জুমবাংলা ডেস্ক : ‘আসামির দুই হাত বেঁধে ঝুলিয়ে পেটানোর প্রমাণ তার দুই হাতের কবজির নিচের কালশিরা দাগ থেকে প্রমাণিত হয়। আসামি রিমান্ডের ভয়ে এই জবানবন্দি দিয়েছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়।’- চাঁদপুরের মতলবের একটি হত্যা মামলায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে এক আসামির দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব লেখা রয়েছে। এর পরেও আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি কেন ও কীভাবে রেকর্ড করা হয়েছে, তার লিখিত ব্যাখ্যা দিতে সংশ্নিষ্ট বিচারককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এই আদেশ দেন। এক মাসের মধ্যে চাঁদপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. নুরে আলমকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
জবানবন্দির এক পর্যায়ে ম্যাজিস্ট্রেট উল্লেখ করেছেন, আসামি একপর্যায়ে বলেছে, পুলিশ বলেছে, দোষ স্বীকার না করলে আবার রিমান্ডে নিয়ে পেটাবে। যতবার দোষ স্বীকার করব না, ততবার রিমান্ডে নিয়ে মারবে। এ জন্য আমি (আসামি) দোষ স্বীকার করেছি। আসামির দোষ স্বীকার স্বেচ্ছাপ্রণোদিত নয় বলে ওই স্মারকে উল্লেখ রয়েছে।
রোববার ওই হত্যা মামলায় আসামি মো. ফরহাদ হোসেন ওরফে খলুর জামিন আবেদনের শুনানিতে বিষয়টি আদালতের নজরে আনে আসামিপক্ষ। পরে শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করে মো. ফরহাদকে অন্তবর্তীকালীন জামিন দেন। নিম্ন আদালতে বিফল হয়ে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করে ফরহাদ, যার ওপর রোববার শুনানি হয়। আদালতে ফরহাদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রিমি নাহরীন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, আসামি ফরহাদ হোসেনের বয়স নিরূপণ করতে হাইকোর্ট বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির কলামে ফরহাদের বয়স ১৬ বছর লেখা আছে। ফরহাদ বলেছে, সে দশম শ্রেণিতে পড়ে। ওই মামলার অভিযোগপত্রে ফরহাদের বয়স ১৯ বছর লেখা রয়েছে। আইনের দৃষ্টিতে ওই জবানবন্দি কোনো জবানবন্দি নয়; কেননা, নির্যাতনের কথা বলা আছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, চাঁদপুরের দক্ষিণ মতলবের কাজিয়ারা গ্রামের মো. সোহেল রানাকে (১৭) হত্যার অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৯ আগস্ট মতলব দক্ষিণ থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহতের ভাই। সোহেল মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ছিলেন। এই মামলায় ফরহাদসহ তিনজনকে আটক করা হয়। তিনজনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ফরহাদের জবানবন্দি রেকর্ড (লিপিবদ্ধ) করেন চাঁদপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। এই মামলায় ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। মামলাটি এখন অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।