আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি থাকলেও আন্তর্জাতিক বাজারে অব্যাহতভাবে কমছে জ্বালানি তেলের দাম। ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বরের পর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম এখন সর্বনিম্ন। খবর অয়েল প্রাইস ডটকম, বিবিসির
বাজারসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং ইকোনমিকস জানায়, গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ৩.৬৬ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল হয় ৭৩.৫২ ডলার। পাশাপাশি লন্ডনের ব্রেন্ট অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ৩.৪১ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল হয় ৭৬.৮১ ডলার। এক মাসের ব্যবধানে উভয় জ্বালানি তেলের দাম কমেছে ১১ শতাংশের বেশি।
গত বছর ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো তেলের উৎপাদন দফায় দফায় কমিয়েছে। এতে সাময়িকভাবে তেলের দাম বাড়লেও চলতি বছর দাম কমছেই।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থনীতির অমোঘ নিয়মের কারণেই এটি ঘটছে।
সেটি হলো চাহিদা ও জোগান। অপরিশোধিত তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। চীনের সরকারি তথ্যেই জানা গেছে, বছরের প্রথম ভাগে চীনের জ্বালানি তেল আমদানি ১১ শতাংশ কমেছে। বছরের বাকি সময় চাহিদা কতটা বাড়বে, তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই শঙ্কা আছে। এই পরিস্থিতিতে তেলের দাম খুব একটা বাড়বে না বলেই ধারণা।
সম্প্রতি ব্যাংক অব আমেরিকার এক নোটে তেলের বাজারকে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। অনিশ্চয়তা অর্থাৎ বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে যেমন বিমান হারিয়ে যেত, তার কোনো খোঁজ পাওয়া যেত না; এই অনিশ্চয়তা অনেকটা তেমন। এমন হতে পারে যে চীনের প্রবৃদ্ধির গতি আরো কমে গিয়ে তেলের দাম আরো কমে যেতে পারে। অথবা ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো তেলের উৎপাদন আরো কমালে দাম উল্টো বাড়তে পারে। কিন্তু বর্তমানে কিছুই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
তবে এই মুহূর্তে ওপেক তেল উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে—এমন সম্ভাবনা খুবই কম বলে মনে করে ব্যাংক অব আমেরিকা। তেলের দাম অনেকটা বেড়ে গেলে তা হতে পারে, কিন্তু এখন সেই বাস্তবতা নেই বললেই চলে।
ব্যাংক অব আমেরিকা কিছুটা নিরাশাবাদী অবস্থান নিয়েছে। তারা মনে করছে, পরিস্থিতির খুব অবনতি হলে চলতি বছরের শেষ নাগাদ বিশ্ববাজারে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলারে নেমে আসতে পারে। এই পরিস্থিতিতে চীনের চাহিদার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। তেলের মজুদ কত আছে, তার চেয়ে বরং চীনের চাহিদার বিষয়টি মুখ্য হয়ে উঠেছে। চীনের চাহিদা কমার কারণে জুলাই মাসে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল রপ্তানি গত ১১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।
২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে পশ্চিমারা রাশিয়ার তেল বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। ব্যাহত হয় তেল সরবরাহ ও উৎপাদন। এর জেরে সে বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ব্যারেলপ্রতি দাম সর্বোচ্চ ১৩৯ মার্কিন ডলারে উঠে যায়।
জ্বালানি তেলের দামের সঙ্গে অনেক কিছুর সম্পর্ক আছে। সে জন্য তেলের দাম বাড়লে পরিবহন ব্যয় এবং শিল্প, কৃষি ও বিদ্যুৎ—সব কিছুর উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যায়। কেবল বাংলাদেশই নয়, জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোও বিপদে পড়েছিল। ২০২২ সালে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওঠে, যদিও তারা নীতি সুদ হার বাড়িয়ে ধারাবাহিকভাবে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।
মুকেশ আম্বানির মোট সম্পত্তির পরিমাণ শুনলে চোখ কপালে উঠবে আপনার
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।