আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বছরের প্রথম ৬ মাসে বন্দুক হামলায় নিহতের নতুন রেকর্ড গড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় বিপুল পরিমাণে মানুষ মারা যায়। দেশটির ইতিহাসে এর আগে কখনো ছয় মাসে এত নিহতের ঘটনা ঘটেনি। বার্তা সংস্থা এপি’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া যায়।
নর্থ ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত একটি ডাটাবেজের তথ্য বিশ্লেষণে জানা গেছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে এই পর্যন্ত মোট ৩৭৭টি বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং সে সকল ঘটনায় নারী ও শিশুসহ মোট ১৪০ জন নিহত হয়েছেন।
এছাড়াও ডাটাবেজটির তথ্য অনুযায়ী, এর আগের বছর ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে বন্দুকধারীর মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২৭ জন। মাত্র এক বছরের মধ্যেই নিহতের সংখ্যা ৫ গুণেরও বেশি বেড়েছে। এই নিহতদের সবাই ম্যাস কিলিং এর শিকার। যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত পরিভাষায় কোনো এক ব্যক্তির বন্দুক হামলায় যদি একই সময়ে কোনো নির্দিষ্ট স্থানে ৪ জন বা তার চেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ নিহত হন, সেক্ষেত্রে সেই হত্যাকাণ্ডকে নির্বিচার হত্যা বা ম্যাস কিলিং বলে।
নর্থ ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞানী বিভাগের অধ্যাপক জেমস অ্যালেন ফক্স চলতি বছরের পরিসংখ্যানে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসবাদ বা বন্দুক হামলা একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যায় রূপ নিয়েছে এবং এটি দিনে দিনে আরও খারাপ অবস্থায় যাচ্ছে। কয়েক বছর আগেও বন্দুক হামলায় প্রতি বছর নিহতের সংখ্যা ছিল বড়জোর দুই থেকে তিন ডজনের মধ্যে। কিন্তু গত বছর প্রথম ছয় মাসেই ম্যাস কিলিংয়ে নিহতের সংখ্যা ২ ডজন ছাড়িয়ে যায়। আর চলতি বছর আমরা যে পরিসংখ্যান দেখতে পাচ্ছি, তা রীতিমতো খুবই ভয়ঙ্কর।’
যুক্তরাষ্ট্রে আগ্নেয়াস্ত্রের সহজলভ্যটা ও যত্রতত্র তার ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা। এমনকি চলতি বছরের ৪ জুলাই দেশটির স্বাধীনতা দিবসেও রাজধানী ওয়াশিংটনসহ বিভিন্ন শহরে বেশ কয়েকটি বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও বেশ কয়েকবার দেশটিতে বন্দুক সহিংসতার সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার রাজনৈতিক দল ‘ডেমোক্র্যাটিক পার্টি’ এর সদস্যরা পার্লামেন্টে প্রচলিত অস্ত্র ক্রয়, সংরক্ষণ ও ব্যবহার বিষয়ক আইনের সংস্কার চেয়ে একাধিকবার বিল উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু বিরোধী দল ‘রিপাবলিকান পার্টি’ এর আপত্তির কারণে সেসব বিল পাস হয়নি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট গত ৪ জুলাই দেশজুড়ে বন্দুক হামলার পর এক বিবৃতিতে রিপাবলিকান পার্টির সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা চাইলে অ্যাসল্ট রাইফেল ও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ম্যাগাজিন বিক্রি নিষিদ্ধ করতে পারি এবং বন্দুক প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারি। নাগরিকদের বন্দুক ক্রয়ে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে এবং এসব পদক্ষেপের জন্য আমাদের সদিচ্ছাই সমস্যার সমাধান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।