জুমবাংলা ডেস্ক: দারিদ্র্য হ্রাসে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও পুষ্টির স্তর উন্নয়ন প্রত্যাশিত মাত্রায় হয়নি। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের ২০২৩ সালের ফুড সিকিউরিটি মনিটরিং অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৩৬ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। দারিদ্র্য ও অপুষ্টি এখনও হাত ধরাধরি করে চলে।
নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনালের তথ্য অনুযায়ী কক্সবাজার অঞ্চলে অপুষ্টির হার অত্যন্ত বেশি, যেখানে ২৯% শিশু কম ওজনসম্পন্ন এবং ৩৫% শিশুই খর্বাকৃতিতে ভুগে থাকে। এই প্রেক্ষাপটে অপুষ্টি দূর করে জনসাধারণকে সচেতন করবার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
আজ (২৭ সেপ্টেম্বর) কক্সবাজারের একটি হোটেলে আয়োজিত প্রশিক্ষণ শিবিরে বক্তারা উল্লিখিত মত তুলে ধরেন।
নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনালের অর্থায়নে, ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচি (বিএইচপি)-র ‘অ্যাডোপ্টিং এ মাল্টিসেক্টরাল অ্যাপ্রোচ ফর নিউট্রিশন (AMAN)’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। পুষ্টি উন্নয়নে বহুমাত্রিক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের ‘মাল্টিসেক্টরাল মিনিমাম নিউট্রিশন প্যাকেজ (MMNP)’ বাস্তবায়নে করণীয় ঠিক করতে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। প্রশিক্ষণে জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা এবং মাঠ পর্যায়ের মোট ৫০জন কর্মী অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ সাহাব উদ্দিন। এতে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন রামু উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ অসীম বরন সেন, সদর উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আতিকুর রহমান মিঞা, বিএইচপি-র পল্লী কর্মসূচির অপারেশন প্রধান ডাঃ মনোয়ারুল আজিজ প্রমুখ।
প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনালের প্রকল্প কর্মকর্তা অমিত কুমার মালাকার। ব্র্যাকের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএইচপি-র এরিয়া ইনচার্জ মেহনাজ বিনতে আলম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ সাহাব উদ্দিন বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পুষ্টির মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি বার্তাসমূহ সকলের নিকট পৌছে দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এইক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ বিভাগের সকল মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের আরও সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিএইচপি-র কর্মসূচি প্রধান ডাঃ মনোয়ারুল আজিজ বলেন, পুষ্টি উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তা বিবেচনায় দরিদ্র পরিবারের জন্য পুষ্টিকর খাবার অপরিহার্য। সেজন্য বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবারের পাশাপাশি পুষ্টিগুনসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করার জন্য প্রচারণা বাড়াতে হবে। তিনি অপুষ্টি দূরীকরণ ও সমস্যা মোকাবিলায় সরকারি সংস্থা, সুশীল সমাজ ও বেসরকারি সংস্থাকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। প্রশিক্ষণ শিবিরে খাদ্যের নানা উপাদান ব্যবহার করে খাবারের পুষ্টিগুন বৃদ্ধি করার প্রক্রিয়া এবং পুষ্টির গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এ ছাড়া পুষ্টি উন্নয়নে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের ব্যবহারিক জ্ঞান বাড়ানোর প্রতিও গুরুত্বারোপ করা হয়। নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল-এর সহায়তায় ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচির অধীন ‘অ্যাডোপ্টিং এ মাল্টিসেক্টরাল অ্যাপ্রোচ ফর নিউট্রিশন (AMAN)’ নামে একটি প্রকল্প কক্সবাজারের ৮টি উপজেলায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অপুষ্টি দূর করতে কাজ করছে।
এ প্রকল্পের আওতায় যা রয়েছে, তা হলো- সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, পুষ্টির জন্য বহুমুখী পদক্ষেপ ও কক্সবাজারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি কর্মসূচির মাধ্যমে অতিদরিদ্রদের পুষ্টি উন্নয়ন। বিশেষত: অতিদরিদ্র নারী, শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নয়নে স্থানীয় সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করা হচ্ছে।
AMAN প্রকল্পের লক্ষ্য হলো : মাঠ পর্যায়ের কর্মী সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে পুষ্টির স্তর উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানো এবং ইতিবাচক সামাজিক ও আচরণগত পরিবর্তনের লক্ষ্যে নানামুখী গণযোগাযোগ (Multisectoral Social and Behaviour Change Communication – MSBCC) তৈরি করা। এর পাশাপাশি ‘মাল্টিসেক্টরাল মিনিমাম নিউট্রিশন প্যাকেজ’ (Multi Sectoral Minimum Nutrition Package) বাস্তবায়নে সহায়তা করা।
পর্যটন শিল্প দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে অন্যতম হাতিয়ার: স্পিকার
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।