বর্তমান বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন ও মানব ক্রিয়াকলাপের কারণে প্রকৃতির অনেক পরিবর্তন ঘটছে। এর মধ্যে অন্যতম একটি উদ্বেগজনক পরিবর্তন হলো মাছের আকার ছোট হয়ে আসা। গবেষকরা বলছেন, বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট কারণের ফলে বিশ্বব্যাপী মাছের আকার ক্রমশ ছোট হয়ে যাচ্ছে, যা সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থান এবং মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের তাপমাত্রা বাড়ছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে মাছের বিপাক ক্রিয়া ত্বরান্বিত হয় এবং এদের বড় হয়ে ওঠার ক্ষমতা হ্রাস পায়। এছাড়া, উষ্ণ পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কম থাকে, যা মাছের বৃদ্ধি এবং জীবনীশক্তি কমিয়ে দেয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে মাছের আকার ২০-৩০% পর্যন্ত ছোট হতে পারে।
অতিরিক্ত মৎস্য আহরণের ফলে বড় মাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। বড় মাছ কমে যাওয়ার কারণে ছোট মাছের প্রজনন বাড়ছে, কিন্তু ছোট মাছের আকার এবং সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বড় মাছের স্থানে তাদের প্রতিস্থাপন করতে পারছে না। ফলে, সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থানে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হচ্ছে।
সমুদ্রের দূষণ, বিশেষ করে প্লাস্টিক দূষণ, মাছের স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলছে। প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণাগুলি মাছের খাদ্যচক্রে প্রবেশ করে এবং তাদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করে। দূষণের কারণে মাছের প্রাকৃতিক বাসস্থান ধ্বংস হচ্ছে, যা তাদের আকার এবং সংখ্যা উভয়ই কমিয়ে দিচ্ছে।
মাছের আকৃতি ছোট হওয়ার আরও কিছু কারণ:
পুষ্টি: মাছের আকৃতি পুষ্টির স্তরের সাথে সম্পর্কিত। যতটা মাছ পুষ্টি পাবে, তার আকৃতি ততটা বড় হবে। পুষ্টির অভাব মাছের আকৃতিকে ছোট করতে পারে।
জীবনযাপন: মাছের জীবনযাপনের স্থান এবং পরিবেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। মাছ যে স্থানে থাকে, সেখানের পরিবেশ ও সান্দ্রতা মাছের আকৃতিকে প্রভাবিত করে।
প্রজনন: মাছের প্রজনন প্রক্রিয়া মাছের আকৃতিকে প্রভাবিত করে। প্রজননের সময় মাছের আকৃতি ছোট হয়ে যায়।
মাছের আকার ছোট হয়ে আসার ফলে সামুদ্রিক খাদ্য শৃঙ্খল ভেঙে পড়ার ঝুঁকি বাড়ছে। বড় মাছ কমে যাওয়ার কারণে অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীর খাদ্য সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটছে। মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার উপরও এর বড় প্রভাব পড়ছে, কারণ মৎস্যজীবীরা তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে হিমশিম খাচ্ছেন এবং বাজারে মাছের সরবরাহ কমে যাচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।