জুমবাংলা ডেস্ক : বৃষ্টিপাত কমে যাওয়া ও উজানের ঢল না নামায় গোমতী নদীর পানি কমছে। বিপৎসীমার তিন সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে কুমিল্লার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাচ্ছে।
এদিকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবীরা দিন রাত এক করে কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন। কেউ আনছেন রান্না করা খাবার, কেউবা শুকনো খাবার মুড়ি, চিড়া, গুড, খেজুর নিয়ে আসছেন। কারো হাতে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, সেনেটারী ন্যাপকিনসহ জরুরী শিশু খাদ্য-বিশুদ্ধ পানি।
কুমিল্লা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে দলমত নির্বিশেষে হাজার হাজার তরুণ স্বেচ্ছাসেবী।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আবেদ আলি বলেন, বন্যার্ত মানুষের জন্য যেভাবে মানুষ এগিয়ে এসেছে তা কেবল বাংলাদেশেই সম্ভব। কুমিল্লার বন্যা কবলিত ১৪টি উপজেলায় ধীরে ধীরে পানি কমতে শুরু করেছে। আমরা ও সাধারণ জনগণ বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রেখেছি।
কুমিল্লার বড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, চৌদ্দগ্রাম ও নাঙ্গলকোটসহ বন্যা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় ও জেলার বাইরে থেকে আসা অন্তত কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবী দল।
সরজমিনে দেখ যায়, ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করছেন বুড়িচং উপজেলার বন্যা দুর্গত এলাকায়। এমনই ভাবে বন্যা কবলিতদের উদ্ধার এবং ত্রাণ তৎপরতা চালাতে জীবনবাজি রাখছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবীরা।
স্বেচ্ছাসেবীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কুমিল্লায় অন্তত ১ হাজার স্বেচ্ছাসেবীদল কাজ করছে ত্রাণ বিতরণে এবং উদ্ধার তৎপরতায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিআইডব্লিউটিএ নৌকা ও স্পিডবোট সাহায্য করছে স্বেচ্ছাসেবীদের।
স্বেচ্ছাসেবী টিম ফিউরিয়াস মটো ক্লাবের সদস্য মালেক খসরু জানান, আমরা ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি চিকিৎসা সেবা ও উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এ বন্যায় বিভিন্ন এলাকা থেকে তরুণ স্বেচ্ছাসেবকরা যেভাবে এগিয়ে এসেছে তা আসলেই গৌরবের।
অন্যদিকে কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা কবলিত মানুষের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট ওষুধ বিতরণ অবহ্যত রেখেছেন পাশাপাশি সাহায্যার্থে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিস, রেডক্রিসেন্ট, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠনসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তারা উদ্ধার শুকনো খাবার, খিচুড়ি, চিকিৎসা সামগ্রী,পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট নিয়ে দুর্গতদের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়।
র্যাব ১১ সিপিসি ২ কুমিল্লার কোম্পানী অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, লালমাই ও নাঙ্গলকোট উপজেলায় ১ হাজার বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার ও পানীয় বিতরণ করেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে কুমিল্লা মহানগরীর কচুয়া, দৈয়ারা, লক্ষীপুর ও দূর্গাপুরের বন্যাদুর্গত দুইশত পরিবারের মাঝে কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র আহবায়ক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, মহানগর বিএনপির আহবায়ক উৎবাতুল বারী আবু, সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপুকে ত্রাণ বিতরণ করতে দেখা গেছে।
জেলার নাঙ্গলকোটের বণ্যার্তদের খাদ্য পৌঁছে দিচ্ছে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু বকর চৌধুরী। কুমিল্লা নাঙ্গলকোটের মৌকরা ইউনিয়নের প্লাবিত বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের এ খাবার দেয়া হয়।
কুমিল্লা মহানগর ও দক্ষিণ জেলা ছাত্রদল ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব নেতৃত্বে কুমিল্লা মহানগর এলাকা, সদর উপজেলা ও নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ, সাতবাড়িয়া, অষ্টগ্রামে বন্যার্তদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করতে দেখা গেছে।
এছাড়াও কুমিল্লা শাহপুর দরবার শরীফের যুব সংগঠন জিকরুল্লাহ ইসলামীয়া যুব সংগঠন বুড়িচং উপজেলার ফকির বাজার বাকশীমূল, যদুপুর, হরিপুর ও বুড়িচং এলাকার শতাধিক পরিবারের মাঝে পানি ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।