স্পোর্টস ডেস্ক: রানে ফিরলেন বাবর আজম। খেললেন ৫৩ বলে ১১ বাউন্ডারিতে ৭৯ রানের অনবদ্য ইনিংস।
তার অধিনায়কচিত অপরাজিত ইনিংসে ভর করে ত্রিদেশীয় সিরিজে টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে পাকিস্তান।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আজ শনিবার নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয় পাকিস্তান। ক্রাইস্টচার্চে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন কেন উইলিয়ামসন।
তবে বড় টার্গেটের আশায় প্রথমে ব্যাট নিয়ে সফল হননি কিউই অধিনায়ক। পাকিস্তানি বোলারদের তোপে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৭ রান করে নিউজিল্যান্ড।
১৪৮ রানের তাড়ায় ১০ বল ও ৬ উইকেট হাতে রেখেই জিতল বাবর আজমের দল।
শুরুতেই জোড়া ধাক্কা লাগে পাকিস্তান শিবিরে। দ্রুতই দুই উইকেট পড়ে যায় তাদের।
আজ বাবর রান পেলেও ফর্মের তুঙ্গে থাকা রিজওয়ানের ব্যাট হাসেনি। টিম সাউদির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ৪ রানে ফেরেন এ উইকেটকিপার-ব্যাটার।
ওয়ানডাউনে শান মাসুম নেমে মাত্র ২ বল টেকেন। থিকনারের বলে উইকেটকিপার কনওয়ের হাতে কট বিহাইন্ড হন। রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি।
৩৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান। কিন্তু সেই চাপ ভালোভাবেই সামলে নেন বাবর।
শাদাব খান, মোহাম্মদ নওয়াজ ও হায়দার আলির সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেন পাকিস্তান অধিনায়ক।
অধিনায়ককে যোগ্য সঙ্গ দেন অলরাউন্ডার শাদাব খান। খেলেছেন ৩৪ রানের ঝলমলে ইনিংস। ১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে থিকনারের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন শাদাব। ৬২ রানের জুটি ভাঙে।
এরপর বাবরের সঙ্গে জুটি বাধেন মোহাম্মদ নওয়াজ। ১৬তম ওভারের শেষ বলে নওয়াজকে সাজঘরে ফেরান পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। ১৯ বলে ১৬ করে ফেরেন তিনি।
এ সময় পাকিস্তানের স্কোর দাঁড়ায় ১৭ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১২৪ রান।
অর্থাৎ জয়ের জন্য ১৮ বলে প্রয়োজন পড়ে ২৪ রানের। ক্রিজে নেমেই একটি করে বাউন্ডারি ও ছক্কা মারেন হায়দার আলি। বাবরও বাউন্ডারি হাঁকান।
১৮তম ওভারেই ২১ রান তুলে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে যায় পাকিস্তান। ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে জয়সূচক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটান বাবর।
হায়দার আলি অপরাজিত থাকেন ২ বলে ১০ রান করে।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে নেমে পাওয়ার প্লেতেও বেশি রান তুলতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। প্রথম ৬ ওভারে এক উইকেট হারিয়ে ৪২ রান তুলে কিউইরা।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই কিউই শিবিরে আঘাত হানে পাকিস্তান। নিজের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে ওপেনার ফিন এলেনকে কট এন্ড বোল্ড করেন পেসার মোহাম্মদ ওয়াসিম। ফিন এলেন সাজঘরে ফেরেন ৮ বলে ১৩ রান করে।
এরপর ধরে খেলে দলকে ১০ওভার পর্যন্ত টেনে নিয়ে যান ডেভন কনওয়ে ও উইলিয়ামসন জুটি। ১০তম ওভারের শেষ বলে কনওয়েকে (৩৬) সাজঘরে ফেরান নওয়াজ। এতে ৬১ রানের জুটি ভাঙে। এক ওভার পরেই নওয়াজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনও। স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান তিনি।
আউট হওয়ার আগে অধিনায়কের ব্যাট ছুঁয়ে আসে ৩০ বলে ৩১ রান। এই ৩১ রানে মাত্র একটি বাউন্ডারি হাঁকাতে পেরেছেন উইলিয়ামসন।
এরপর ১৭ ওভার পর্যন্ত খেলে গ্লেন ফিলিপ ও মার্ক ক্যাম্পবেল জুটি গড়েন ৫৩ রানের। ১৮তম ওভারে শেহনেওয়াজ দাহনির প্রথম ডেলিভারিতে আসিফ আলির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন গ্লেন। তার ব্যাট ছুঁয়ে আসে ১৭ বলে ১৮ রান।
রানের গতি বাঁড়াতে গিয়ে ১৯তম ওভারে পর পর ২ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। ওভারের দ্বিতীয় বলে ৫ রানে ব্যাট করা জেমস নিশামের স্টাম্প উড়িয়ে দেন পেসার হারিস রউফ।
পরের বলেই মিচেল ব্রাসওয়েলকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন হারিস। রানের খাতা না খুলেই প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটেন ব্রাসওয়েল।
টেলএন্ডার ইশ শোধি এসে পয়েন্টে বল ঠেলে দিয়ে হারিস রউফের হ্যাটট্রিক ঠেকান। স্ট্রাইক পেয়ে রানে থাকা ক্যাম্পবেল বাউন্ডারি হাঁকান। কিন্তু পরের বলেই লং অন দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ওয়াসিমের ক্যাচে পরিণত হন ক্যাম্পবেল। ৩ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কার মারে ১৬ বলে ৩২ রানের ইনিংসের সমাপ্তি হয় তার।
১৯তম ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৫ রান যোগ করতে পারে নিউজিল্যান্ড। শেষ ওভারেও সেই একই দশা। মাত্র ৫ রানই যোগ হয় মোট সংগ্রহে। বিনিময়ে ওয়াসিমকে নিজের উইকেট উপহার দেন ইশ শোধি।
অর্থাৎ পাকিস্তানি বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি নিউজিল্যান্ডের টেলএন্ডাররা। শেষ ৪ ওভারে ২২ রান করতেই ৫ উইকেট হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড।
পাকিস্তানের হয়ে দুর্দান্ত বল করেছেন হারিস রউফ। ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে তিনি শিকার করেছেন ৩ উইকেট। একটি উইকেট কম পেলেও মাত্র ২০ রান দিয়েছেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। ৪৪ রান দিয়ে ওয়াসিমের সমান দুটি উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ নওয়াজ। শাহনেওয়াজ দাহনি পেয়েছেন একটি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।