ঢাকার ধুলামাখা দুপুরে যখন মানুষ বাজারমূল্য নিয়ে দুশ্চিন্তায়, তখন একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা আসে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) পক্ষ থেকে—আজ রোববার, ১৮ মে ২০২৫ থেকে সোনার দাম বেড়ে নতুন দামে বিক্রি হবে। মূল্যবৃদ্ধির এ খবরে স্বর্ণখাতে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের মাঝে এক নতুন আলোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
বাজুস-এর সর্বশেষ সিদ্ধান্তে সোনার বাজারে পরিবর্তন
বাজুস (বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন) গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায় যে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার মূল্যবৃদ্ধির ফলে সোনার দাম পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। মূলত আন্তর্জাতিক বাজারে দামের তারতম্য, ডলারের রেট এবং আমদানির ব্যয় বৃদ্ধির কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
Table of Contents
নতুন নির্ধারিত স্বর্ণের দামে ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম এখন ১ লাখ ৬৭ হাজার ৯৮ টাকা। পাশাপাশি ২১ ক্যারেটের দাম ১ লাখ ৫৯ হাজার ৫০৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১ লাখ ৩৬ হাজার ৭১৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার মূল্য ১ লাখ ১২ হাজার ৯৭৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া সোনার বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে সরকারের নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং বাজুস নির্ধারিত ন্যূনতম ৬ শতাংশ মজুরি যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার মান ও ডিজাইন অনুযায়ী মজুরিতে তারতম্য থাকতে পারে।
সোনার দামের পরিবর্তনে বাজারে প্রভাব
সোনার দাম বাড়ার ফলে বাজারে একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। ক্রেতারা তাদের পূর্বনির্ধারিত বাজেট পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যদিকে, অনেক ব্যবসায়ী নতুন মজুদের পরিকল্পনা করছেন দাম স্থিতিশীল হওয়ার আগে।
বাজুসের তথ্যমতে, প্রতি বছর দেশের অভ্যন্তরীণ সোনার চাহিদা প্রায় ৪০ টন। এ চাহিদার বড় অংশ আসে আমদানির মাধ্যমে, যেখানে আন্তর্জাতিক বাজার এবং বৈদেশিক মুদ্রার ওঠানামা বড় ভূমিকা রাখে। এই পরিস্থিতিতে বাজুসের ভূমিকা হচ্ছে দেশের জুয়েলারি খাতকে স্থিতিশীল রাখা এবং গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা করা।
বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাময়িক স্বর্ণের দামের পরিবর্তন বাজারে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে না। বরং এটি স্বর্ণের মান ও ব্যবসার প্রতি ভোক্তাদের আস্থা পুনঃস্থাপনে সাহায্য করবে। বিশ্বব্যাপী স্বর্ণবাজারের তথ্য থেকেও দেখা যায় যে, মূল্যবৃদ্ধি বিভিন্ন দেশের আর্থিক নীতির প্রতিফলন হিসেবেই ঘটে থাকে।
বাজুসের করণীয় ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
স্বর্ণের দামের এই মূল্যবৃদ্ধি যেন জনস্বার্থে নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে, সে বিষয়ে বাজুস কাজ করে যাচ্ছে। সংগঠনটি নিয়মিতভাবে বাজার পর্যবেক্ষণ করে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে। পাশাপাশি সরকার ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় করে স্বর্ণ খাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার চেষ্টা করছে।
এই পরিস্থিতিতে বাজুস-এর সঠিক পদক্ষেপ এবং ন্যায্য দাম নির্ধারণ সাধারণ ভোক্তাদের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করছে।
FAQs
- বাজুস কী?
বাজুস বা বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন হলো দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের প্রধান সংগঠন, যারা বাজার পর্যবেক্ষণ ও মূল্যনির্ধারণের দায়িত্ব পালন করে। - বর্তমানে ২২ ক্যারেট সোনার দাম কত?
২০২৫ সালের ১৮ মে থেকে ২২ ক্যারেট সোনার দাম এক ভরি ১,৬৭,০৯৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। - কেন সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে?
আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দামের মূল্যবৃদ্ধি এবং ডলারের রেট বাড়ার কারণে দেশের বাজারেও দাম বেড়েছে। - বাজুসের ভূমিকা কী?
বাজুস দেশের স্বর্ণ বাজারের স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং ন্যায্য মূল্যে বিক্রয় নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। - ভ্যাট ও মজুরি কত শতাংশ যুক্ত হয়?
৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ৬ শতাংশ ন্যূনতম মজুরি স্বর্ণের দামের সঙ্গে যুক্ত করতে হয়।
সোনার বাজারের এ মূল্যবৃদ্ধি ও বাজুস-এর নির্দেশনায় দেশের স্বর্ণ খাতে নতুন দিশা সৃষ্টি হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।