বাংলাদেশের সেরা রেস্টুরেন্ট: যা আপনাকে মুগ্ধ করবে

Royal Cuisine

কাজের সূত্রে পরিবারের কর্তা-গিন্নি দুজনই বাড়ির বাইরে সারা দিন, ছোটদেরও পড়ালেখার চাপে দম ফেলার ফুরসতটুকুও যেন নেই—সব মিলিয়ে খাবার টেবিল ছাড়া একসঙ্গে সবার দেখাই হয়ে ওঠে না। কখনো কখনো সেই সুযোগটাও হয়তো মেলে না। তাই সপ্তাহের কোনো একটি দিন বা পরিবারের কারও বিশেষ দিনে রেস্তোরাঁয় গিয়ে খাওয়া আর কিছু সময় কাটানো এখন একধরনের সামাজিক ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। বলা যায়, এই ট্রেন্ডকে পুঁজি করে দেশের ছোট–বড় সব শহরেই গড়ে উঠেছে বহু ক্যাফে ও রেস্তোরাঁ।

Royal Cuisine

আর রাজধানীতে তো বলতে গেলে অলিগলি থেকে শুরু করে শপিং মল বা সুউচ্চ যেকোনো অট্টালিকাতেই পাওয়া যাবে কোনো না কোনো ক্যাফে বা রেস্তোরাঁ। বাদ যায়নি ফুটপাত-রাজপথও, সেখানেও গড়ে উঠেছে বিভিন্ন আকার ও ধরনের ফুডকোর্ট। বাইরে খাওয়ার এই সংস্কৃতিতে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে নতুন এক ধারা—ইন ডাইন রেস্তোরাঁ। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে এ ধারার বেশ কিছু রেস্তোরাঁ।

একটি ইন ডাইন রেস্তোরাঁর নাম ‘এন’স কিচেন যেখানে পরিবার, বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী নিয়ে ঘরোয়া পরিবেশে ঘরোয়া স্বাদের খাবার উপভোগ করতে পারবে। সে জন্য অবশ্যই আগে ফোন করে গ্রাহককে তাঁর চাহিদার কথা জানাতে হবে। তাদের রান্নাঘরে একদম দেশি স্বাদের ভর্তা–ভাজি থেকে শুরু করে রোস্ট, পোলাও বা কাচ্চি বিরিয়ানিও পাওয়া যাবে।

আবার যাঁরা বিদেশি খাবার খেতে চায়, তাঁদের জন্য “আউট অব বক্স” নামে আলাদা মেনু চার্ট রয়েছে। গ্রাহকের চাহিদা অনুসারে তাদের খাবার প্রস্তুত করা হয়। তাই আমাদের কোনো খাবার অবশিষ্ট থাকে না। এ জন্য এখানে কোনো বাসি খাবার থাকে না। সাধারণ রেস্তোরাঁগুলো তাদের একদিনের বাসি খাবার পরের দিন গ্রাহককে অনায়াসে দিয়ে দেয়। আবার বাসি খাবার নানাভাবে প্রক্রিয়া করে চালিয়ে দেওয়া হয়।

ঢাকার অভিজাত এলাকার পাশাপাশি পুরান ঢাকায়ও গড়ে উঠেছে এ রকম কিছু ইন ডাইন রেস্তোরাঁ। যেমন বেচারাম দেউড়িতে পুরোনো একটি জমিদারবাড়িকে ইন ডাইন রেস্তোরাঁয় রূপান্তরিত করা হয়েছে, যেখানে জমিদারবাড়ির আবহে চলে খাওয়াদাওয়া। লাঞ্চ অ্যাট ইমরান’স হেরিটেজ হোমও সাজানো হয়েছে পুরোনো জমিদারবাড়ির আবহে। পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবারের পাশাপাশি সীমিত আকারে অন্যান্য খাবারও এখানে পাওয়া যায়।

হোটেল কস্তুরি লিমিটেড, হান্ডি, কিন্নোরী রেস্টুরেন্ট, আল কাদেররিয়া ক্যাফে (পশ্চিম রামপুরা), ফারস হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট (২টি শাখা), এশিয়া হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট, কেএফসি, ওয়েস্টন রেস্টুরেন্ট, হোটেল পূর্বাণী ইন্টারন্যাশনাল, বার্গার কিং (৭টি শাখা) ও দি রাজধানী হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট বিবেচনায় রাখতে পারেন।

উত্তরা রাজলক্ষীতে অবস্তিত রয়াল ক্যুসিনটি নামের মতই রাজকীয়। বিভিন্ন উপলক্ষের দিনগুলোতে আলবত পাল্টে যায় পুরো রেস্টুরেন্টের চেহারা। অভিজাত ইন্টেরিয়র ঘুরে বেড়ানোর পর বুফে নেয়ার সময় এর দামটা চমকে দিতে পারে। ৮৫-এর বেশি আইটেমের বুফে লাঞ্চ ৭০০ টাকা এবং ৮৫-এর বেশি আইটেমের বুফে ডিনার ৮০০ টাকা। এমন প্রাসাদতূল্য জায়গার তুলনায় দামটা একটু কমই বলা যায়।

পরিবারের ছোট-বড় সবাইকে নিয়ে দারুণ কিছু সময় কাটানোর জন্য ফুডল্যান্ড ক্যাফে রেস্টুরেন্টটি সেরা একটি নির্বাচন হতে পারে। মনোরম ইন্টেরিয়রের পাশাপাশি প্রতিটি আরামদায়ক বসার জায়গা অতিথিদের অনেকটা নিজের ঘরের মত অনুভূতি দেয়। আর এর সাথে যুক্ত হয় এদের সাশ্রয়ী মূল্যের বুফে। ৪০-এর অধিক আইটেমের জন্য লাঞ্চ বুফের খরচ ৬০০ টাকা, যা রাতের বেলা হয়ে যাবে ৭০০ টাকা।

খুব বেশি পরিচিত নাম না হলেও রেড ক্লিফ সঠিক মূল্যে মান সম্পন্ন খাবার দেওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে রাখা যেতে পারে রেড ক্লিফকে। ৭৫+ আইটেম দিয়ে সাজানো তাদের দুপুরে বুফের জন্য খরচ করতে হবে ৬৫০ টাকা। আর রাতের বেলা ৮৫+ আইটেমের জন্য গুনতে হবে ৭৫০ টাকা। বুফে লাউঞ্জের মত এরাও ৩ বছর পর্যন্ত বাচ্চাদের জন্য ফ্রিতেই খাবার সরবরাহ করছে। আর ৩-এর পর থেকে ৬ বছর বয়সীদের জন্য রাখা হচ্ছে অর্ধেক দাম। এদের আসন ধারণ ক্ষমতা ১৫০ জন, তাই আগে থেকে যোগাযোগ করে যাওয়াটাই উত্তম। এর জন্য তাদের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে নক করা যেতে পারে। এই রেস্টুরেন্টে যেতে হলে যেতে হবে ৯/এ সাতমসজিদ রোড ধরে গাওসিয়া টুইন পিকের ৪২ এবং ৪৩ নাম্বার বাড়ির লেভেল ৯-এ।