জুমবাংলা ডেস্ক : সাতক্ষীরার শ্যামনগরে প্রসব যন্ত্রণায় কাতর এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে বাঁশের দোলনায় চড়িয়ে কাঁধে করে হাসপাতালে নিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। অসহায় স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যদের এমন চেষ্টায় তাকে নৌকায় তুললে সেখানেই সন্তান প্রসব করেন।
শনিবার (৩১ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে শ্যামনগর উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের এ ঘটনা ঘটে।
গৃহবধূ কেয়া মনির শ্বশুর ইব্রাহিম হোসেন জানান, হাসপাতালে নিতে খোলপেটুয়া নদী পারে নৌকায় ওঠানো হলে সেখানে সন্তান প্রসব করে। এরপর তাদের শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। বর্তমানে মা ও নবজাতক দুইজনই সুস্থ আছেন। এমন কঠিন পরিস্থিতিতেও কয়েক কিলোমিটার হেঁটে খেয়াঘাট পৌঁছে নদী পথ পাড়ি দিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে ১০-১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের চন্ডিপুর গ্রামটি চারদিকে নদী বেষ্টিত। নেই ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা। পাওয়া যায় না চিকিৎসা সেবা। মাঝেমধ্যেই নদী পথে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার আগেই ট্রলারে সন্তান জন্ম দেন অনেকে। অনেকে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে রক্তক্ষরণে মারাও যান।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (৩০ জুলাই) মধ্যরাতে প্রসব যন্ত্রণা ওঠে শ্যামনগর উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের ইমরান হোসেনের স্ত্রী কেয়া মনির (২০)। দ্বীপ ইউনিয়ন হওয়ায় তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয় না। এমনিতেই দুর্গম পথ। এরপর ছিল মুষলধারে বৃষ্টি। রাস্তাঘাট কাদা। কোথাও পানিতে টইটম্বুর। মোটরসাইকেলই একমাত্র যানবাহন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তা দিয়ে হাসপাতালে নেওয়াও সম্ভব না। এ অবস্থায় গ্রাম্য চিকিৎসক ও ধাত্রী দিয়ে স্বাভাবিক ডেলিভারির চেষ্টা করা হয় আজ বেলা ১২টা পর্যন্ত।
কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়। উপায় না পেয়ে স্বামী-শ্বশুর মিলে বাঁশ দিয়ে দোলনা বানিয়ে কাঁধে ঝুলিয়ে কেয়া মনিকে নিয়ে রওনা হন হাসপাতালের উদ্দেশে। সঙ্গে ছিল ধাত্রীসহ অন্যান্য স্বজন। খেয়াঘাটে পৌঁছে নিজেদের ট্রলারেই রওনা হন নওয়াবেকী ঘাটের উদ্দেশে। এর মধ্যে দুপুর দেড়টার দিকে ট্রলারেই ফুটফুটে একটি সন্তান প্রসব করেন কেয়া মনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।