বার্ধক্য আর কেবল বয়স বাড়ার সাথে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া নয়—এটি শরীরজুড়ে রক্তের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, এমন তথ্য উঠে এসেছে দক্ষিণ কোরিয়ার কোরিয়া ইউনিভার্সিটি কলেজ অব মেডিসিন-এর এক সাম্প্রতিক গবেষণায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে থাকা একটি বিশেষ অণু HMGB1 রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে এক অঙ্গ থেকে আরেক অঙ্গে বার্ধক্যের সংকেত পাঠায়। গবেষকরা এই অণুকে বর্ণনা করেছেন ‘জৈবিক বার্তাবাহক’ হিসেবে।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের কিছু কোষ senescent হয়ে পড়ে—অর্থাৎ, তারা আর বিভাজিত হয় না এবং ক্ষতিকর রাসায়নিক নিঃসরণ করে, যেগুলোকে বলা হয় SASP (Senescence-Associated Secretory Phenotype)। এই রাসায়নিক পদার্থ আশেপাশের সুস্থ কোষকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। এতদিন ধারণা করা হতো এই ক্ষতি শুধু কাছাকাছি কোষে সীমিত থাকে। কিন্তু এই গবেষণায় দেখা গেছে, তা শরীরের দূরবর্তী অঙ্গেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
গবেষকরা একটি পরিবর্তিত অণু ReHMGB1 শনাক্ত করেছেন, যেটি রক্তের মাধ্যমে ভ্রমণ করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে বার্ধক্যের প্রভাব ফেলতে পারে। এই অণু কোষে বার্ধক্যের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে এবং পেশীর কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
তবে আশার খবর হলো, গবেষণায় দেখা গেছে—যখন HMGB1 বিরোধী অ্যান্টিবডি ব্যবহার করা হয়, তখন শরীরের কোষে নাটকীয় পরিবর্তন আসে। ইঁদুরের পেশি দ্রুত সারে, কোষের ক্ষতি কমে এবং সামগ্রিক শারীরিক কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়।
গবেষণার প্রধান বিজ্ঞানী অক হি জিওন মনে করেন, এই আবিষ্কার বার্ধক্য প্রতিরোধী চিকিৎসার ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। তাঁর ভাষায়, “HMGB1 যদি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, তাহলে ভবিষ্যতে মানুষের শরীর দীর্ঘদিন ‘জৈবিকভাবে তরুণ’ রাখা সম্ভব হতে পারে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।