বাবার মৃত্যুর ক্ষতিপুরণের টাকার চুক্তি করেই লাশ দাহ করল ছেলে

জুমবাংলা ডেস্ক : ময়সনসিংহের নান্দাইলে মোটরসাইকেল চাপায় সুশীল চন্দ্র বিশ্বাস (৭০) নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়। বাবার মৃত্যুর পর ২ লাখ ৮০ হাজার মিমাংসা করেই বাবার লাশ দাহ করেন ছেলে রিপন চন্দ্র বিশ্বাস। নিহত সুশীল চন্দ্র বিশ্বাস উপজেলার বীর বেতাগৈর ইউনিয়নের আতারামপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মধুপুর বাজারে মিষ্টির ব্যবসা করতেন।

শনিবার (৩ অক্টোবর) সকালে উপজেলার বীর বেতাগৈর ইউনিয়নের আতারামপুর গ্রামে। এর আগে শুক্রবার (২ অক্টোবর) সন্ধার পর সুশীল চন্দ্র বিশ্বাস মিষ্টির দোকান থেকে ফেরার পথে মোটরসাইকেল চাপায় গুরুতর আহত হয়।

স্থানীয় সুত্র জানায়, প্রতিদিনের মতো দোকানে কাজ সেরে গত শুক্রবার সন্ধার পর অটো রিকশা যোগে বাড়ি ফিরছিলেন সুশীল চন্দ্র বিশ্বাস। পথে বাগানবাড়ি নামক স্থানে আসতেই বিপরিত দিক থেকে আসা পাশের গ্রামের রায়হানের মোটরসাইকের চাপায় গুরুতর আহত হয়। এ সময় গুরুতর আহত সুশীল চন্দ্র বিশ্বাসকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করেন।

কিন্তু পরিবারের লোকজন ঢাকায় না নিয়ে বাড়িতে এনে চিকিৎসার পরিকল্পনা করে। এর মধ্যে আজ শনিবার (৩ অক্টোবর) সকালে নিজ বাড়িতেই মারা যান। এদিকে সুশীল চন্দ্র বিশ্বাসের মৃত্যু নিয়ে বির্তকের সৃষ্টি হলে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান নান্দাইল থানার পুলিশ। কিন্তু এলাকার এক সালিশে ঘটনাটি নিয়ে রফা হয়ে গেলে পুলিশ থানায় চলে এলেও সাথে নিয়ে আসে নিহতের ছেলে রিপন বিশ্বাসকে। পরে রিপন বিশ্বাস তার বাবার মৃত্যুর বিচার চাইনা মর্মে মুচলেখা দিয়ে লাশ নিয়ে আসে।

এ বিষয়ে ছেলে রিপন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, স্থানীয়রা সালিসে বাবার মৃত্যুর বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছেন। তবে কত টাকার বিনিময়ে মিসাংসা সেটা আমার জানা নাই।

এ বিষয়ে সালিসে সভাপতিত্ব করা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন সালিসের কথা স্বীকার করে বলেন, এটা নিয়ে কিছু করার দরকার নেই। ফয়সালা করে দিয়েছি। কত টাকা রফা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাকার অংকটা আমার জানা নাই। তবে, স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কাদির ২ লাখ ৮০ টাকার কথা স্বীকার করে বলেন, টাকা আগামি শনিবারের মধ্যে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নান্দাইল থানার ওসি (তদন্ত) আবুল হাসেম জানান, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দেয়নি। সেহেতু আমাদের কিছু করার নেই। এ অবস্থায় লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ সৎকারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।