জুমবাংলা ডেস্ক : ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কে আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত ও প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মো. খায়রুল বাশার বাহার এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে রুমন আলী লস্কর নামের একজন শিক্ষার্থী এক লিখিত বক্তব্যে বলেন, বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য কানাডা আমেরিকা অস্ট্রেলিয়া এবং পৃথিবীর উন্নত দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রলোভন দেখিয়ে আমাদের থেকে টাকা গ্রহণ করে। কলেজে সেশন ফি বাবদ যে টাকাগুলো দেওয়া হয় তা বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে উক্ত কলেজের সেশন ফি প্রদান করতে হয়। কিন্তু সেটি তারা না করে মানি লন্ডারিং আইন বহির্ভূত কাজ করে। সেই টাকাগুলো আমাদের থেকে নিয়ে তারা আত্মসাৎ করেছে। মূলত সেই কলেজের টাকা গুলো স্টুডেন্ট একাউন্ট করে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠানোর নিয়ম। কিন্তু সেটি তারা না করে বিদেশী কলেজ গুলোর ভুয়া অফার লেটার তৈরি করে টাকা না পাঠিয়ে আমাদের সাথে প্রতারণা করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের মতো ভুক্তভোগীর সংখ্যা প্রায় শহস্রাধিক ও প্রত্যেকের পাওনা টাকার পরিমান গড়ে ২০ লাখ টাকা। বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের দেওয়া লিস্ট অনুযায়ী ৮৫০ এর অধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। আমাদের ধারনা, এক হাজারের অধিক শিক্ষার্থীর মোট টাকা ২০০ কোটি তারা আত্বসাৎ করেছে।
তিনি আরও বলেন, বিগত সরকারের আমলে উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা ফেরত চাইলে টালবাহানা করে সময়ক্ষেপণ করে। যার ফলশ্রুতিতে অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীর শিক্ষাজীবন বিপর্যস্ত হয়। শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন ভেঙ্গে যায় এবং আর্থিকভাবে প্রতিটি পরিবার অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পরবর্তীতে অনেক দেন-দরবার করার পর পাওনা টাকার বিপরীতে বিএসবি কর্তৃপক্ষ অনেক পাওনাদারকে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান মো. খাইরুল বাশার বাহার স্বাক্ষরিত চেক প্রদান করে যা ব্যাংক প্রত্যাখাত করেছে। টাকা উদ্ধারের জন্য থানায় লিখিত অভিযোগ করা হলে এবং পরে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে গেলে বিএসবির চেয়ারম্যান খাইরুল বাশারের গুন্ডাবাহিনী আক্রমন চালায়। এছাড়া পাওনাদারদের ক্রমাগত টাকা না দেবার হুমকি দিয়ে আসছে।
এই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, গত আগস্টের ২৭ তারিখে বিএসবি চেয়ারম্যান বাশার ও পাওনাদারদের এক প্রতিনিধি দলের সাথে ষ্ট্যাম্প পেপারে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যে, সমুদয় পাওনা টাকা ৩ কিস্তিতে যথাক্রমে ২৩ সেপ্টেম্বর, ২২ অক্টোবর ও ২৫ নভেম্বরে সকলকে পরিশোধ করবে। কিন্তু প্রথম কিস্তি পরিশোধের দিন (২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪) অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হয় ও তার গুন্ডাবাহিনী দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ও সেখানে অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়। যা গুলশান থানা প্রশাসন অবগত আছেন।
তিনি বলেন, আমরা নিরুপায় হয়ে টাকা উদ্ধার ও নিরাপত্তার জন্য অনেকে জিডি, প্রতারণা ও চেক জালিয়াতির মামলা দায়ের করেছি এবং বিভিন্ন নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। বর্তমানে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের কার্যক্রম আনুমানিক ২০ থেকে ২৫ দিন ধরে বন্ধ করে রেখেছে ও অদ্যাবধি বন্ধ আছে। একই সঙ্গে তাদের সকল মোবাইল নম্বর বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করছে না। এবং চেয়ারম্যান মো. খাইরুল বাসার অজ্ঞাতস্থানে আত্মগোপনে রয়েছেন।
বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান খায়রুল বাশার বাহার ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানিয়ে রুমন আলী লস্কর বলেন, আত্মসাৎকৃত অর্থ উদ্ধার, সেইসাথে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক এবং চেয়ারম্যান মো. খাইরুল বাশার বাহার ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে এসময় প্রায় শতাধিক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।