বেরোবি প্রতিনিধি : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) অর্থনীতি বিভাগের ১৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু বরণ করেছে। ঐ শিক্ষার্থীর জানাযার নামাজে যাওয়ার জন্য পরিবহন সহযোগিতা চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুল দেয়নি অভিযোগ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ১৭ শিক্ষার্থী শিপন আহমেদ বগুড়ায় তার নিজ বাসায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন। তার জানাযার নামাজে যাওয়ার তার সহপাঠীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট পরিবহন সহযোগিতা চেয়েও পায়নি বলে অভিযোগ তুলে রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন একজন শিক্ষার্থী। তার ঐ পোস্টের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পরিবহন পুলের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে ব্যক্তিগত আইডি ও বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট করেন শিক্ষার্থীরা
অভিযোগকারী শিক্ষার্থী তার পোস্টে লিখেন,
আজ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বকনিষ্ঠ ১৭ ব্যাচের ছাত্র শিপন আহমেদকে শেষবারের মতো বিদায় জানানোর জন্য যখন আমরা তার বাসায় যাওয়ার প্রয়োজন অনুভব করলাম—তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পরিবহন সুবিধা দেওয়া হলো না। তাহলে প্রশ্ন ওঠে,এই বিপুল সংখ্যক বাস রাখার উদ্দেশ্য কী, যদি শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে সংকটময় মুহূর্তে সেগুলো নিষ্ক্রিয় পড়ে থাকে? শিক্ষার্থীদের ‘পালস’ বুঝতে না পারলে, তাদের চাহিদাকে মূল্যায়ন করতে না পারলে, তাহলে দায়িত্ব গ্রহণের নৈতিক ভিত্তিটাই বা কোথায় দাঁড়ায়?”শুধু আশ্বাস, দুঃখপ্রকাশ আর বিবৃতিতে দায়িত্ব শেষ হয় না। বাস্তব সেবা, সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত এবং মানবিক উপস্থিতিই প্রশাসনের প্রকৃত পরীক্ষার মাপকাঠি। আমাদের ভাইয়ের বিদায় এমনিতেই হৃদয়বিদারক; তার ওপর প্রশাসনিক উদাসীনতা আরও ক্ষতের সৃষ্টি করেছে।
অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র সংসদের জিএস মেহেদি হাসান বলেন,”বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কে জানিয়েও এরকম স্পর্শকাতর বিষয়ে বাস দেয়া অস্বীকৃতি জানায়, এটা খুবই দুঃখজনক।” পরিশেষে একটি শিপনের জানাযায় যাওয়ার জন্য একটি বাস ভাড়া করেছে বলেও জানান তিনি।
ক্ষোভ প্রকাশ করে এআইএস বিভাগের শিক্ষার্থী আহমাদুল হক আলবির বলেন, “কেমন অথর্ব প্রশাসন!
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি বাস ম্যানেজ করে দিতে পারে না। ১৭ ব্যাচের একজন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে—তার জানাজায় অংশ নিতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্যও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। প্রশাসন যেন কৃত্রিম; তাদের তো মানবিকতা নেই।”
ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী জাকির জীম লিখেন ,” মুলার প্রশাসন, এখন পর্যন্ত যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রায় সবগুলো শিক্ষার্থীদের সাথে সাংঘর্ষিক হয়েছে। প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে আন্দোলন না করলে একটা যৌক্তিক দাবিও আদায় হয় না, প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি বাস দেয়ার জন্য।”
এবিষয়ে পরিবহন পুলের পরিচালক মো. মাসুদ রানা বলেন, পরিচালক হিসেবে গাড়ি দেওয়ার এখতিয়ার আমার নেই। সর্বোচ্চ ৫০ কি.মি দুরত্ব পর্যন্ত গাড়ি দেওয়ার এখতিয়ার পরিচালকের রয়েছে কিন্তু তাও ছুটির দিনে ; অফিস এবং ক্লাস কার্যক্রম চালু থাকার দিনে নয়। রুট বন্ধ করে গাড়ি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তারপরও ১৬ সিটের একটি মাইক্রোবাস ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



