জুমবাংলা ডেস্ক : গাজীপুরের শ্রীপুরে পোশাক কারখানার দুই তরুণী শ্রমিক সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। মোবাইল ফোনে কৌশলে ডেকে এনে মারধরের পর পাঁচজন তাঁদের পালাক্রমে ধর্ষণ করে। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের বিদাই গ্রামে এ সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার এক তরুণী আজ রবিবার সকালে শ্রীপুর থানায় মামলা করেছেন।
নির্যাতনের শিকার দুই তরুণীর বয়স যথাক্রমে ১৮ ও ১৯। তাঁদের একজনের বাড়ি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলায় ও আরেকজনের বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁও। দুইজনেরই বাবা বেঁচে নেই। তাঁরা ভালুকা উপজেলার জামিরদিয়া এলাকার একটি কারখানার শ্রমিক।
সংঘবদ্ধ ধর্ষণে অভিযুক্তরা হলেন- গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বিদাই গ্রামের আবদুল বারেকের ছেলে শাহিনুল (৩০), আইয়ুব আলীর ছেলে কালাম (২৮), বিল্লাল হোসেনের ছেলে জাহাঙ্গীর (৩০), টুকুর ছেলে মোকসেদুল (৩০) ও আলী হোসেনের ছেলে বাবু (১৮)।
তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে পুলিশ আজ সকালেই শাহিনুল, কালাম, জাহাঙ্গীর ও বাবুকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে শাহিনুল ও বাবু পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের ঘটনা স্বীকার করেছে। ঘটনায় জড়িত মোকসেদুলকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন জানান, দুইজনের মধ্যে এক তরুণী (বাদী) ওই কারখানায় গত ১২ দিন ধরে চাকরি করছেন। আরেক তরুণী চাকরি করছেন দীর্ঘদিন ধরেই। এ তরুণীর (দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করা) সঙ্গে একই কারখানার শ্রমিক শাহিনুলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত শুক্রবার অজ্ঞাত একটি মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে শাহিনুল এ তরুণীকে যেতে বলেছিলেন।
মামলার বাদী তরুণী জানান, গত শুক্রবার বিকেলে কারখানা ছুটির পর ওই তরুণী (সহকর্মী) তাঁকে শ্রীপুরের বিদাই গ্রামে তাঁর এক ভগ্নিপতির বাড়িতে বেড়াতে যেতে অনুরোধ জানান। এতে তিনি রাজি হন। ওইদিন সন্ধ্যায় ওই গ্রামের ভ্রমরাভিটা পৌঁছানো মাত্র পাঁচজন তাঁদের তুলে নিয়ে যায়। গ্রামের খোকনের বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘরে তাঁকে ও আরেক তরুণীকে পরিত্যক্ত মুরগির খামারের ভেতর নিয়ে যায়। ওই সময় তাঁর মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে বেদম মারধর করে তাঁকে।
কান্নায় ভেঙে পড়ে এ তরুণী জানান, রাত আড়াইটা পর্যন্ত পাঁচজন তাঁর উপর নির্যাতন চালায়। তিনি জানান, পরদিন (শনিবার) সকাল ছয়টার দিকে শাহিনুল তাঁকে ঘর থেকে বের করে পথ দেখিয়ে চলে যেতে বলে। ওই সময় তাঁর সহকর্মী ওই তরুণীকে খুঁজে পাননি তিনি। ফেরার পর ওই তরুণী (সহকর্মী) তাঁকে জানিয়েছেন, জাহাঙ্গীর ও কালাম পালাক্রমে তাঁকেও ধর্ষণের পর রাত দশটার দিকে পিকআপভ্যানযোগে জৈনা এলাকায় ফেলে যায়।
এ তরুণী জানান, নির্যাতনের শিকার তাঁর ওই সহকর্মীর কাছ থেকে জেনেছেন, ধর্ষণকারী শাহিনুল তাঁদের সঙ্গে একই কারখানায় চাকরি করেন। এ ছাড়া নির্যাতনকালে প্রত্যেকের নামও জেনেছেন তিনি।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুজ্জামান খান বলেন, ঘটনা জেনে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরেকজনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
তিনি আরো জানান, ধর্ষণের শিকার দুই তরুণীর আজ দুপুরে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।