জুমবাংলা ডেস্ক : করোনার ব্যাপক সংক্রমণ ঠেকাতে পরিসিিইথতি নিয়ন্ত্রণে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় আজ রাত ১২টার পর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে লকডাউন করা হচ্ছে। কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যার ঘনত্ব বেশি হওয়ার কারণে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
লকডাউন এলাকায় বসবাসরতরা তাদের প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য ও চিকিৎসাসামগ্রী অনলাইনের মাধ্যমে ক্রয় করতে পারবেন। যা বাসায় পৌঁছে দেয়া হবে। এটুআই ও ইক্যাব যৌথভাবে এটি পরিচালনা করবে। হোম ডেলিভারির জন্য ইতোমধ্যে একদল প্রশিক্ষিত কর্মীবাহিনী তৈরি করা হয়েছে।
অন্যদিকে যাদের অনলাইন সুবিধা নেই, নগদ অর্থে খাদ্যসামগ্রী ক্রয় করতে চান তাদের জন্য দু-একটি শাক-সবজি, মাছ-মাংসের ভ্যান, ভ্যানচালক ও পণ্যসামগ্রী সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত করে ভেতরে প্রবেশ করানো হবে।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান খান বলেন, রাত ১২টা থেকে পূর্ব রাজাবাজার এলাকা লকডাউন করা হচ্ছে। সোমবার ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবিলার লক্ষ্যে ডিএনসিসি এলাকার জন্য গঠিত কমিটির এক অনলাইন সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই সিদ্ধান্ত জানার পর থেকে গাইডলাইন অনুযায়ী সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছি।
ডিএনসিসির ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পক্ষ থেকে পূর্ব রাজাবাজার এলাকার কর্মহীন, অসহায় ও দুস্থ মানুষের একটি তালিকা প্রণয়ন করছেন। তালিকা অনুযায়ী তাদের ডিএনসিসি থেকে ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ করা হবে।
গতকালের অনলাইন সভায় অন্যান্যের মধ্যে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, এটুআই প্রতিনিধি রেজাউল জামি, ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার, স্বাস্থ্য অধিদফতরের লাইন পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. আমিনুল ইসলাম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার, শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের প্রতিনিদিধি উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পূর্ব রাজাবাজার এলাকার নাজনিন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ডিএনসিসির ওয়ার্ড কাউন্সিলর, স্বাস্থ্য অধিদফতর, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), এটুআই, ই-কমার্স অব বাংলাদেশ (ইক্যাব) এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হবে।
সভা সূত্রে জানা গেছে, এই এলাকার অসুস্থ রোগীদের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্তৃক টেলিমেডিসিন সার্ভিস চালু করা হবে। এছাড়া পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় অবস্থিত নাজনিন স্কুল অ্যান্ড কলেজে কোভিড-১৯ পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহের জন্য বুথ স্থাপন করা হবে। এটি সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। বুথটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক।
পূর্ব রাজাবাজারের লকডাউন এলাকায় বসবাসরতদের জন্য প্রয়োজনীয় যোগাযোগের জন্য ফোন নম্বরগুলোর মধ্যে রয়েছে: ত্রাণের জন্য- ৩৩৩; ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান ইরান : ০১৯১১-৩৮০৬৩৩; আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন : ০১৭১৫-৪০৭১৩৯; ওসি শেরেবাংলা নগর থানা : ০১৭১৩-৩৯৮৩৩৫; ব্র্যাকের প্রতিনিধি ডা. ফারহানা : ০১৭১৩-০৯৫২৭৯; আইইডিসিআর প্রতিনিধি ডা. ফারজানা ০১৭১৯-২১২৫৯১; মাসুদ হোসেন পি এ টু ওয়ার্ড কাউন্সিলর : ০১৭১১-৯৩৯৭৯৬।
এছাড়া লকডাউন এলাকায় যেসব নিয়ম মানতে হবে, সেসবের মধ্য রয়েছে:
<li>পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় একটিমাত্র প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ (গ্রিন রোডে আইবিএ হোস্টেলের পাশে) খোলা থাকবে।</li>
<li> লকডাউন চলাকালে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।</li>
<li> জনগণের চলাচল অত্যন্ত সীমিত রাখা হবে।</li>
<li>লকডাউন চলাকালে পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় বসবাসরত লোকজন বাইরে যেতে পারবেন না এবং বাইরের লোকজন ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন না।</li>
<li> পূর্ব রাজাবাজার এলাকার সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থেকে লকডাউনের বিষয়ে থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।</li>
<li>লকডাউন যথাযথভাবে পালিত হওয়ার লক্ষ্যে ওই এলাকায় পুলিশের টহল থাকবে। এছাড়া মোবাইল কোর্টও পরিচালিত হবে।</li>
<li> গুরুতর রোগীদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে পারবে। এছাড়া জরুরি সেবা যেমন বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ইত্যাদি প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মীরা লকডাউন এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন।</li>
<li> ডিএনসিসির বিশেষ পরিচ্ছন্নতা টিম সেখানে কাজ করবে। তবে ব্যবহৃত সুরক্ষা সামগ্রী বা মেডিকেল বর্জ্য যেমন- মাস্ক, গ্লাভস ইত্যাদি আলাদাভাবে প্যাকেট করে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কাছে দিতে হবে। মেডিকেল বর্জ্য কোনোভাবেই অন্যান্য বর্জ্যের সঙ্গে মেশানো যাবে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।