ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন। তবে ঘটনাটি ‘অনিচ্ছাকৃত’ বলে দাবি করেছে বিএসএফ। বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আচমকা ট্রিগারে চাপ পড়ে গুলি ছুটে যায় এবং সেই গুলিতেই নিহত হন ওই যুবক।
নিহত ব্যক্তির নাম শহিদুল ইসলাম (৩৭)। তিনি বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার গয়েশপুর গ্রামের বাসিন্দা।
ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণগঞ্জের মাটিয়ারী সীমান্ত চৌকি এলাকার কাছে। পরদিন রবিবার (৩০ নভেম্বর) বিএসএফ এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে ঘটনাটিকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ উল্লেখ করে জানায়—
আচমকা বন্দুকের ট্রিগারে চাপ পড়ে গুলি বের হয়ে যায়। এতে অনিচ্ছাকৃতভাবে এক বাংলাদেশি নাগরিক প্রাণ হারান।
ঘটনার পর সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) এ বিষয়ে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
বিবৃতিতে দাবি করা হয়, শনিবার বিকেল আনুমানিক ৩টা ৫৫ মিনিট নাগাদ বিএসএফের ৩২ নম্বর ব্যাটালিয়নের এক সদস্য সীমান্ত বেড়ার কাছে ৬-৭ জন ভারতীয় চোরাকারবারিকে প্লাস্টিকের বান্ডিল বহন করতে দেখেন। তারা বান্ডিলগুলো কাঁটাতারের বেড়ার ওপর দিয়ে বাংলাদেশের দিকে ছুড়ে মারছিল। অন্যপ্রান্তে কয়েকজন বাংলাদেশি সেগুলো সংগ্রহ করছিলেন।
এসময় বিএসএফের এক সদস্য তাদের থামতে বলেন এবং শূন্যে এক রাউন্ড গুলি ছোড়েন। কিন্তু তাতেও চোরাকারবারিরা ভয় না পেয়ে দ্রুত তাদের কাজ শেষ করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। এরপর তাদের আটকানোর জন্য বিএসএফ সদস্য চোরাকারবারিদের দিকে এগিয়ে গেলে তারা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে।
বিএসএফের দাবি, তখন সেই জওয়ানের সঙ্গে চোরাকারবারিদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এসময় হঠাৎ বন্দুকের ট্রিগারে চাপ পড়ে এবং অস্ত্র থেকে নিক্ষেপিত গুলি গিয়ে লাগে এক বাংলাদেশির শরীরে। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে সেই ব্যক্তি। গুলির শব্দ এবং সহযোগীর পড়ে যাওয়া দেখে বাকি সবাই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
ভারতীয় বাহিনী আরও দাবি করেছে, গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে ৫০ থেকে ৬০ মিটার টেনে নিয়ে যাওয়ার পর এক জলমগ্ন জায়গায় ফেলে রেখে যায় ভারতীয় চোরাকারবারিরা। পরে উদ্ধার করে কৃষ্ণগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পরবর্তীতে ঘটনাস্থল থেকে চারটি ধারালো অস্ত্র, ৯৬ বোতল ফেনসিডিলসহ দুই বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করে বিএসএফ। উদ্ধারকৃত মালামাল এবং মৃত ব্যক্তিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের পুলিশ মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনায় একটি এফআইআরও দায়ের করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



