রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, বাংলাদেশের সাবেক বিতর্কিত আলোচিত এবং সমালোচিত প্রধান বিচারপতি জাস্টিস খাইরুল হক। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পিঠমোড়া করে বেঁধে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে। অন্যান্য আসামিদের মতো মাথায় হেলমেট পরিয়ে, কঠোর নিরাপত্তায় তাকে ঢাকা সিএমএম কোর্টে হাজির করা হয়েছে।
তিনি যখন কোর্টে হাজির হচ্ছিলেন তখন বিক্ষুব্ধ জনতা অন্য সময়ের মতো হলে মব তৈরি করত। এবং বিচারপতি মানিকের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, যেভাবে তাকে ফ্লাইং কিক মারা হয়েছে, কিল ঘুষি মারা হয়েছে, ডিম মারা হয়েছে এবং বলা হয়ে থাকে যে তাকে লাথি মেরে তার অন্ডকোষ ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ঠিক এই ধরনের যে ক্রোধ এবং ক্ষোভ তা বহুগুণে প্রদর্শিত হতো জাস্টিস খায়রুল হকের ক্ষেত্রে।
কারণ হলো তার প্রতি গণরোষ বিচারপতি মানিকের চাইতে অনেক অনেক বেশি। বিষয়টি নিয়ে আমি একটু দেরিতে ভিডিও করেছি বা বলার চেষ্টা করছি। এর কারণ হলো, পুরো ঘটনার সঙ্গে অর্থাৎ বিচারপতি খাইরুল সাহেবকে আমি যেভাবে চিনি, এই রাজনৈতিক অঙ্গনে হয়তো উনাকে ওভাবে কেউ চেনেন না। এর কারণ তিনি আমার খুবই নিকট প্রতিবেশী।
আমার বাড়ি ধানমন্ডিতে নায়েম রোডে আর জাস্টিস খাইরুল হকের পৈত্রিক বাড়ি একেবারে পাশাপাশি। বহুদিন ধরে আমরা প্রতিবেশী। কিন্তু ২০১৪ সালের পর থেকে আমি আর তার দিকে ফিরে তাকাই না। তার সঙ্গে সালাম বিনিময় হয় না, কথা বিনিময় হয় না। এটা নিয়ে তার অনেক ক্ষোভ ছিল মনের মধ্যে।
কারণ আমরা একই মসজিদে নামাজ পড়ছি, লোকজনের আমাকে সালাম দিচ্ছে, কথাবার্তা বলছে। আর আমার এই জনসম্পৃক্ততার কারণে দেখা গেল যে সব মানুষ আমাকে কেন্দ্র করে সেখানে দাঁড়াতো একই মহল্লাতে লোকজন সব। তো উনি পাশ দিয়ে হেঁটে যেতেন মুরুব্বি মানুষ। তারপর সেই যে প্রধান বিচারপতি হওয়ার আগে, পাড়া মহল্লাতে তার যথেষ্ট সুনাম এবং সুখ্যাতি ছিল। এবং আসলে তিনি আমাদের মহল্লাবাসীর সঙ্গে বা আমাদের যে নায়েম রোডের বাসিন্দার সঙ্গে সবসময় তিনি আন্তরিক ছিলেন। আগের মতই উনি যখন বিচারপতি ছিলেন না প্র্যাকটিস করতেন তখনও যেমন ছিলেন, বিচারপতি হয়েছেন প্রধান বিচারপতি হয়েছেন, তারপর প্রধান বিচারপতি থেকে অবসর নেওয়ার পরে দুই দফাতে ঠিক প্রধান বিচারপতির পদমর্যাদায় নজিরবিহীনভাবে বাংলাদেশ আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
রনি বলেন, তো এই সুদীর্ঘ সময় বেশ কয়েকবার অসুস্থ হয়েছেন। মসজিদে যেতেন, মাথা নুয়ে নুয়ে তিনি চলতেন এবং আমরা সবসময় তাকে ব্যক্তিগত জীবনে ইন পার্সোনাল লাইফ একজন ভালো মানুষ ওয়েল বিহেভড বিনম্র এবং কোন আর্থিক দুর্নীতি বা কিলেংকারী অন্য কেউ বলতে পারে। কিন্তু আমাদের মহল্লাবাসী কখনো আমরা তাকে ওভাবে দেখিনি বা শুনিনি কখনো।
তার একটা পৈত্রিক বাড়ি আছে এবং সেখানে চারতলা বাড়িতে তিনি থাকেন। বাকি বাড়িগুলো ভাড়া দেন। তার স্ত্রী মারা গেছেন, ছেলেমেয়েরা সবাই দেশের বাইরে থাকে। পারিবারিক জীবনে অসংখ্য জটিলতা তার রয়েছে। অনেক বিয়োগাত্মক ঘটনা অশান্তির মত ঘটনা রয়েছে তার জীবনে। তো আমরা এই জিনিসগুলো প্রতিবেশী হিসেবে জানি। আর আমিও যেহেতু একটু বেশি জানব এই কারণে, যেহেতু আমরা বলতে গেলে একটা সময় একই দলের গুণমগ্ধ লোকজন ছিলাম। তো সেই কারণে তার এই যে পতনটা কাঙ্খিত ছিল আমার।
কিন্তু তারপর আমি কষ্ট পেয়েছি। এই পরিচয়ের সুবাদে এবং তার সঙ্গে জানাশোনার সুবাদে। এই গেল এক। দ্বিতীয়ত হলো যে তিনি যে কর্মটি করেছেন যে সংশোধনীটি দিয়েছেন। তত্ত্বাবধয়ক সরকার প্রথা বাতিল করে যে রায়টি দিয়েছেন । এই রায়টি নিয়ে যখন আলোচনা চলে, সমালোচনা চলে, এবং রায়টি যখন গৃহীত হয় তখন আমি সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মানে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়নে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। ফলে সেই ঘটনাটা নিয়ে পার্লামেন্টে কি হয়েছিল তারপরে সেটা কিভাবে আইনে পরিণত হলো এবং সেটা কিভাবে সরকার গঠন করল তা আমি চাক্ষুস দেখেছি।
তো এখানে একটা ব্যাপার হলো যে জাস্টিস খাইরুল হক যে রায়টা দিয়েছিলেন সেই রায়টি এখানে শর্তযুক্ত ছিল। এবং রায়টিতে তিনি, আপনি যদি পুরো রায়টা পড়েন ঠিক ওভাবে তার ত্রুটি ধরতে পারবেন না। তিনি যে কথাটি বলেছেন সেটি হলো তত্ত্বাবধায়ক যে ব্যবস্থাটি এটি সংবিধানের যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকার এবং তারা রাষ্ট্র চালাবে। সরকার পরিচালনা করবে। তো এই যে একটা ধারণা সকল স্তরে নির্বাচন তার সঙ্গে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার এটি কনফ্লিক্ট করে, কন্ট্রাডিক্ট করে, সাংঘর্ষিক এবং বিতর্ক তৈরি করে।
এ কথাটাই তিনি বলেছেন এবং তিনি বলেছেন এটি থাকা উচিত নয় বাতিল করা উচিত। তারপরে এটি যদি বাতিল করা হয় তবু দেশে এটি যেহেতু একটু জনপ্রিয় এবং একটা সিস্টেম তৈরি করার জন্য আরো দুইবারেরও দুইবার এটাকে যাকে বলা হয় এই পদ্ধতি চালু রাখা উচিত। এবং তিনি আরেকটা বিষয় বলেছিলেন যে এখানে আসলে প্রধান বিচারপতির নিয়োগ মানে সর্বশেষ প্রধান বিচারপতি হবেন এই জিনিসটিতেও তিনি যাকে বলা হয় ঐক্যমত পোষণ করেননি। এবং বিরূপ মন্তব্য করেছেন।
আপনি যদি এই পর্যন্ত ধরেন তাহলে আপনি বলেন তো এই কথার মধ্যে আপনি কতটা ত্রুটি খুঁজে পাবেন। কিন্তু কি হলো উনার এই রায়টি উনি শুধুমাত্র এরকম একটা রায় দিয়েছিলেন প্রাথমিক রায়। তো সেই রায়টিকে সরকার ওন করল। আওয়ামী লীগ সরকার ওন করে পুরোটাই তত্ত্বাবধয়ক সরকারটা বাতিল করে দিল। বাতিল করে দিয়ে রেফারেন্স দিল যেটা হাইকোর্টের বা সুপ্রিম কোর্টের সর্বোচ্চ রায়। ফুল বেঞ্চ রায়। কিন্তু তখন পর্যন্ত কিন্তু রায়টা লিখিত নেই। শুধুমাত্র একটা প্রাথমিকভাবে উনি যে একটা আছে না যে আদেশনামা প্রথমে একটা আদেশ দেয় এবং ডিটেইলস রায়টা পরে লেখা হয়। কিন্তু সেই রায়টা আর উনি উনার ইচ্ছামত পরে লিখতে পারেননি। সরকার যেহেতু সিদ্ধান্ত নিয়েছে তত্ত্বাবধয় সরকার বাতিল করবে, তো কাজেই পরবর্তীতে তিনি যে রায়টা লিখেছেন সেখানে তার যে ঐকান্তিক ইচ্ছা বা তিনি যেভাবে চাচ্ছিলেন তার চাইতে সরকারের ইচ্ছা, সরকারের তাপ, চাপ, ক্রোধ, লোভ, লালসা সবকিছু এমনভাবে যাকে বলা হয় সেতশচে হয়ে গিয়েছিল। একটার সঙ্গে আরেকটা মিশে যেটাকে বলা হয় স্থিতিস্থাপক চটচটে গলিত লাভার মত মানে আলাদা করা যায় না।
এখন ওটা কি উনি নিজের ইচ্ছায় করেছিলেন? নাকি সেই রায়টা তাকে বন্দুকের নল ঠেকিয়ে যেভাবে এস কে সিনহাকে দিয়ে অনেক কাজ করানো হয়েছে, ওভাবে তাকে দিয়ে রায় লেখা হয়েছিল। বা তিনি লিখতে চাননি তাকে কি চর থাপ্পড় দিয়ে এগুলো লিখতে বাধ্য করা হয়েছিল। নাকি তিনি শেখ হাসিনার অনুগত একজন দোসর হিসেবে শেখ হাসিনাকে একটি ফ্যাসিবাদী সিস্টেমের অধিকর্তি রূপে তাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তিনি এই কাজটি স্বেচ্ছায় করেছেন।
আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে দেখেছি যে তিনি যে আদেশটি দিয়েছেন সে আদেশের অনেক পরে অনেক পরে ধীরে সুস্তে তিনি যখন রায়টা লিখলেন এবং সেটি প্রকাশিত হলো তখন আমার কাছে মনে হয়েছে যে তিনি যেভাবে আদেশনামাটি দিয়েছিলেন বা প্রথম দিকে যেভাবে পত্রপত্রিকা এসেছিল। তার সঙ্গে তার যে রায় সে রায়ের অনেক অমিল রয়েছে। এক্ষেত্রে কি হয়েছে এটা উনার জবানবন্ধির মাধ্যমেই বোঝা যাবে। এই গেল এক দ্বিতীয়ত তিনি বিচার অঙ্গনে অনেকটা ফাটাকৃষ্ট মত কিছু কাজকর্ম করার চেষ্টা করেছেন। ওই সময়টিতে বিচার অঙ্গনের একটা ক্রেজ ছিল হাইকোর্ট জাস্টিস মানিক থেকে শুরু করে অন্যান্য যে সকল বিচারপতি ছিলেন তারা।
অনেকেই যারা পুরো রাষ্ট্রের অধিকর্তা মনে করতেন নিজেদেরকে তারা কেবলমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছাড়া তার পুত্র জয় এবং কন্যা পুতুলকে ছাড়া বাংলাদেশের কাউকে পাত্তা দিতেন না। তা সে স্পিকার হোক ডিসি হোক, এসপি হোক, সচিব হোক, পুলিশের আইজি হোক কিংবা সেনাবাহিনীর প্রধান হোক পুরো জুডিশিয়ারিকে এমন একটা জায়গাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এই জনাব খাইরুল হকের জামানাতে। সেখানে বিচারকরা যা ইচ্ছা তাই করতে পারতেন বলতে পারতেন এবং এই কাজ করতে গিয়ে তাদের অনেকের বিরুদ্ধে স্বৈরাচারী মনোভাবের পরিচয় প্রকাশ পেয়েছে। অবিচার এবং অনাচারের অভিযোগ আছে অনেকের বিরুদ্ধে। দুর্নীতির অভিযোগ আছে অনেকের বিরুদ্ধে। জুলুম এবং অত্যাচারের অভিযোগ আছে।
তারা যে কাজগুলো করেছেন এটি রীতিমত অত্যাচার। ফলে বিচার বিভাগের যে সৌম্যতা সৌন্দর্য তারপরে বিচার বিভাগের যে গাম্ভীর্য এটিকে দেখলে যে মানুষের এক ধরনের সমীহ ভাব চলে আসে এই পুরো জিনিসটিতে একটা ক্রোধ ঘৃণা ক্ষোভ এটা যুক্ত হয়ে গিয়েছিল। এবং তারই বহির্প্রকাশ আমরা জাস্টিস মানিকের উপর যে জনরস এটা আমরা দেখেছি। তিনি যে কাজকর্ম করেছেন এবং খাইরুল হকের ক্ষেত্রে সেটি যাকে বলা হয় হওয়াটাই স্বাভাবিক। এর বাইরে খাইরুল হক সেই যে ফাটাকেষ্ট রূপে তিনি তার কোর্টের মধ্যে যেভাবে অনেক কাজ করেছেন। নিন্ম আদালতে গিয়েও তিনি অতিমানব হওয়ার চেষ্টা করেছেন।
আমার স্পষ্ট মনে আছে ঢাকার একটি সিএমএম কোর্টের একটি ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে মানে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসিতে গিয়ে তিনি সেই দর্শকদের শারিতে বসে বিচারকর্ম দেখছিলেন। তো চিফ জাস্টিস বসে আছে আর বেঞ্চে আর কি আর সিংহাসনে বিচারকের আসনে বসে আসছেন একজন অধস্থান আদালতের জুনিয়র বিচারক। হয়তো দেখা গেল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তিনি বসে আছেন। আমি ঠিক এক্সাক্টলি বলতে পারব না। এরকম বেশ কয়েকটি ঘটনা তিনি ঘটিয়েছেন। তো এটা অনেকটা সিনেমার মত।
এতে বিচার বিভাগের কোন উন্নয়ন হয় না এবং এর মাধ্যমে কোনো মেসেজ যায় না। বরং প্রধান বিচারপতির পথটি যেটি কখনো কেউ করেনি এটিকে তিনি একেবারে একটা খেলনা পিস্তলের পর্যায়ে তিনি নিয়ে এসেছিলেন। তারপরে এখন যে কথাগুলো আসছে সেটা হলো, তিনি রাজনৈতিকভাবে ম্যালিস এবং প্রেজুডিস এ দুটো হৃদয় ধারণ করতেন বিএনপির বিরুদ্ধে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে। বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এরকমই অভিযোগ এই সময়টিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা করছে।
তাদের বক্তব্য হলো যে বিচারপতি খাইরুল তিনি বলতে গেলে আইনের কোনরকম গতি প্রকৃতি ধারা আইনের কোনরকম নীতি-নৈতিকতা আইনের কোনোরকম বাধ্যবাধকতা না মেনে তিনি কেবলইমাত্র বেগম জিয়াকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার জন্যে এবং শেখ হাসিনার মনোরঞ্জনে এই কাজ করলে শেখ হাসিনা খুশি হবে এই কারণে তিনি বেগমজিয়ার ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার যে রায়টি এটা তিনি দিয়েছিলেন। এটা একটা অবৈধ যাকে বলা হয় বরাদ্দ এবং তার প্রেক্ষিতে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড অর্থাৎ সেরা কর্তৃপক্ষে সেটি ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছিল।
বিএনপি এখন খাইরুল হককে সেই কাজে দায়ী করছে। দুই নম্বরে হলো যে তারেক রহমানের মামলা অন্যান্য যে সমস্ত মামলার জন্য এখন তাকে দায়ী করা হচ্ছে। কিন্তু একটা ব্যাপার আমি প্রতিবেশী হিসেবে যেটা জানি এবং বুঝি সেটি হলো যে তিনি বলতে গেলে পুরো সেই ২০১৪ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত তিনি মূলত আমাদের মহল্লাতেই আমাদের প্রতিবেশী ছিলেন। তো তাকে কেন্দ্র করে যাকে বলা হয় কোনো ওরকম সিকিউরিটি ছিল না। বাড়ির সামনে দুজন পুলিশ থাকতেন। তার একটা পোষা কুকুর ছিল এবং তার একটা ব্যক্তিগত যাকে বলা হয় সহকারী ছিলেন।
তাদেরকে নিয়ে তিনি মসজিদে যেতেন। একজন মাত্র নিয়ে যেতেন তো সেখানে বিএনপির লোকের যদি রাগ থাকতো ক্ষোভ থাকতো বিক্ষোভ থাকতো তাহলে তাকে তো দুই চারটে চর থাপ্পড় মারা কিলঘুষি মারা সে ২০১৪ সালে বা ১৫ সনে ১৬ সালে বা তার বাড়িতে একটা ঢিল মারা, তার বাড়িটার আবার দুটো রোড রয়েছে পিছনের অংশটি হল এক নম্বর সড়কের সঙ্গে তারপরে সামনের অংশটি হল নায়েম রোডে। তো এক নম্বর মানে ম্যাক্সিমকোর ঠিক পেছনে বেল টাওয়ারের পেছনে এখান থেকে যদি বিএনপির কোনো লোক তার বাড়ি থেকে একটা ঢিল মারতেন তার গ্লাস গ্লাস ভেঙ্গে যেত। কিন্তু ১০ বছরে কিন্তু বিএনপির কোনো একটা লোক, ছাত্রদলের লোক যুবদলের লোক নেতাকর্মী একটা ঢিলও মারেনি কখনো।
একটা গালিও দেয়নি মহল্লাতে মানে, কোনদিন কোনো যাকে বলা হয় তার বিরুদ্ধে আমরা কাউকে দেখিনি।
আমার কাছেটা খুব আশ্চর্য লাগছে যে বিএনপি যদি এত রাগ তারা এই কাজটি কেন করলো না? দুই নম্বর হলো যে পাঁচ তারিখে বেল টাওয়ার ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হলো। তারপরে শেষে ইয়েলো যেটা এক নম্বর ইয়েলো সেই বাড়িটি একেবারে যাকে বলে পুড়িয়ে তসনচ করে দেওয়া হলো। সারা বাংলাদেশের মন্ত্রী এমপিদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেওয়া হলো। তো সেক্ষেত্রে নাইম রোডে এই বাড়িটি ছিল একেবারে অরক্ষিত। সেখানে কিচ্ছু ছিল না। এবং সেখানে যদি যাকে বলা হয় ছাত্ররা আক্রমণ করতেন তাহলে মানে আশেপাশের একটা সিঙ্গেল লোক এসে রিকোয়েস্টও করতো না যে এই কাজটা তোমরা করো না। আর বাড়িটা পুরনো আমলের বাড়ি। মানে এটাতে যদি মানে ওরকম ভাঙচুর চালানো হতো তাহলে দেখা যেত যে আশেপাশে বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হতো না।
আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিলেও কিছু হতো না। কিন্তু কেউ কিন্তু একটা ঢিল ছুড়েনি। মানে এখন পর্যন্ত তার বাড়িতে একটা ঢিল ছোড়া হয়নি। হোয়াট ডাজ ইট মিন? এর অর্থ কি? থার্ডলি হলো যে তাকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তো মূলত তিনি পালিয়েছিলেন। আমি যতটা জানি যে আগস্ট মাসের পাচ তারিখের একদিন আগে বা দুইদিন আগে তিনি একটি সরকারি অফিসে সেটা আপনারা জানেন যে জুডিশিয়াল বিচারকদের থাকার জন্য একটা ট্রেনিং বা বিচারকদের ট্রেনিং এর একটা যাকে বলা হয় অফিস রয়েছে। সেটা সচিবালয়ের কাছাকাছি কার্জন হল এর সামনে।
তো সেখানে একটা রেস্ট হাউজ আছে এবং তিনি সেই রেস্ট হাউজে ছিলেন বলে আমি শুনেছি। তারপর বিভিন্ন জায়গাতে পালিয়েছিলেন দেশের বাইরে যেতে পারেননি যাননি। এবং ধারণা করা হয় তিনি যে যথাযথ কর্তৃপক্ষ সেই কর্তৃপক্ষের নজরে তিনি ছিলেন। এখন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। যেভাবে শিরিন শারমিন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তিনি বেশ আদরী ছিলেন। কিন্তু এই সময়টিতে হঠাৎ করে তাকে ধরে এনে সেই তার বাড়ির মধ্যে ঢুকিয়ে আবার সেখানে নাটক তৈরি করে যে তাকে গ্রেপ্তার করা হলো এটা আমার কাছে খুব স্বাভাবিক মনে হয় না। আমার কাছে মনে হচ্ছে যে এটা একটা নাটক। মূলত এখন সকল পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। তো সেই পরিস্থিতিকে ডাইভার্ট করার জন্য, মানুষকে খুশি করার জন্য, মানুষকে উত্তেজিত করার জন্য দেখা গেল এই খারুল হকের ঘটনা সামনে আনা হয়েছে। যেটা আসলে এখনো পর্যন্ত এরকম ইমেজ সৃষ্টি করেনি।
আমি শুধু যেটাই বলতে চাই যে যেভাবেই হোক না কেন জাস্টিস খারুল হক গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং বাংলাদেশের প্রথম কোনো বিচারপতি, প্রধান বিচারপতি এভাবে তাকে গ্রেপ্তার করা হলো। ফলে বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা আজ জেগেছে সেই জনতা। তো জনতার আন্দোলনে অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার রেজিমের পতনের পর এত বড় একটা ঘটনা।
পুরো ঘটনাটাই প্রকৃতি ঘটিয়ে দিয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ঘটিয়ে দিয়েছেন। ফলে যারা অহংকার এবং উদ্যত মানুষ এখন যারা লম্পন জম্ভ করছেন জমিনে দম্ভ করে বেড়াচ্ছেন তাদের জন্য জাস্টিস খারুল হকের এই ঘটনাটি একটি যাকে বলা হয় জলজ্যান্ত উদাহরণ। আশা করি আল্লাহ আমাদেরকে হেদায়েত দান করুন এবং আশা করি যে আমরা এই জাস্টিস খারুল হকের ঘটনা থেকে নিজেরা শিক্ষা গ্রহণ করব। এবং আল্লাহ যেন আমাদেরকে সে শিক্ষা গ্রহণের তৌফিক এনায়েত করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।