
জুমবাংলা ডেস্ক: ইউরিয়া সারের চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশই আমদানি নির্ভর। বর্তমানে দেশে ইউরিয়া সারের নূন্যতম চাহিদার পরিমান ২৫ লাখ মেট্রিক টন। এ হিসেবে ইউরিয়া সারের সাড়ে ১৭ লাখ লাখ মেট্রিক টনই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।
সরকার, আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে ইউরিয়া সার উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে আন্তরিকভাবে কাজ করছে। এ লক্ষ্যে সময়োপযোগি,আধুনিক ও উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন কিন্তু পরিবেশ-বান্ধব ও জ্বালানি সাশ্রয়ী কারখানা স্থাপনের মধ্যদিয়ে ইউরিয়া সার উৎপপদনে দেশের সক্ষমতা বাড়াতে শিল্প মন্ত্রণালয় বিশ্বমানের সার কারখানা স্থাপন করতে যাচ্ছে।
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বৃহস্পতিবার উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড় জেলার আরাজিগাইঘাটে ১০ হাজার মেট্রিক টন ‘সার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন’ নবনির্মিত একটি বাফার গোডাউনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিীথর বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার রাতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
রেলপথমন্ত্রী মোঃ নুরুল ইসলাম সুজন ও পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ মজাহারুল হক প্রধান এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক ড.সাবিনা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে পঞ্চগড় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার সাদাত স¤্রাট, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান,পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী,‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি নতুন বাফার গোডাউন নির্মাণ’ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এ কে এম হাবিবুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, সরকার করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দেশের সর্বত্র পর্যাপ্ত সার সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করছে। তিনি বলেন,বিদেশ থেকে আমদানিকৃত ইউরিয়া সার দেশের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত বিএডিসি’র ২৫টি বাফার গুদামে সংরক্ষণের মাধ্যমে দেশব্যাপি প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনুমোদিত ডিলারদের সহযোগিতায় কৃষকদের মাঝে সার সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
ইউরিয়ার নিরাপদ মজুদ নিশ্চিত করতে এবার ২৫ লাখ মেট্রিক টনের অতিরিক্ত আরও ৫ লাখ মেট্রিক টন সার মজুদ রাখা হচ্ছে উল্লেখ করে নূরুল মজিদ মাহমুদ বলেন,সারের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ ও সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়নে দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি বাফার গোডাউন নির্মাণ কাজ দ্রুত এগুচ্ছে। মন্ত্রী এ সময় জানান,এগুলো ছাড়াও শিল্প মন্ত্রণালয় আরো ৩৪টি বাফার গোডাউন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
উদ্বোধনকৃত বাফার গোডাউনটি শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি নতুন বাফার গোডাউন নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হয়েছে। ভরা মৌসুমে সারের মজুদ বৃদ্ধিসহ সুষ্ঠভাবে সার সংরক্ষণ ও বিতরণ এবং ডিলারের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ের কৃষকের কাছে সার সরবরাহ সুনিশ্চিত করতে পঞ্চগড়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, শেরপুর, যশোর, গাইবান্ধা, নীলফামারী, রাজবাড়ী, পাবনা, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, গোপালগঞ্জ, বরিশাল ও সুনামগঞ্জ জেলায় বাফার গোডাউন নির্মাণ কাজ চলছে।
ইতিমধ্যে পঞ্চগড় ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ গোডাউনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে নির্মাণ কাজে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটলেও বর্তমানে এই প্রকল্পের আওতায় দেশের বিভিন্ন জেলায় অন্য ১১টি গোডাউন নির্মাণ কাজ পুরোদমে চলছে। ২০২১ সালের জুন মাসের মধ্যে সবক’টি গোডাউনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে বলে বিসিআইসি আশা করছে।
ঊাফার গোডাউন নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এ কে এম হাবিবুল্লাহর উদ্ধৃতি দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলাধীন আরাজিগাইঘাটা এলাকায় ৩ দশমিক ৯১৮ একর জমির ওপর ১০ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাবিশিষ্ট সারের বাফার গোডাউন নির্মাণ করা হয়। এ গোডাউনে ৮৮ হাজার ২৩৬ বর্গফুটের প্রি-ফেব্রিকেটেড স্টীল স্ট্রাকচার (তিন বে-বিশিষ্ট) ও ২ হাজার ৮৯৮ বর্গফুটের দোতলা বিশিষ্ট একটি অফিস বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ৩ হাজার ২৭৯ বর্গফুটের একতলা বিশিষ্ট একটি সিকিউরিটি ব্যারাক, ৬২২ বর্গফুটের একতলা বিশিষ্ট একটি বিদ্যুৎ সাব-স্টেশন, আনুমানিক ১ হাজার ৭০০ রানিং ফুট বাউন্ডারী ওয়ালও নির্মাণ করা হয়েছে। গোডাউনের চারপাশে ভিতরে সারফেস ড্রেন এবং বাউন্ডারী ওয়াল বরাবর স্টর্ম ড্রেন, অভ্যন্তরে ২টি সক ওযেল, ২টি সেপ্টিক ট্যাংক, ৭৪টি কার্বন ডাই অক্সাইড অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রও স্থাপন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠান শেষে শিল্পমন্ত্রী ঠাকুরগাঁও সুগার মিলস পরিদর্শন করেন।
এ সময় তিনি জানান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকল বন্ধ বা শ্রমিক ছাঁটাইয়ের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।