জুমবাংলা ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের উন্নয়নকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।
তিনি রোহিঙ্গাদের নিরাপদে, মর্যাদার সঙ্গে ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের পরিবেশ তৈরি করতে মিয়ানমারকে বাধ্য করার ব্যবস্থা নিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্রের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস (সিএফআর)’ আয়োজিত এক সংলাপে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
‘এ কনভারসেশন উইথ অনারেবল প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা’ (মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপ) শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সৃষ্টি করেছে মিয়ানমার, এ সমস্যার সমাধানও সেখানেই রয়েছে। দ্রুত ও শান্তিপূর্ণভাবে আমরা এ সমস্যার সমাধান চাই।
এ সংকটের গভীরতা বুঝতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস, ক্যাম্পে গিয়ে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ভয়াবহ বর্ণনা শুনলে আপনাদের বুকও কেঁপে উঠবে। ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের দুর্দশার চিত্র আপনাদের হৃদয় নাড়িয়ে দেবে। আপনারা চাইবেন, খুব দ্রুত যেন তাদের এই কষ্টের সমাপ্তি হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, সিএফআরে শেষবার তিনি এসেছিলেন ১৯ বছর আগে। তারপর বাংলাদেশ নানা দিক দিয়ে নানাভাবে বদলে গেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নে যে অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছে তার বিবরণ তুলে ধরার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গা সংকট আমাদের জন্য উদ্বেগজনক চ্যালেঞ্জ হয়ে এসেছে। পরিকল্পিত নৃশংসতার মধ্য দিয়ে মিয়ানমার সরকার তাদের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের নিধন করছে। রোহিঙ্গারা সহিংসতা ও নৃশংসতা থেকে পালাতে দেশ ছেড়েছে। আমরা মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের আশ্রয় দিয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও খরার তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সরকার জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও অ্যাকশন প্ল্যান নিয়েছে। নিজস্ব অর্থে ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করা হয়েছে। ওই তহবিল থেকে কয়েকশ’ প্রকল্পে এরই মধ্যে ৪৫ কোটি ডলার খরচ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পিপিআইর ভিত্তিতে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩০তম অর্থনীতি। স্পেক্টেটরের প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ১০ বছরে বাংলাদেশ বিশ্বে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
পরে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন এবং রোহিঙ্গা সংকট, মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের পরিস্থিতি, খাদ্য ও সামাজিক সুরক্ষা এবং নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্নের জবাব দেন।
সিএফআরের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তার ছেলে ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদ, সিএফআর প্রেসিডেন্ট রিচার্ড এন. হাস প্রমুখ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।