নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাধীনতা বিরোধীদের বিষয়ে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও স্বাধীনতা বিরোধীদের তৎপরতা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। বঙ্গবন্ধু জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়গুলো জেলে কাটিয়েছেন বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য। তিনি সর্বশক্তি দিয়ে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। কিন্তু পরাজিত শক্তি থেমে থাকেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশি-বিদেশি স্বাধীনতার শত্রুরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। তারা স্বাধীনতা যুদ্ধের শ্লোগান রাতারাতি বদল করে জয় বাংলার পরিবর্তে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ করে। এতেই প্রমাণিত হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা তারা মেনে নেয়নি। বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র্র হিসাবে প্রমাণ করার জন্য তারা আজও কাজ করে যাচ্ছে। স্বাধীনতার মূল্যবোধকে তারা ধ্বংস করার চেষ্টা চালাচ্ছে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী শনিবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিয়াম অডিটোরিয়ামে রংপুর বিভাগ সমিতি, ঢাকা কর্তৃক আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
টিপু মুনশি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন বাঙ্গালীদের একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র্র এবং বাঙ্গালীদের অর্থনৈতিক মুক্তি। বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্ববাসী বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। আজ বাংলাদেশ সকল অর্থনৈতিক সূচকে পাকিস্তান থেকে এগিয়ে।’
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে কাপুরুষের মতো হত্যা করা হয়। এর মাধ্যমে এদেশ থেকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুলুণ্ঠিত করার যে ষড়যন্ত্র স্বাধীনতা বিরোধীরা করেছিল তা সাময়িকভাবে সফল হলেও বাস্তবে সফল হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ১৭ কোটি মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তার হাত ধরেই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে।
সেমিনারের আরেক বিশেষ অতিথি বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুকে দেখিনি কিন্তু তাঁর কন্যা শেখ হাসিনাকে দেখেছি। দেশের মানুষের কল্যাণে বাবার মতোই তাঁর কন্যা কাজ করে যাচ্ছে।’
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. রাশিদ আসকারী।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন সত্তা। বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশকে নিয়ে ভাবা দুঃস্বপ্ন। ঘৃণ্য ঘাতকের কয়েকটি তপ্ত বুলেট তাঁর নশ্বর দেহকে শেষ করে দিতে পারে; কিন্তু তাঁর কীর্তি অবিনশ্বর। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অম্লান।’
বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতা পাগল বাঙালি জাতির ‘বাতিঘর’ হিসেবে আখ্যায়িত করে ড. রাশিদ আসকারী বলেন, ‘বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু উপখ্যান এমনভাবে মিশে আছে যেন বাংলা-বাঙালি-বঙ্গবন্ধু একই সমান্তরালে।’
সংগঠনের সভাপতি ও সাবেক ধর্মসচিব ড. মোঃ নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মোঃ কফিল উদ্দিন এবং সগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ আবু কালাম সিদ্দিক।
সেমিনারে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক বিশেষ সহকারী সেলিমা খাতুন, বিচারপতি আবু তাহের মো: সাইফুর রহমান, স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত চিকিৎসক অধ্যাপক আমজাদ হোসেন, একুশে পদক প্রাপ্ত খ্যাতিমান ফটোগ্রাফার পাভেল রহমান এবং অ্যাডভোকেট এস এম আব্রাহাম লিংকন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাবেক সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মোঃ মাহফুজুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত সচিব মোঃ রেজাউল আহসান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব জিয়াউল হাসান, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার খলিলুর রহমান এবং সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউর রহমান প্রধান। এছাড়া, রংপুর বিভাগের বিভিন্ন আসনের সংসদ সদস্যবৃন্দ, রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজ, সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকসহ রংপুর বিভাগের আট জেলার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন। সবশেষে ছিল বরেণ্য শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক আয়োজন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।