জুমবাংলা ডেস্ক : বিএনপি নিজেরা চুরি, দুর্নীতি করে এখন লাগাতার মিথ্যাচার করে দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি।
তিনি বলেন, বিএনপি গোটা দলটাই দুর্নীতিবাজ। দুর্নীতির কারণে মানুষ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, আজ তারা আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। অথচ আজ তারাই দুর্নীতির কথা বলে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন সেমিনার কক্ষ ‘মানবসম্পদ উন্নয়নের উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি), ঢাকা কেন্দ্র।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দেশের মানুষকে অসৎ, নীতি-নৈতিকতাহীন বানানোর কাজ শুরু করেছিলেন। ছাত্রদের হাতে অস্ত্র, অর্থ তুলে দিয়েছিলেন। স্বেচ্ছায় খাল কাটা কর্মসূচি শুরু করেছিলেন। ১৯৮১ সালে উনি মারা যাওয়ার পর সরকারি প্রতিবেদন বেরিয়েছিলো। সেই প্রতিবেদনে দেখা যায় সরকার কাজটি করলে ব্যয় হতো ৫ কোটি টাকা। তিনি খাল কাটা কর্মসূচি করায় খরচ হয়েছে ৮৫ কোটি টাকা। সেই সময়ে থেকে মানুষকে নীতি-নৈতিকতাহীন করা শুরু হয়েছিলো।
বর্তমান সরকার সব চোরের দল- এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ভূতের মুখে রাম নাম। তাদের নেতা তারেক রহমান হাওয়া ভবন বানিয়ে কমিশন বাণিজ্য করেছে। তাকে দুর্নীতিবাজ হিসেবে কানাডা, সিঙ্গাপুরের আদালত রায় দিয়েছে। তারা এতোটাই দুর্নীতিবাজ; দুর্নীতিতে অভিযুক্তরা দলে পদ পাবে না তাই গঠনতন্ত্র থেকে সেই ধারা তুলে দিয়েছে। আজ সেই দলের নেতারা দুর্নীতি, চুরির কথা বলে।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তারা আজ সত্য স্বীকার করতে চায় না। দেশের উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা আন্তজাতিকভাবে স্বীকৃত। বিশ্বের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আমরা ২০৩১ সালে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার ধারায় আছি। আর বিএনপি নেতারা প্রতিদিন মিথ্যাচার করছে। গত ১২ টা বাজেটের পর তারা বলেছে এটা গরিব মারার বাজেট। বাংলাদেশের উন্ময়ন অনেক দেশের কাছে তাক লাগানোর মতো। তারা এটাও স্বীকার করতে চায় না।
শেখ হাসিনা দক্ষ মানবসম্পদে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, ডেভেলপমেন্ট সাস্টেইনেবেল করতে হলে দক্ষ মানবসম্পদ গুরুত্বপূর্ণ। জেলা পর্যায়ে কারিগরি স্কুল করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত করা হচ্ছে।শিক্ষার্থীরা দক্ষ মানবসম্পদ হলে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাজতে পারবে এবং দেশের বাইরে থেকে বৈদেশিক মুদা অর্জন করতে পারবে।
তিনি বলেন, বিদেশে বাংলাদেশের লেবাররা ৭০০ রিয়াল পায় অন্যদিকে ভারতীয়রা পায় ১৬০০ রিয়াল। কারণ তারা দক্ষ, প্রশিক্ষিত স্কিল লেবার এবং তাদের কমিউনিকেশন স্কিল ভালো। বিদেশে বেশি বেতন পেতে হলে দক্ষতার বিকল্প নেই। আর এজন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে।
সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট এর জন্য দক্ষ মানবসম্পদ একমাত্র মূলমন্ত্র নয় এমনটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, নীতি-নৈতিকতা, সততা, দেশপ্রেমের মূল্যবোধ না থাকলে আউটপুট আসবে না। বর্তমান বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা সততা, নীতি-নৈতিকতা না থাকা। যতক্ষন আমরা নীতি-নৈতিকতা, সততায় ডেভেলপ করতে না পারবো না ততক্ষণ সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট হবে না।
হানিফ বলেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনা একজনই। তিনি তার শ্রম, বিচক্ষণতা এবং রাজনৈতিক উচ্চতা দিয়ে দেশকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি রাষ্ট্রক্ষমতায় আছেন, তার নেতৃত্ব থাকায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলেছিলেন, আজ সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবতা। তিনি ১৪ বছরে যোগাযোগ, রেল, বিদ্যুৎ কৃষি, পাওয়ার, শিক্ষাসহ একেকটি খাতকে এক অনন্য জায়গায় নিয়ে গেছেন।
আমরা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিল্প বিপ্লবে শামিল হতে পারি নি। তবে আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে শেখ হাসিনা ও তার সুযোগ্যপুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে অন্য দেশের চেয়ে এগিয়ে আছি। দেশের ডেভেলপমেন্টকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চলমান সরকার থাকা দরকার। ২০২৪ সালের নির্বাচনে যদি বঙ্গবন্ধুকন্যাকে চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত করতে পারি তাহলে ২০৪১ সালের আগে আমরা ডেল্টা প্ল্যান এ্যাচিভ করতে পারবো।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েট উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী আবদুল জব্বার খান। এসময় তিনি ১৯৭২ সালের সাথে বর্তমান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ও মানবসম্পদ নিয়ে তুলনামূলক আলোচন করেন। তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের মানুষর মাথাপিছু আয় ছিলো ৯৪ মার্কিন ডলার আর বর্তমান মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ২৭০০ ডলার। ৮ বিলিয়ন জিডিপির বাংলাদেশে বর্তমানে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের দেশ। দারিদ্র, চরম দারিদ্রের সংখ্যা কমেছে। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে।
এছাড়াও সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, আইইবি ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. নুরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শাহাদাত হোসেন শীবলু। সভাপতিত্ব করেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ ঢাকা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোল্লা মো. আবুল হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী কাজী খায়রুল বাশার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।