জুমবাংলা ডেস্ক : ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে ১৩ বছর বয়সী বাংলাদেশি কিশোরী স্বর্ণা দাস নিহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভে ফুসছে নেটাগরকিরা। বিএসএফের একের পর এক বর্বরতার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে পালানো স্বৈরাচারিণী শেখ হাসিনাকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের একের পর এক ষড়যন্ত্রের মধ্যে নারকীয় এই হত্যাকাণ্ড যেন বাংলাদেশিদের ক্ষোভ আরও বহুগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। বিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন নেটিজেনরা।
এদিকে, স্বর্ণা দাস নিহত হওয়ার ঘটনায় ইতোমধ্যে ভারত সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে বাংলাদেশ এ ধরনের নির্মম ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় এবং এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে।
গত ১ সেপ্টেম্বর কুলাউড়া উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের লালারচক সীমান্তের পাশে জলাশয়ে পৌঁছামাত্র হঠাৎ বিএসএফকে দেখে স্বর্ণা। এসময় সে আতংকিত হয়ে অনুনয়-বিনয় করে বলে আমাদের মেরোনা আইনের আশ্রয়ে নিয়ে নাও। বাংলায় বলা কথাগুলোর প্রতি উত্তরের বদলে বিএসএফ এর বুলেটে বুক ঝাঁজরা হয়ে যায় স্কুল ছাত্রী স্বর্ণার।
বিএসএফ’র রাইফেল তাক করানো দেখে স্বর্ণা ভয়ে কাঁটা তার থেকে ঘুরে বাংলাদেশের দিকে দৌড় দেয়। ঠিক তখনই পেছন থেকে বিএসএফ’র ছুড়া গুলি তার পিটের পেছন দিকে ঢুকে বুকের সামনের ডানপাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। বাঁচার জন্য মা সঞ্জিতা রাতের আধাঁরে গুলিবিদ্ধ মেয়ের হাত ধরে টেনে কিছু জায়গা নিয়ে আসেন,তখনই স্বর্ণা বলে, ‘মা হাতটা ছেড়ে দাও, আমি আর বাঁচব না’। তোমার প্রাণ রক্ষা করো।
কি নির্মম পরিহাস চোখের সামনে কলিজার টুকরো আদরের মেয়েকে কাঁটাতারের পাশে জলাশয়ে ফেলে আসতে বাধ্য হন।
সীমান্ত হত্যার এ ধরনের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অযৌক্তিক বলে তাদের জানায় বাংলাদেশ সরকার। এ ধরনের কর্মকাণ্ড জয়েন্ট ইন্দো-বাংলাদেশ গাইডলাইনস ফর বর্ডার অথোরিটিস ১৯৭৫ এর বিধানের লঙ্ঘন।
বাংলাদেশ সরকার এ ধরনের জঘন্য ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধ করে সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের তদন্তের মাধ্যমে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
ফেসবুকে সামসাদ ফেরদৌসী লিখেছেন, ফেলানী থেকে স্বর্ণা দাস। কেউ অবৈধ ভাবে কোনো দেশে প্রবেশ করলে তাদেরকে গ্রেফতার করতে পারে কিন্তু পাখির মতন মানুষ মারা কোনো সভ্য দেশ করতে পারে না।এর তীব্র নিন্দা জানাই। তবে অবাক লাগছে বি এস এফ এর হাতে স্বর্ণাদাসের হত্যা নিয়ে এ দেশের হিন্দু সংগঠন গুলোর তেমন তীব্র প্রতিবাদ চোখে পড়ছে না।
বাবুল আক্তার সাদিক লিখেছেন, স্বর্ণা দাস মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ার বাসিন্দা। অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী। তার শিক্ষকেরা বললো মেধাবী এবং খুবই শান্ত প্রকৃতির মেয়ে।ওপার বাংলার উনারা কিছু দিন আগে এত লাফালাফি করলেন আমার দেশের কিছু মানুষও নাচলেন এই বলে যে, আমাদের দেশে সংখ্যালুঘুরা নির্যাতিত হচ্ছে,বাড়িঘর সব ভেংগে দিলো।
এখন কিছু কন না কেন?? আপনাদের কাছে এরা সংখ্যা লুঘু হতে পারে কিন্তু আমাদের কাছে তা নই আমাদের মতই তারা বাংলাদেশের নাগরিক। ধিক্কার জানাই বারবার ঘটে যাওয়া কাটা তারের এই হত্যাজজ্ঞের ঘটনায়।
অপু আরশাদ লিখেছেন, স্বাধীনতার পর থেকে শুরু হয়ে সর্বশেষ সীমান্ত হত্যার শিকার স্বর্ণা দাস। মেধাবী ছাত্রী। এই বাচ্চা মেয়েটাও কি সীমান্ত চোরাকারবারি? আগের সিন বাঘে খেয়েছে এটা ভারতকে বুঝতে হবে। সরকারকেও ধন্যবাদ আগের মত বিচ্ছিন্ন ঘটনা না বলে কড়া প্রতিবাদ জানানোর জন্য। প্রত্যেক দেশ থেকে লাথি খেয়ে খেয়ে বের হওয়ার পরও এদের ছেচড়ামি কমেনি।
ওয়াহিদ ইবনে রেজা লিখেছেন, ফেলানী থেকে স্বর্ণা দাস… পাল্টায়নি কিছুই! ফেলানীকে হত্যা করার পর ব্যক্তিগতভাবে আমি ভারতীয় কন্টেন্ট দেখা বন্ধ করে দেই! আমি ক্ষুদ্র মানুষ, তাই এটাই ছিল আমার ক্ষুদ্র প্রতিবাদ! এত বছরে ১-২টা বাদে ভারতের কন্টেন্ট দেখিনি! খুব ট্রেন্ডিগুলি থেকেও মুখ সরিয়ে রেখেছি প্রানপনে! এছাড়া প্রতিবাদ করার আর কোন ভাষা আমার জানা নেই!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।