জুমবাংলা ডেস্ক : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে মোট যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা আনুমানিক ৩ লাখ ৭৯ হাজার। গত বছর ৩ লাখ ১ হাজার ৫৬৪ রোগী শনাক্ত করেছে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি। সেই হিসাবে মোট অনুমিত যক্ষ্মা রোগীর ২১ শতাংশ শনাক্তের বাইরে। চিকিৎসার বাইরে থাকা রোগীরা যক্ষ্মার জীবাণু ছড়াচ্ছে এবং আরও রোগী বাড়ানোর ঝুঁকি তৈরি করছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর শনাক্ত রোগীর মধ্যে পুরুষ ৫৬ শতাংশ ও নারী ৪২ শতাংশ। দৈনিক যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮২৬ জন এবং মারা গেছেন ১৯ জন। অবশ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যানে বাংলাদেশে প্রতিদিন যক্ষ্মায় অনেক বেশি মৃত্যুর তথ্য দেওয়া হয়েছে। গ্লোবাল যক্ষ্মা প্রতিবেদন-২০২৩ অনুযায়ী, এ রোগে আক্রান্তের তালিকায় বাংলাদেশ বিশ্বে সপ্তম। দেশে ২০২২ সালে যক্ষ্মায় মারা গেছে ৪২ হাজার।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে আজ রবিবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য– ‘হ্যাঁ আমরা যক্ষ্মা নির্মূল করতে পারি’। যক্ষ্মা দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর র্যালি করবে। এ ছাড়া জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানার উপস্থিতিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
২০৩৫ সালের মধ্যে যক্ষ্মা নির্মূলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে শনাক্তের বাইরে থাকা রোগীদের শনাক্ত করে চিকিৎসার আওতায় আনতে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির বিভাগীয় বিশেষজ্ঞ ডা. আহমদ পারভেজ জাবীন বলেন, যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে সরকারের চ্যালেঞ্জগুলো হলো– অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক জোগান বাড়ানো, শনাক্তের বাইরে থাকা রোগী শনাক্ত, শিশু যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত ও ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা রোগীর শনাক্তকরণ বাড়ানো। এ ছাড়া মলিকুলার ডায়াগনস্টিক পরীক্ষাগারের সংখ্যা বৃদ্ধি করা, তাৎক্ষণিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে রিপোর্ট করা এক্স-রের ব্যবস্থা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, শিশু যক্ষ্মা রোগীর মাত্র চার শতাংশ আমরা শনাক্ত করতে পারি। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব বলছে, বাংলাদেশে শিশু যক্ষ্মা রোগী আছে ১০ শতাংশ। এখনও ৬ শতাংশ শিশু যক্ষ্মা রোগী আমাদের শনাক্তের বাইরে। তাদের শনাক্ত করা গেলে ঝুঁকিটা কমত।
ডা. জাবীন বলেন, আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো, অনেক রোগী চিকিৎসা শুরু করলেও শেষ করেন না। তারা মোবাইল ফোনের যে নম্বর দেন, তা বন্ধ করেন। অনেকে ভুল ঠিকানা দেন। ফলে তাদের আর খোঁজ নেওয়া যায় না। এই রোগীরা সংক্রমণ ছড়ানোর পাশাপাশি ওষুধ প্রতিরোধী রোগীর সংখ্যা বাড়াচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বর্তমানে ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মায় (এমডিআর-টিবি) আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৭২৯। ২০২৩ সালে দেশে যক্ষ্মায় মারা গেছে প্রায় ৭ হাজার মানুষ। দেশে একটি ন্যাশনাল রেফারেন্স ল্যাবরেটরি ও ৫টি রিজিওনাল রেফারেন্স ল্যাবরেটরির মাধ্যমে জাতীয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান সরকার বলেন, যক্ষ্মা শনাক্ত আগের তুলনায় বেড়েছে। এখনও আমরা যক্ষ্মার উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি। প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত ও চিকিৎসা দেওয়া গেলে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে আসবে। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি। এ ছাড়া আমরা যক্ষ্মা প্রতিরোধী চিকিৎসা দিচ্ছি। মৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে পেরেছি। ২০১০ সালে যক্ষ্মা রোগে আনুমানিক মৃত্যু ছিল প্রতি লাখে ৫৪ জন, যা ২০২২ সালে কমে প্রতি লাখে ২৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
বিদেশিরা বাংলাদেশ থেকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার কৌশল শিখতে আগ্রহী
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।