ফ্যাশনের ধারণা সবসময় এক থাকে না। সময়ের সাথে সাথে এটি চেন্জ হয়। প্রায় প্রতিবছর এখানে ভিন্ন কিছু চোখে পড়ে। এতে শুধু যে নতুন কিছু যুক্ত হয়, তা কিন্তু নয়। অনেক সময় পুরোনো কিছু হারিয়ে যাওয়া বিষয় নতুন ফ্যাশন হিসেবে আমাদের সামনে আসে। এসব জটিলতার নিরীখে নতুন বছরের ফ্যাশন কেমন হতে যাচ্ছে?
নতুন বছরে ফ্যাশন ট্রেন্ড তরুণ-তরুণীদের পছন্দ এবং চলমান সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠছে। তরুণ প্রজন্মের ফ্যাশন-সচেতনতা এবং ব্যক্তিত্ব প্রকাশের প্রবণতা ফ্যাশন ট্রেন্ডের মূল চালিকা শক্তি। মানুষ এখন ফ্যাশনের পাশাপাশি আরামকে প্রাধান্য দেয়। তাই নতুন বছরেও দেখা যাবে পোশাকে আরামের ছোঁয়া।
এখন পোশাকের সঠিক আকার থেকে কিছুটা বড় ঢিলেঢালা পোশাক পরতে দেখা যায়। আরামদায়ক ও সহজলভ্য ওভারসাইজড পোশাক; যেমন হুডি, টি-শার্ট এবং লুজ প্যান্টের প্রতি ঝোঁক বাড়বে এ বছর। নারীরা লং কামিজ থেকে বের হয়ে এখন বেছে নিচ্ছে শর্ট কটন কুর্তি বা কামিজ। কুর্তির সঙ্গে পরছে ওভারসাইজড সাদা কিংবা কালো ফরমাল প্যান্ট।
ইউনিসেক্স পোশাক ব্যবহারের প্রবণতা কয়েক বছর ধরে বাড়ছে। যেমন টি-শার্ট ছেলেদের পোশাক হিসেবে পরিচিত হলেও এটি এখন মেয়েরাও ব্যবহার করে। তাই ফ্যাশন হাউসগুলো এমনভাবে টি-শার্ট ডিজাইন করছে, যাতে ছেলে-মেয়ে উভয়েই সেগুলো পরতে পারে। রঙের ক্ষেত্রেও এখন ছেলে-মেয়ে তেমন ব্যবধান করা হয় না। সবাই সব রঙের পোশাক পরে।
স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী পোশাক এবং হ্যান্ডক্র্যাফট ডিজাইনের প্রতি আগ্রহ থাকবে। দেশীয় ঐতিহ্য ও বৈশ্বিক ফ্যাশনের ফিউশনে এমব্রয়ডারি, ব্লকপ্রিন্ট বা লোকজ মোটিফের পোশাক জনপ্রিয় হবে। পরিবেশবান্ধব পোশাকের জনপ্রিয়তা বাড়বে।
বাংলাদেশের আরএমজি সেক্টর বিশ্বের অন্যতম বড় পোশাক উৎপাদনকারী। গ্লোবাল ফ্যাশন ট্রেন্ড এই সেক্টরের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
* সুযোগ: সাসটেইনেবিলিটির উপর জোর দেওয়ায় বাংলাদেশের কাছে নতুন বাজার খুলে যাচ্ছে। অর্গানিক কটন এবং রিসাইক্লেড ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করে বাংলাদেশ সাসটেইনেবল ফ্যাশন মার্কেটে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।
* চ্যালেঞ্জ: ইন্ডিভিজুয়ালিটি এবং কাস্টমাইজেশনের চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশের আরএমজি সেক্টরকে উন্নত প্রযুক্তি এবং নতুন ডিজাইন ধারণা গ্রহণ করতে হবে।
* নতুন বাজার: নস্টালজিয়া ট্রেন্ড বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন বাজার তৈরি করতে পারে। 90’র দশকের ফ্যাশনের উপর ভিত্তি করে নতুন পোশাক ডিজাইন করে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী বাজারে প্রবেশ করতে পারে।
বছরের স্টাইলিংয়ের একটি জনপ্রিয় ধারা হচ্ছে ম্যাক্সিমাম স্টাইল উইদ মিনিমাম এফোর্ট। এতেই এথনিক ইভেন্ট কিংবা অফিস লুক সবটুকু পাওয়া চাই। এটুকু নিশ্চিত করার জন্য ফ্যাশন বিশ্ব লুফে নিয়েছে কো-অর্ড টেকনিক। কো-অর্ড মূলত টু-পিস সেট পোশাক। এটি হতে হবে ম্যাচিং কালারের। প্রিন্ট অথবা সিঙ্গেল কালার ফ্যাব্রিকের তৈরি। কখনো টপ এবং স্কার্টের যুগলবন্দি তো আবার কো-অর্ডিনেটেড জগার এবং সোয়েটশার্টের মেলবন্ধন। ব্লাউজ আর লেহেঙ্গা স্কার্টের সঙ্গেও মিলিয়ে নেওয়া যায় একদমে।
দুটি আলাদা পোশাক অথচ একে অন্যের রং, ঢংয়ে এক।ফ্যাশনের একটি বড় নির্ধারক জেন জি। টেকসই ফ্যাশনের পাশাপাশি স্ট্রিট ফ্যাশনেও তাদের আগ্রহ সমান। ভিনটেজ, রেট্রো, অতিরিক্ত বড় আকারের পোশাক এবং টেকসই কাপড়ের মধ্য দিয়ে বৈচিত্র্যকে উদ্যাপন করেছে তারা। ২০০০ সালের স্টাইলগুলো আধুনিকভাবে তুলে ধরেছে জেন জি প্রজন্ম। কটেজকোর ফ্যাশনও দেখা গেছে এ বছর। সব বয়সী মানুষের পোশাকে পলকা ডট, বো ও ফিতার ব্যবহার রেখেছেন ডিজাইনাররা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।