আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরাকের রাজধানী বাগদাদের সুরক্ষিত কূটনৈতিক এলাকায় (গ্রিন জোন) নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে দেশটির প্রভাবশালী শিয়া নেতা মুকতাদা আল-সদরের সমর্থকদের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন নিহত ও ৩৫০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলেছে, স্বাস্থ্যকর্মীদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, আল-সদরের ১৫ সমর্থক গুলিতে নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩৫০ জন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, গতকাল সোমবার প্রভাবশালী শিয়া নেতা মুকতাদা আল-সদর রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় বাগদাদে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা টিয়ার গ্যাস ও গুলি ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের ‘রিপাবলিকান প্যালেস’ থেকে বের করে দেয়।
ইরাকের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানান, আল-সদরের ঘোষণার পর শত শত বিক্ষোভকারী সুরক্ষিত ‘গ্রিন জোনের’ প্রাসাদে ঢুকে পড়েন।
ইরাকের মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকগুলো এই প্রাসাদে অনুষ্ঠিত হয়। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল-কাধিমি পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে সব ধরনের বৈঠক স্থগিত করেছেন।
সরকারি ভবনগুলো থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে নিতে তিনি আল-সদরকে সহায়তা করতে অনুরোধ করেছেন।
গতকাল আল-সদর বিবৃতিতে জানান, তিনি ২ মাস আগেই রাজনৈতিক বিষয়গুলোতে আর নাক না গলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে এখন তিনি রাজনীতি থেকে ‘চূড়ান্ত অবসরের’ ঘোষণা দিচ্ছেন এবং দেশের সব রাজনৈতিক কার্যালয় বন্ধ করে দিচ্ছেন।
আল-সদরের কার্যালয় থেকে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়।
গত জুনে আল-সদর ও তার জোটসঙ্গী রাজনৈতিক দলগুলো ইরাকের পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করে। এর বেশ কয়েক মাস আগে দেশটিতে রাজনৈতিক অচলাবস্থা শুরু হয়। এখনো এর অবসান হয়নি।
মূলত আল-সদরের ‘পদত্যাগের’ পর থেকে সারা দেশে নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
ইরাকে গত অক্টোবরে নির্বাচনে ইরান-সমর্থিত শিয়া প্রার্থীরা আল-সদর সমর্থিত প্রার্থীদের কাছে পরাজিত হন।
ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধাচরণ করে বেশ জনপ্রিয়তা পান আল-সদর। তবে তিনি নির্বাচনের পর বেশ কয়েক মাস চেষ্টা করেও সংখ্যাগরিষ্ঠ দল সরকার গঠনে ব্যর্থ হয়।
অবশেষে, ইরাকের পার্লামেন্টের সবচেয়ে বড় শিয়াভিত্তিক জোট ‘কোঅর্ডিনেশন ফ্রেমওয়ার্ক’ জুলাইয়ে মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানিকে দেশের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য মনোনীত করে। আল-সদরের সমর্থকরা এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি।
গতকাল নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ‘গ্রিন জোন’ ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানায়। এরপর সেখানে কারফিউ জারি করা হয়।
বাগদাদে গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ও দেশের বাকি অংশে সন্ধ্যা ৭টা থেকে কারফিউ কার্যকর রয়েছে। সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশ চালু থাকবে।
প্রথমবারের মতো যেভাবে পাল্টা আক্রমণ চালাচ্ছেন ইউক্রেনের সেনারা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।