আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চলমান সংকট নিরসনে বেলারুশের গোমেল শহরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি প্রতিনিধিদের আলোচনা ইতিবাচক দিকে মোড় নিচ্ছে বলে মনে করছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে কথা বলেন পুতিন। খবর রয়টার্স’র।
ভার্চুয়াল মাধ্যমে হওয়া সেই বৈঠকে পুতিন বলেন, ‘তাদের আলোচনা ইতিবাচক দিকে যাচ্ছে। রুশ সরকারের প্রতিনিধিরা আমাকে এ ব্যাপারে নিশ্চিত করেছেন। পরে এ ব্যাপারে আমি বিস্তারিত বলব।’
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয় মূলত পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে। ২০০৮ সালে কিয়েভ এই আবেদন করার পর থেকেই সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে দু’দেশের মধ্যে।
এর মধ্যে ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করার পর দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়ে। ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে গত দুই মাস রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছিল মস্কো।
কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে আসেনি। উপরন্তু এই দু’মাসের প্রায় প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা অভিযোগ করে গেছে— যে কোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রুশ বাহিনী।
অবশেষে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া; এবং তার দু’দিন পর, ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
শুক্রবার সপ্তদশতম দিনে পৌঁছেছে এই অভিযান। প্রাণ বাঁচাতে ইতোমধ্যে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র পোল্যান্ড ও রোমানিয়ায় প্রায় ২০ লাখ ইউক্রেনীয় আশ্রয় নিয়েছেন। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে ইউক্রেনে সাড়ে সাড়ে ৪ শ’র বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে আছে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশুও।
যুদ্ধবিরতি ও কূটনৈতিক পন্থায় দুই দেশের মধ্যকার সমস্যা সমাধানের জন্য গত ১ মার্চ থেকে বেলারুশের গোমেল শহরে বৈঠকে বসেছেন রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি প্রতিনিধিরা। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দর লুকাশেঙ্কোর উদ্যোগেই মূলত আয়োজন হয়েছে এই বৈঠক এ পর্যন্ত কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে দু’ দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে।
শুক্রবারের ভার্চুয়াল আলোচনায় পুতিন ও লুকাশেঙ্কোর মধ্যে পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা নিয়েও আলোচনা হয়। ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি বেলারুশের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি সদস্যরাষ্ট্র।
লুকাশেঙ্কো বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞাকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। যেসব প্রজন্ম সোভিয়েত ইউনিয়ন দেখেছে, তারা জানে—নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কীভাবে ব্যাপক শক্তিমত্তা নিয়ে টিকেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন।’
জবাবে পুতিন বলেন, ‘আপনির ঠিকই বলেছেন, জন্মের পর থেকেই সোভিয়েত ইউনিয়ন পশ্চিমের নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত হলেও সামনে এগিয়ে গেছে এবং বিস্ময়কর সাফল্য অর্জন করেছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।