মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনের পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ করেছে। অন্যদিকে চীন আমেরিকার পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ করেছে। এর মাধ্যমে চীন ও আমেরিকার মধ্যে অর্থনৈতিক বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হলো।
কোন সন্দেহ নেই যে, বিশ্ববাজারে পণ্যের দামের উপর এর প্রভাব পড়বে। শুধু চীন ও আমেরিকা নয় বরং অনেক দেশ এখানে জড়িয়ে পড়বে। ট্রাম্প প্রশাসন স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের উপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেছেন। এর ফলে কানাডা ও মেক্সিকোর মত দেশে পণ্য উৎপাদন ও দামের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে।
তবে বাংলাদেশের উপর কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প লাভবান হওয়ার সুযোগ পাবে। বাংলাদেশ আগের থেকে বেশি অর্ডার পেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। তবে এ সুযোগ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে প্রস্তুতি নিতে হবে এবং জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, আমাদের আর্থিক খাত, গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকট এবং রিজার্ভের যে পরিস্থিতি তাতে খুব সুবিধাজনক অবস্থায় নেই। তাই সুযোগ আসলেও নেবার সক্ষমতা নেই। তাছাড়া দীর্ঘমেয়াদে মার্কিন ও চীনের সংরক্ষণবাদ নীতি বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে না। কারণ এতে রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
অর্থাৎ সব মিলিয়ে চীনা পণ্যে মার্কিন শুল্কের কারণে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের জন্য কিছু লাভ এনে দিতে পারে বলে মনে করা হলেও দীর্ঘমেয়াদে এই বাণিজ্য যুদ্ধ বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলার আশঙ্কা রয়েছে।
এর আগে ২০১৮ সালেও যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করলে চীন পাল্টা শুল্ক আরোপ করে। এতে দুই পরাশক্তির মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেবার চীনা পণ্যের ওপর প্রায় তিন হাজার ৪০০ কোটি ডলারের শুল্ক আরোপ করেছিলো যুক্তরাষ্ট্র। পরে চীনও ৫৪৫টি মার্কিন পণ্যের ওপর একই রকম শুল্ক আরোপ করে।
তখন চীনই ‘বিশ্বের অর্থনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাণিজ্য যুদ্ধ’ শুরুর জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছিলো। এর ফলে তখন এর ফলে পশ্চিমা দেশগুলোতে জিনস, মোবাইল ফোন, ছাতা, এমনকি সেক্স টয়ের দামও বেড়ে যায়।
কিন্তু সেবার চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধের সুফল ঘরে তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। উল্টো বাংলাদেশের সামগ্রিক পোশাক রফতানিতে নেতিবাচক ধারা ছিলো ২০১৯-২০ সালে। পরে ২০২০ সালে বাণিজ্য যুদ্ধ অবসানে চুক্তিতে উপনীত হয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। তবে ওই দুই বছরে দুই দেশের বাণিজ্যঘাটতি কিছুটা হলেও কমেছিলো।
কিন্তু বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাণিজ্য যুদ্ধে যেহেতু পণ্যের দাম বেড়ে যায়, তাই শেষ পর্যন্ত এবারেও ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ মানুষরাই, যারা পণ্য কেনে। আর দাম বাড়লে ক্রেতারা কম কিনবেন, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি কমবে। তবে এর প্রভাব কতটা ব্যাপক হয় এবং অনিশ্চয়তার মাত্রা আরও বেড়ে যায় কি-না সেই আশঙ্কাও রয়েছে। কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।