যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সিকিউরিটিজ প্রতিষ্ঠান সিটাডেল সিকিউরিটিজে যোগ দিয়ে আলোচনায় এসেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক কায়রান কাজী। শীর্ষস্থানীয় এআই ল্যাব, কোয়ান্ট কোম্পানি এবং প্রি-আইপিও ইউনিকর্ন থেকে অসংখ্য প্রস্তাব পাওয়ার পর সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ কোয়ান্টেটিভ ডেভেলপার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
১৬ বছর বয়সী বিস্ময় বালক কায়রান দুবছর আগে স্পেসএক্সে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি সান্তা ক্লারা ইউনিভার্সিটির সর্বকনিষ্ঠ স্নাতক।
বাংলাদেশের সঙ্গে কায়রানের বন্ধন তার মা জুলিয়া কাজীর দিক থেকে। জুলিয়ার নামে বাংলাদেশের মৌলভীবাজারে একটি শপিং সেন্টার রয়েছে, যার নাম ‘জুলিয়া শপিং সিটি’। এখানে কায়রানের নামেও রয়েছে একটি রেষ্টুরেন্ট।
কায়রানের নানি সৈয়দা হাসনা বেগম ছিলেন মৌলভীবাজার জেলার সংরক্ষিত নারী আসনে প্রথম নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তিনি এখনও সেই এলাকার বিভিন্ন সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়। আর নানা প্রয়াত আইনজীবী গজনফর আলী চৌধুরী ছিলেন সেখানকার একজন সম্মানিত সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ।
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে হাসনা এবং গজনফর উভয়েই ‘দৈনিক সংবাদ’ পত্রিকার আমেরিকান সংস্করণ প্রকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এটি ছিল বাংলাদেশের বাইরে প্রকাশিত প্রথম কোনও জাতীয় বাংলাদেশি সংবাদপত্র।
সিটাডেলে নতুন চাকরি কায়রানের স্পেসএক্সে দুই বছরের কর্মজীবনের পর এক নতুন অধ্যায় যুক্ত করতে যাচ্ছে। স্পেস এক্সে তিনি স্টারলিংক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের দলে কাজ করেছেন এবং উৎপাদন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেম তৈরি করেছেন, যা গ্রাহকের জন্য স্যাটেলাইট তাদের রশ্মি কোথায় পাঠাবে তা নির্ধারণ করে।
কায়রানের স্পেস এক্সের সময় সম্পর্কে জুলিয়া বলেছেন, প্রতিষ্ঠানটি তার যোগ্যতার ওপর আস্থা রেখে তাকে ব্যর্থ হওয়ার এবং বেড়ে ওঠার সাহস দিয়েছে।
কায়রানের মতে, তিনি সিটাডেল সিকিউরিটজকে বেছে নিয়েছেন কারণ এখানে একটি গতিময় কর্মক্ষেত্রের পরিবেশের অনন্য সমন্বয় রয়েছে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, এখানে তিনি কয়েকদিন বা সপ্তাহের মধ্যেই তার কাজের পরিমাপযোগ্য প্রভাব দেখতে পাবেন, কয়েক মাস পর নয়।
কায়রানের শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিল খুব অল্প বয়সে। তিনি প্রচলিত স্কুলের তৃতীয় শ্রেণী থেকে সরাসরি কলেজে ভর্তি হন নয় বছর বয়সে। এগারো বছর বয়সে তিনি লাস পসিতাস কলেজ থেকে গণিতে অ্যাসোসিয়েট অফ সায়েন্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০২৩ সালে ১৪ বছর বয়সে তিনি সান্তা ক্লারা ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক হন, যা সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৭০ বছরের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ স্নাতক হিসেবে রেকর্ড সৃষ্টি করে। কলেজ জীবনে তিনি একজন নির্বাচিত ছাত্র সরকারের সিনেটর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তার কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা আরও আগে শুরু হয়েছিল, যখন তিনি ১০ বছর বয়সে ইন্টেল ল্যাবসে ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করেন, যেখানে তিনি ভবিষ্যদ্বাণীমূলক স্পিচ জেনারেশন প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কাজ করতেন।
বিজনেস ইনসাইডারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কায়রান বলেন, স্পেসএক্সে দুই বছর কাজ করার পর আমি নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে এবং একটি ভিন্ন পরিবেশে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রস্তুত বোধ করছিলাম। সিটাডেল সিকিউরিটিজ একটি উচ্চাভিলাষী সংস্কৃতি অফার করেছে, তবে এটি সম্পূর্ণ নতুন একটি ক্ষেত্র, যা আমার জন্য খুবই উত্তেজনাপূর্ণ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।