বিনোদন ডেস্ক : প্রতিটি সিনেমা শেষে পর্দায় ভেসে ওঠে ‘সমাপ্ত’। গত ৩৬ বছরে পর্দায় হাজারও সিনেমার সমাপ্তি ঘোষণা হওয়া কাকরাইল মোড়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের কার্যালয়ের সামনে অবস্থিত রাজমনি সিনেমা হলের ‘সমাপ্তি’ ঘোষণা করলেন মালিক আহসানুউল্লাহ মনি।
গেল ১১ অক্টোবর (শুক্রবার) থেকে রাজমনি সিনেমা হলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান আহসানুউল্লাহ মনি।
দেশের জনপ্রিয় একটি টিভি চ্যানেলকে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে হল থেকে মেশিন এবং বিভিন্ন সরঞ্জাম খুলে ফেলা হয়েছে। রাজমনি সিনেমা হল ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হবে বাণিজ্যিক ভবন। সিনেপ্লেক্স কিংবা আধুনিক থিয়েটার নির্মাণের পরিকল্পনা নেই।
১৯৮৩ সালে চালু হয়েছিল রাজমনি সিনেমা হল। রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত এলাকায় নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে রমরমা ব্যবসা হতো। সিনেমার মন্দা হাওয়া লাগলে ধীরে ধীরে দর্শক আসাও কমে যায়। আহসানুউল্লাহ মনি বলেন, গত ৫-৬ বছর ধরে ঈদ ছাড়া দর্শক হলে আসতে চায় না। সারাবছর লোকসান গুনতে গুনতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।
রাজমনি সিনেমা হলে গত সপ্তাহে প্রদর্শিত হয়েছে ‘নোলক’ সিনেমা। ওই ছবির সপ্তাহ শেষে সিনেমা হল বন্ধ করে দেওয়া হয়। আহসানুউল্লাহ মনি জানান, সাতদিনে ২০০ জনের মতো দর্শক এসেছে সিনেমা হলে। তিনি বলেন, শাকিব খানের ছবি বলে তাও ২০০ মানুষ এসেছে। অন্যদের ছবির বেলায় আসতো না! এভাবে বছরের পর বছর লোকসান গোনা সম্ভব না।
সিনেমা হল বন্ধ হলেও কয়েকজন কর্মচারী এখনও রয়ে গেছেন। সিনেমার হলের আশপাশে সাঁটানো পোস্টার। রবিবার বিকেলে রাজমনি হলে গিয়ে দেখা যায়, তারা নিজেরা বসে গল্প করছেন। সবার মুখেই আফসোস, নিয়মিত ভালো সিনেমা মুক্তি পেলে হলটি বন্ধ হতো না।
এই কর্মীদের একজন নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, হল চালাইয়্যা মালিককে প্রতি মাসে ভর্তুকি গুনতে হচ্ছিল। হল চালু রাখলে প্রতিদিন যে খরচ, তার অর্ধেকও টিকিট বিক্রি করে উঠত না। হলের বিশাল জায়গা। তাই মালিক আর লস না দিয়া নতুন বিল্ডিং করতাছে।
রাজমনির সাথেই আরেক হল রাজিয়া এ সপ্তাহে চালু রয়েছে। সেখানে চলছে পুরাতন এক ছবি। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, আগামী শুক্রবার থেকে রাজিয়া হলও বন্ধ করে দেয়া হবে। জানা যায়, রবিবার বিকেলের শোতে সেখানে দর্শক ছিল ৭-১০ জন।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিয়া আলাউদ্দিন বলেন, সিনেমা হলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ ভালো সিনেমার অভাব। মানুষকে জোর করে সিনেমা হলে আনা সম্ভব না। ভালো ছবির কথা শুনে দর্শক হলে এসে বারবার প্রতারিত হয়েছেন। তাই এখন তারা হল বিমুখ।
তিনি মনে করেন, এই হারানো দর্শক আবার ফিরিয়ে আনা কঠিন। ভালো সিনেমা উপহার দিতে পারলে দর্শক হলে আসবেন। যেসব সিনেমা মুক্তি পায়, সেগুলো দেখতে দর্শকেরা আগ্রহী হন না। সূত্র : চ্যানেল আই অনলাইন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।