন্ডিকেট চক্রের নাম প্রকাশ করেন। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাৎক্ষনিক ওই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন। তবে আ’টক যৌ’নকর্মী তাদের দোষ স্বীকার করে ভবিষ্যতে এমন অপকর্ম আর কখনও করবে না মর্মে অঙ্গীকার করলে তাদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে এমন নির্দেশনা পেয়ে পুলিশ দালাল ও সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু করলেও তারা গা ঢাকা দিয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন জানায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কিছু অসৎ পুলিশ এসব চক্রের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত রয়েছে। তারা তাদের কাছে থেকে মাসিক মাসোহারা পেয়ে থাকে। তা না হলে যৌ’নকর্মীর সঙ্গে তাদেরও আ’টক হওয়ার কথা।
বাগমারা থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সৌরভ কুমার জানান, যৌ’নকর্মী আ’টকের খবরটি ছড়িয়ে পড়ায় দালাল বা সিন্ডিকেটের লোকজন গা ঢাকা দিয়েছে। তবে আমরা তাদের যেকোনো মূল্যে আ’টক করতে চেষ্টা করে যাচ্ছি।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম জানান, আ’টক যৌ’নকর্মীর কাছে থেকে দালাল সিন্ডিকেটসহ এ পেশায় জড়িতদের বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। আমরা সেগুলো অনুসন্ধান করে দেখছি। সমাজ থেকে এসব অশ্লীলতা ও অনৈতিক কার্যকলাপ দূর করতে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। সেই সঙ্গে এসব কর্মকাণ্ডে জড়িতদের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে তাদেরকে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে কীভাবে সহযোগিতার মাধ্যমে পুনর্বাসন করা যায় সে ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।