আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অধিকৃত পশ্চিমতীরে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে পাঁচ জনে দাঁড়িয়েছে। খবর আল জাজিরা’র।
খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলে কয়েকটি ভয়াবহ হামলার ঘটনার পর দেশটির সামরিক বাহিনী ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ধারাবাহিক অভিযান চালাচ্ছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার ২ জন ও বুধবার ৩ জন নিহত হয়েছেন।
বুধবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী ১৪ বছর বয়সী বালকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে। তারা জানায়, ফিলিস্তিনি বালক সৈন্যদের উদ্দেশে একটি পেট্রল বোমা ছোড়ে। ফলে ‘তাৎক্ষণিক হুমকি’ মোকাবিলা করতে তারা বন্দুকের গুলি ছুড়তে বাধ্য হয়।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে আরও দাবি করা হয়েছে, বুধবার রামাল্লাহর কাছাকাছি জায়গায় ইসরায়েলি বাহিনী গ্রেপ্তার অভিযান চালানোর সময় ২ পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ দেখা দেয়। সে সময় আরেকজন ফিলিস্তিনি নিহত হন।
তবে এ বিষয়ে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বা পুলিশের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে বেশ কিছু ফিলিস্তিনি নাগরিক ইসরায়েলি সাঁজোয়া যান লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়ে মারছেন। এ ছাড়া বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি গুলির শব্দও শোনা গেছে।
ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেট জানিয়েছে, ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে আক্রমণের পরিকল্পনাকারী ৩ ফিলিস্তিনিকে অভিযানের সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সামরিক বাহিনী ও পুলিশের দেওয়া বক্তব্যে জানা গেছে, বুধবারের অভিযানে জঙ্গি সন্দেহে মোট ২০ জনকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার হাসান মুহাম্মাদ আসসাফ (৩৪) নামে একজন ফিলিস্তিনি আইনজীবীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আসসাফ দ্য প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) একটি বিভাগে কাজ করতেন।
এ বিভাগের কাজ ছিল ফিলিস্তিনের ভূমিতে ইসরায়েলের জনবসতি স্থাপনের ঘটনাগুলো নথিবদ্ধ করা এবং এর বিরুদ্ধে লবিং করা।
মন্ত্রণালয় জানায়, সামরিক বাহিনী নাবলুস শহরে অবস্থানরত আসসাফের বুকে গুলি করে তাকে হত্যা করে।
গত ৩ সপ্তাহে ইসরায়েলের মূল ভূখণ্ডে ৪টি ধারাবাহিক আক্রমণে ১৪ জন ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হয়। এর মধ্যে রাজধানী তেল আবিবের একেবারে কেন্দ্রে একটি হামলার ঘটনাও অন্তর্ভুক্ত। মূলত এরপর থেকে পশ্চিম তীরে অভিযানের সংখ্যা ও তীব্রতা বাড়িয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
প্যালেস্টাইন ন্যাশনাল ইনিশিয়েটিভের (পিএনআই) মহাসচিব মোস্তফা আল বারগুসি জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও বিপজ্জনক করে তুলবে।
রামাল্লাহ থেকে আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বারগুসি আরও বলেন, ‘আমার মতে, এই সংঘর্ষগুলোর আরও বিস্তৃত আকারের একটি ইন্তিফাদার (ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন) সূত্রপাত ঘটাতে পারে।’
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ জন ফিলিস্তিনি নাগরিক ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন।
গত বছরের মে মাসে আরও একবার ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সহিংসতা দেখা দিয়েছিল। সে সময় ধারাবাহিকভাবে ১১ দিন গাজা উপত্যকায় হামলা চালায় ইসরায়েল।
ফলে ২৩২ জন ফিলিস্তিনি মারা যান এবং ইতোমধ্যে দুর্দশাগ্রস্ত এ অঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।