সম্প্রতি ভারতের দক্ষিণ পশ্চিমঘাটের ঘন জঙ্গলে দুটি নতুন প্রজাতির মাকড়সা আবিষ্কার করেছেন বাঙালি বিজ্ঞানীরা। কর্ণাটকের মুকাম্বিকা অভয়ারণ্য এবং কেরালার এরনাকুলাম জেলা থেকে পাওয়া গেছে এ প্রজাতি দুটি। মাকড়সা দুটির নাম রাখা হয়েছে যথাক্রমে হ্যাব্রোসেস্টাম বেঞ্জামিন (Habrocestum benjamin) এবং হ্যাব্রোসেস্টাম স্বামীনাথন (Habrocestum swaminathan)। এগুলোর নামকরণ করা হয়েছে প্রত্নতত্ত্ববিদ অধ্যাপক সুরেশ পি বেঞ্জামিন এবং সবুজ বিপ্লবের জনক এম এস স্বামীনাথনের নামে।
এই মাকড়সাগুলো হ্যাম্ব্রোসেস্টাম সাইমন গণের মাকড়সা। ভারতের বিভিন্ন উপদ্বীপে পাওয়া এই মাকড়সাগুলো লাফ দিতে পটু। এই দুই প্রজাতির মাকড়সা গণটির মধ্যে আকার-আকৃতিতে সবচেয়ে বড়। ভারতের এরিঞ্জালাকুদার ক্রাইস্ট কলেজের (খ্রিস্ট কলেজ) গবেষকেরা এ মাকড়সা দুটি আবিষ্কার করেছেন। এ সম্পর্কিত প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে নিউজিল্যান্ডের জুটাক্সা জার্নালে।
সম্প্রতি বাংলাদেশি গবেষকেরা তিনটি নতুন প্রজাতির ফড়িং আবিষ্কার করেছেন। ফড়িংগুলো পাওয়া গেছে টেংরাগিরি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান, পাথরঘাটা জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা, চরকুকরি মুকরি ও সিলেট অঞ্চলের আন্তঃসীমানা এলাকার পাহাড়ি ছড়ায়।
এগুলোর বৈজ্ঞানিক নাম দেওয়া হয়েছে ফাইলোথেমিস এল্টোনি (Phyllothemis eltoni), ইলাটোনেরা ক্যাম্পিওনি (Elattoneura campioni) ও অ্যানাক্স এফিপিগার (Anax ephippiger)। এ গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ফিরোজ জামান এবং বন্যপ্রাণী পরিবেশবিদ আশিকুর রহমান সমী।
নতুন একটি মথের নামকরণ করেছেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী মো. জহির রায়হান ও সায়েমা জাহান। আবিষ্কারের পর ৬ মাস গবেষণা করে তাঁরা নিশ্চিত হন, এটি সম্পূর্ণ নতুন প্রজাতির মথ। তাঁরা এর নাম রেখেছেন ‘প্যারাক্সিনোয়াক্রিয়া স্পিনোসা’ (Paraxenoacria spinosa)। তাঁদের এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে নিউজিল্যান্ডের জুট্যাক্সা জার্নালে। এ বছরের অক্টোবর মাসে ‘আ নিউ জেনাস অ্যান্ড স্পেসিস অব পেলিওপোডিডি হজেস, ১৯৭৪ (ইনসেকটা: লেপিডোপটেরা) ফ্রম সাউথ-এশিয়া’ শিরোনামের তাঁদের লেখা নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়।
শরীর মস্তিষ্ককে চালায়, নাকি মস্তিষ্ক দেহকে চালায়? এতদিন বেশির ভাগ ইমিউনোলজিস্ট (দেহের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গবেষক) ভাবতেন, দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিজে নিজেই কাজ করে। মস্তিষ্কের আলাদা করে নির্দেশনা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এ বছর প্রথমবারের মতো গবেষকেরা একটি নিউরাল সার্কিট আবিষ্কার করেছেন। এটি ব্রেনস্টেমে রয়েছে। এটি দেহে ইনফ্ল্যামেটরি বা জ্বালাপোড়া হয়, এমন অণু শনাক্ত করে প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে জানায় সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে, নাকি না করলেও হবে। এ থেকে দেহ আর মস্তিষ্কের সংযোগের ব্যাপারে আরও ভালো ধারণা হলো বিজ্ঞানীদের। তাঁরা ধীরে ধীরে বুঝতে শুরু করেছেন, আমাদের স্নায়ুগুলো মস্তিষ্ককে কীভাবে দেহের সঙ্গে যুক্ত করে ও প্রতিক্রিয়া দেখায়।
এ ছাড়া, একধরনের তরল রয়েছে—সেরেব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড। নাম শুনে মনে হয়, এটি শুধু মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ডে (সুষুষ্মাকাণ্ড) থাকে। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, এটি সত্যি নয়। এই তরল দেহের বিভিন্ন অংশে থাকে। এতদিন ভাবা হতো, এর কাজ শুধু মস্তিষ্ক ও কেন্দ্রীয় স্নায়ুগুলোকে রক্ষা করা, পুষ্টি যোগান দেওয়া ও পরিষ্কার করা। এখন দেখা যাচ্ছে, দেহের অনেক স্নায়ুর জন্যই এটি এসব কাজ করে।
আবিষ্কারের পর থেকেই আরএনএকে ভাবা হয়েছে ডিএনএর ‘ছোট ভাই’-এর মতো। এক সূত্রক, সাধারণ এক বার্তাবাহক ছাড়া আর কিছু না। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, দেখা যাচ্ছে আরএনএ জীবনের জন্য শুধু গুরুত্বপূর্ণই নয়; কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তার সঠিক ধারণা এখনো যেন আমাদের নেই। জিনোমের ‘নন-কোডিং’ অংশের বেশির ভাগটাই দেখা যাচ্ছে ট্রান্সক্রিপশন প্রক্রিয়ায় আরএনএ অণু তৈরি করে। এগুলো শুধু বার্তাবাহকের কাজ করে না, জিন নিয়ন্ত্রণসহ নানা ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে।
এ বছর নোবেল দেওয়া হয়েছে মাইক্রোআরএনএ গবেষক মার্কিন দুই বিজ্ঞানীকে। ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকুন। চোখ বা ফুসফুসের ক্যানসার, জন্মগত বধিরতা, কিডনির সমস্যাসহ বহু রোগ হতে পারে মাইক্রোআরএনএতে সমস্যা হলে। দেহের ভেতরে ও বাইরের পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে কোষের ভেতরের কোন জিনটি কাজ করবে আর কোনটি করবে না, তা নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন হয়। এসবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে মাইক্রোআরএনএ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।