জুমবাংলা ডেস্ক : ময়মনসিংহের গৌরীপুরে বিদ্যুতের ছেঁড়া তারে জড়িয়ে ইয়াসিন মিয়া (৫) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে উপজেলা বোকাইনগর ইউনিয়নের দারিয়াপুর গ্রামে।
বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিশু মৃত্যুর ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড ও বিদ্যুৎ বিভাগের অবহেলাকে দায়ী করে শিশুর লাশ নিয়ে উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করেন স্বজনরা। পরে ৬ দফা দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান মারুফের কাছে স্মারকলিপি প্রদান ও হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার দাবি করেন।
গৌরীপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, পিডিবির তারে জড়িয়ে শিশুর মৃত্যু হয়নি। বিদ্যুতের সার্ভিস লাইনের তার ছিঁড়ে পড়েছিল। বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। ঘটনা জানার পর আমরা লাইন ঠিক করে দিয়েছি। শিশু মৃত্যুর বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।
স্থানীয় ও স্মারকলিপি সূত্রে জানা গেছে, বোকাইনগর ইউনিয়নের দাড়িয়াপুর এলাকায় দুর্বল খুঁটিতে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সরবরাহ করে আসছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। দুই মাস পূর্বে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের একটি তার ঝুলে পড়ে। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে উপজেলা বিদ্যুৎ বিভাগকে জানানো হলে ঝুঁকিপূর্ণ ছেঁড়া তার সংস্কার করা হয়নি।
রোববার দুপুরে খেলতে গিয়ে মো. হৃদয় মিয়ার ছেলে ইয়াসিন মিয়া বিদ্যুতের ঝুলে থাকা তারে জড়িয়ে বিদ্যুতায়িত হয়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এদিকে শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় বিদ্যুৎ বিভাগের অবহেলাকে দায়ী করে রোববার দুপুরে শিশুর লাশ নিয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরের সামনে বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী ও পরিবার।
নিহতের চাচা এমদাদুল হক, জহিরুল ইসলাম ও প্রতিবেশী সাইফুল্লাহ, শাহজাহান, মো. রতন মিয়া জানান, নড়বড়ে খুঁটি ও নিম্নমানের তার দিয়ে সঞ্চালন লাইন করায় প্রায়শ তার ছিঁড়ে যায়। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগকে বারবার মৌখিকভাবে অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
বোকাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাবিব উল্লাহ জানান, প্রায় ২ মাস পূর্বে ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎ লাইন মেরামতের বিষয়টি বিদ্যুৎ বিভাগকে অবহিত করেছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান মারুফ বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় স্মারকলিপি পেয়েছি। এ স্মারকলিপিটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।
অপরদিকে স্মারকলিপিতে ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে শিশু ইয়াসিন মিয়া হত্যাকাণ্ডের বিচার ও তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, গাছে, বাঁশে ও ভাঙা খুঁটিতে ঝুলে থাকা বিদ্যুতের তার অপসারণ করে নিরাপদ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপন, মিটারের রিডিং ব্যতীত গ্রাহকদের ওপর করা অতিরিক্ত বিল প্রত্যাহার, মিটার না দেখে কোনো গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল করা যাবে না, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত, সরকারের নির্ধারিত প্রশিক্ষিত লাইনম্যান ব্যতীত বিদ্যুৎ লাইনে অবৈধ লোকজনের মেরামত ও সংস্কার কার্যক্রম বন্ধকরণ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।