বিশ্ব পর্যটন দিবসে, এ বছরের প্রতিপাদ্য— ‘টেকসই উন্নয়নে পর্যটন’। কিন্তু বাংলাদেশের পর্যটকদের জন্য বিদেশ ও দেশের ভ্রমণ ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে—ভিসার জটিলতা থেকে শুরু করে হোটেল ভাড়া, নিরাপত্তাহীনতা এবং বিনোদনের অভাব, সব মিলিয়ে ভ্রমণ একটি বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে।
বিদেশি ভ্রমণ পরিকল্পনার শুরুতেই সমস্যার মুখে পড়ছেন সবুজ পাসপোর্টধারীরা। ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া কঠিন হওয়ায় অনেকেই হিমশিম খাচ্ছেন, আবার ভিসা পেলেও বিমানবন্দর থেকে সন্দেহজনক কারণে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
বিশেষত মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা পাওয়া ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠেছে।
দুবাই, কুয়েত, বাহরাইন, ওমান ও কাতারে ভিসা বন্ধ।
ভারত আগস্ট ২০২৪-এর পর থেকে ট্যুরিস্ট ভিসা বন্ধ।
ইন্দোনেশিয়া ও কম্বোডিয়ায় কঠোর শর্ত।
চীনে ভিসা মিললেও বিমানবন্দরে যাচাই-বাছাইয়ে অনেককে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
থাইল্যান্ডে ভিসা পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু সময় লাগছে বেশি।
মালয়েশিয়াতেও ইমিগ্রেশন সন্দেহ হলে পর্যটক ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ইউনাইটেড কনসালটেন্সি অ্যান্ড ট্যুরস-এর স্বত্বাধিকারী শেখ কামরুজ্জামান রনি জানান, “জুলাই আন্দোলনের পর বাংলাদেশিদের ভিসা পাওয়ার জটিলতা আরও প্রকট হয়েছে। বাড়তি কাগজপত্র, দীর্ঘসূত্রিতা এবং অনাস্থার কারণে প্রকৃত পর্যটকরাও বিপাকে পড়ছেন।”
দেশের পর্যটন খাতেও বিড়ম্বনা কম নয়। কক্সবাজার, সিলেট, বান্দরবানসহ বিভিন্ন স্পটে হোটেল-রিসোর্টের ভাড়া অনেক সময় থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়ার চেয়েও বেশি। পর্যটন মৌসুমে রুম পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে, খাবারের দামও তুলনামূলক বেশি।
নিরাপত্তাহীনতা এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে। কক্সবাজার সৈকতে বারবার ডুবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, প্যারাসেইলিংসহ কিছু বিনোদন স্থগিত। নারী পর্যটকরা অনিয়মিত হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
টোয়াব সভাপতি মোহাম্মদ রাফিউজ্জামান বলেন, “ভ্রমণ খাতের সমস্যা সমাধানে সরকারের রেগুলেটরি নজরদারি প্রয়োজন। বিদেশে ভিসা সমস্যার সমাধানেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানো জরুরি।”
সব মিলিয়ে, বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ ক্রমেই কঠিন চ্যালেঞ্জে পরিণত হচ্ছে। স্বপ্নে থাকা বিশ্বভ্রমণ, সুযোগ-সুবিধার অভাবে এখন ফিকে হয়ে যাচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।