বাতিল হচ্ছে বরিশালের দেড় লাখ টিসিবির কার্ড

জুমবাংলা ডেস্ক : বরিশালে ‘হাতে লেখা’ প্রায় দেড় লাখ টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড বাতিল হচ্ছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বরিশাল কার্যালয় সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

টিসিবির সূত্র জানায়, বরিশাল সিটি করপোরেশন (বসিক) ও বরিশাল জেলার ১০ উপজেলায় টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী মোট উপকারভোগীর সংখ্যা ২ লাখ ১৯ হাজার ৯২১ জন। এর মধ্যে বরিশাল মহানগরীতে উপকারভোগীর সংখ্যা ৯০ হাজার। আর ১০ উপজেলায় উপকারভোগীর সংখ্যা ১ লাখ ২৯ হাজার ৯২১ জন। ইতোমধ্যে মহানগরীর হাতে লেখা ৯০ হাজার কার্ডের তথ্য-উপাত্ত যাচাই শেষ হয়েছে। সেখানে হাতে লেখা ৩০ হাজার কার্ডকে স্মার্টকার্ডে রূপান্তর করা হয়েছে। বাকি ৬০ হাজার কার্ডধারীর তথ্যে অমিল পাওয়া গেছে। তাই প্রাথমিকভাবে সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ১০ উপজেলায় হাতে লেখা কার্ডের তথ্য-উপাত্ত যাচাই চলছে।

টিসিবির সূত্র আরও জানায়, বিগত সময়ে মহানগর ও উপজেলার কার্ডগুলোর তালিকা করেছেন স্থানীয় কাউন্সিলর, ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বররা। নিজের পক্ষে ভোটার টানতে এবং দলীয় প্রভাব বিস্তারে লক্ষ্যে তারা ভুয়া তথ্য দিয়ে ইচ্ছেমতো কার্ড বিতরণ করেছেন। হাতে লেখা কার্ডগুলোকে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডে রূপান্তর করতে গিয়ে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ভুয়া ও অসত্য তথ্য দিয়ে নেওয়া কার্ডগুলো বাতিল হচ্ছে।

টিসিবি বরিশালের সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী শতদল মণ্ডল বলেন, ‘জেলা ও মহানগরে মোট ৯১ জন ডিলারের মাধ্যমে টিসিবির তিনটি পণ্য বিতরণ করা হয়। ৪৭০ টাকায় ২ লিটার সয়াবিন তেল, ২ কেজি ডাল ও ৫ কেজি চাল উপকারভোগীদের কাছে বিক্রি করা হয়। যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৯০০ টাকা। চলতি মাসে স্মার্টকার্ডের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত সময়ে বিতরণ করা কার্ডের উপকারভোগীদের তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই চলছে। তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই শেষে যেসব কর্ডের সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে, শুধু তাদের নামেই স্মার্টকার্ড তৈরি হবে। ইতিমধ্যে মহানগরের উপকারভোগীদের তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে। এতে দেখা গেছে, একই পরিবারের একাধিক কার্ড রয়েছে। এমনকি নামে-বেনামে অনেক কার্ড দেওয়া হয়েছিল। ফলে বরিশাল মহানগরীর ৬০ হাজার কার্ড বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ১০ উপজেলার হাতে লেখা কার্ডধারীদের অবস্থা যদি বরিশাল মহানগরীর মতো হয়, তাহলে উপজেলার পর্যায়ের তিন ভাগের দুই ভাগ কার্ড বাতিল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

নগরীর রূপাতলী এলাকায় বাসিন্দা আবুল কাসেম হাওলাদার বলেন, বিগত সময়ে ভুয়া তথ্য দিয়ে একটি পরিবার চার থেকে পাঁচটি কার্ড নিয়েছে। ওই সময় দলীয় কর্মী-সমর্থক, কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতাদের আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। ফলে প্রকৃত দরিদ্ররা টিসিবির কার্ড প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এ অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া স্মার্টকার্ডের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য বিতরণ কার্যক্রম অত্যন্ত যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত।

মহানগরীর চাঁদমারি এলাকার ডিলার মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমার অধীনে ২ হাজার ১০০ উপকারভোগী কার্ডধারী ছিলেন। এর মধ্য থেকে ১ হাজার ৬০০টি কার্ড বাতিল হয়েছে। চলতি মাসে স্মার্টকার্ডের অধীনে মাত্র ৬০০ উপকারভোগী পণ্য বিতরণের অনুমোদন পাওয়া গেছে।’

নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের সচিব আরাফাত জানিয়েছেন, ওই ওয়ার্ডে তিন শতাধিক কার্ড ছিল। যাচাই-বাছাইয়ে বেশির ভাগ কার্ড বাতিল করা হয়েছে। এ অস্থায় সেখানে নতুন করে কিছু কার্ড দেওয়া হয়েছে। তবে তা বিতরণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি। এদিকে কার্ড বাতিলের খবরে তার সঙ্গে অনেকেই যোগাযোগ করছেন। বাতিল হওয়াদের কার্ড পুনরায় পাওয়ার উপায় জানতে চেয়েছেন।

ভারত থেকে তৃতীয় দফায় ১০৫ টন চাল আমদানি