জুমবাংলা ডেস্ক: মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া চিত্রনায়িকা পরীমনি বর্তমান পরিস্থিতির জন্য নিজের ‘অপরিপক্বতাকে দুষছেন’ বলে একটি জনপ্রিয় জাতীয় দৈনিককে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
শৈশবে মা-বাবাকে হারানোর পর গ্রামের কিশোরী শামসুন নাহার স্মৃতি থেকে রূপালী পর্দায় ‘পরীমনি’ হয়ে উঠা এই চিত্রনায়িকা পদস্খলনের জন্য দায়ী করেছেন তার পারিপার্শ্বিকতাকে।
বনানী থানায় পরীকে জিজ্ঞাসাবাদের সঙ্গে যুক্ত একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জাতীয় দৈনিকটিকে বলেন, ‘আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে পরীমনি স্বাভাবিকই ছিলেন। তিনি অকপটে স্বীকার করেন, বর্তমান পরিণতির জন্য তার অপরিক্বতা দায়ী। তিনি বলছেন, তাকে যারা পরিচালনা করতেন, তারা কোনো বিষয়ে সতর্ক করেননি। নিজের সীমানাও অনেক সময় ভুলে গেছেন তিনি। যাচাই-বাছাই ছাড়া যার তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখাও বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত ছিল না বলে মনে করছেন তিনি।’
জিজ্ঞাসাবাদে পরীমনি অভিভাবক শূন্যতার কথাও উল্লেখ করেন।
গতকাল বিকালে পরীমনিকে বনানী থানায় হস্তান্তর করে র্যাব। বুধবার আটকের পর অভিনেত্রী যে পোশাকে ছিলেন, গতকালও তাকে একই পোশাকে দেখা গেছে।
গত বুধবার র্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার হন পরী। একদিন র্যাবের হেফাজতে থাকার পর বৃহস্পতিবার বিকালে তাকে বনানী থানায় সোপর্দ করা হয়। রাত সোয়া ৮টার দিকে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে নেওয়া হয়। তার সঙ্গে আদালতে হাজির করা হয় তার সহযোগী দীপু, ‘বন্ধু’ প্রযোজক রাজ ও রাজের ম্যানেজার সবুজকে।
আদালতে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন বনানী থানার পরিদর্শক সোহেল রানা।
পরীমনির পক্ষে তার আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন জানালেও তা নাকচ করে দেন ঢাকার মহানগর হাকিম মো. মামুনুর রশিদ। পরীমণিকে চার দিনের রিমান্ড আদেশ দেন তিনি।
একই মামলার আসামি পরীমনির সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপু এবং বুধবার র্যাবের আলাদা অভিযানে গ্রেপ্তার নজরুল ইসলাম রাজ ও তার ব্যবস্থাপক সবুজ আলীকেও বনানী থানার মাদকের আলাদা মামলায় চার দিনের হেফাজতে দিয়েছেন বিচারক।
আদালতে তোলার সময়ও খুব স্বাভাবিক ছিলেন পরীমনি। আদালত প্রাঙ্গণে তাকে হাসিখুশি দেখা যায়। এরপর শুনানির শুরু থেকেই পরীমনি আদালতে নিশ্চুপ ছিলেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রাজধানীর বনানী থানায় মামলা দায়ের করেছে র্যাব।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানিয়েছে, গত বুধবার র্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া চিত্রনায়িকা পরীমনির বাসায় অভিযানে মিনি বারের সন্ধান পেয়েছেন র্যাব কর্মকর্তারা, যেখানে নিয়মিত ‘ঘরোয়া আয়োজন’ হত।
র্যাব সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত শামসুন নাহার স্মৃতি (স্মৃতিমনি বা পরীমনি) ২০১৬ সাল থেকে অ্যালকোহলে আসক্ত হয়ে পড়েন। তার ফ্ল্যাট থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি নিয়মিত অ্যালকোহল সেবন করে থাকেন। মাত্রাতিরিক্ত সেবনের চাহিদা মেটানোর লক্ষে বাসায় একটি মিনিবার স্থাপন করেছেন। মিনি বার থাকায় তার ফ্ল্যাটে ঘরোয়া পার্টি আয়োজন পরিপূর্ণতা পেত বলে তিনি জানান।
গ্রেপ্তারকৃত মো. নজরুল ইসলাম রাজসহ আরও অনেকে তার বাসায় অ্যালকোহলসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক সরবরাহ করত এবং পার্টিতে অংশগ্রহণ করত বলে গ্রেপ্তারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।