ফের বড় বিপদে ডা: সাবরিনা

জুমবাংলা ডেস্ক : তথ্য গোপন ও জালিয়াতির মাধ্যমে দুইটি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেওয়ার অভিযোগে জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনার দুইটি এনআইডি’ই ‘ব্লক’ করে দেওয়া হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন ২০১০-এর ১৪ ও ১৫ ধারা অনুযায়ী তথ্য গোপন ও জালিয়াতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কমিশনের এনআইডি অনুবিভাগ থেকে গুলশান থানা নির্বাচন কর্মকর্তাকে এই মামলা দায়ের করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুল ইসলাম এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন। এসময় তিনি জানান, ডা. সাবরিনার দুই এনআইডি নেওয়ার ঘটনাটি তদন্ত করতে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, ডা. সাবরিনা শারমিন হোসেন আইন বহির্ভূতভাবে দুইটি এনডি নিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি দুইটি এনআইডি কার্ডই ব্যবহার করতেন। এর মধ্যে প্রথম এনআইডিটি নিয়েছেন ২০০৯ সালে, রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা এলাকা থেকে। অন্যদিকে দ্বিতীয় এনআইডি নিয়েছেন ২০১৬ সালে রাজধানীর গুলশান থানা এলাকা থেকে। কিন্তু একজন নাগরিক দুইটি এনআইডি নিতে পারেন না।

এনআইডি অনুবিভাগের ডিজি আরও বলেন, দুইটি এনআইডি থাকলে দ্বিতীয় এনআইডি ব্লকড করার নিয়ম। কিন্তু ডা. সাবরিনা যেহেতু বড় ধরনের জালিয়াতি করে দণ্ডনীয় অপরাধ করেছেন এবং জ্ঞাতসারে তিনি তথ্য গোপন করেছেন, তাই আপাতত তার দুইটি এনআইডি’ই ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে গুলশান থানার নির্বাচনি কর্মকর্তাকে মামলাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ডা. সাবরিনা কিভাবে দুইটি এনআইডি পেয়েছেন, এ ক্ষেত্রে তাকে কারা সহযোগিতা করেছেন, এর সঙ্গে ইসি’র কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারী জড়িত ছিলেন কি না— এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ইসির জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগ।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম বলেন, এনআইডি অনুবিভাগের ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর মো. নুরুজ্জামানকে ওই কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটিতে বুয়েটের একজন প্রতিনিধি, সিটি করপোরেশনের একজন প্রতিনিধি ও সশস্ত্র বাহিনীর একজন প্রতিনিধি রাখা হবে। কমিটি দায়ীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর নির্বাচন কমিশনে সাংবাদিকদের জানান, ডা. সাবরিনার দ্বিতীয় এনআইডিটি ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। ওই সময় তিনিও বলেন, পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে মামলাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইসির এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, ডা. সাবরিনা চৌধুরীর মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজের নামে দু’টি এনআইডি নিয়েছেন বলে উঠে আসে ‍দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে। এর মধ্যে তিনি দ্বিতীয় এনআইডি নিয়েছেন ২০১৬ সালের ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময়। দু’টি এনআইডিতে নিজের নাম এক হলেও মা-বাবা ও স্বামীর নামে ভিন্নতা রয়েছে। দুই এনআইডি’র ঠিকানাও আলাদা। দু’টি এনআইডিতে তার বয়সের পার্থক্য রয়েছে প্রায় পাঁচ বছর। দুদক বিষয়টি জানতে পেরে বিস্তারিত জানতে চেয়ে চিঠি দেয় ইসি’কে।